মোদী সরকারের তিন বছর পূর্ণ হবে ২৬শে মে৷ সাধারণ মানুষ কি সুদিনের মুখ দেখতে পেয়েছে? পারলে কতটা? এ বিষয়ে কী বলছে দেশের মানুষ?
বিজ্ঞাপন
মোদী সরকার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ক্ষমতায় এসেছিল ২০১৪ সালে সুদিনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে৷ সেই সুদিনের প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ করতে পেরেছেন তিনি? মোদী সরকারের তিন বছরের ‘রিপোর্ট কার্ড’ নিয়ে এক জনমত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ মনে করছে, তাঁদের জীবনযাত্রার গুণমানে কোনো পরিবর্তন অনুভব করতে পারছে না৷ প্রায় ১৫ শতাংশ মনে করছে, জীবনযাত্রার মান আরও নিম্নমুখী হয়েছে৷ সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজ এই জনমত সমীক্ষা করে বলছে, মোদী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে গরিব তেমনভাবে উপকৃত হয়নি৷ তবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর উপরে সংখ্যাগরিষ্ঠ (৬২ শতাংশ) জনগণ এখনও আস্থা হারায়নি৷ আগামি ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে তাঁরা মোদীকেই হয়ত আবার দেখতে চায় প্রধানমন্ত্রী পদে৷ লোকসভার প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল সুভাষ কাশ্যপের মতে, মোদীর ভাবমূর্তি এবং কাজকর্মের তারিফ করছেন বেশির ভাগ মানুষ৷ তাঁরা মনে করেন, বিশ্বে ভারতের নীতি ও অবস্থানকে আরও জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন মোদী সরকার৷
‘অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড’ নিয়ে বিতর্ক, উষ্মা
উত্তর প্রদেশে ক্ষমতার শীর্ষে এখন বিজেপি সাংসদ, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ৷ নারী সুরক্ষার লক্ষ্যে তিনি গঠন করেছেন অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড৷ পার্ক, স্কুল-কলেজের গেট, রাস্তা-ঘাটে ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে দেখলেই চলছে জিজ্ঞাসাবাদ৷
ছবি: Reuters/P. Kumar
আবদুল মান্নান, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা
এ তো হওয়ারই ছিল৷ গোটা দেশটাকে যাঁরা হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়, তাঁরা ক্ষমতার সিংহাসনে বসলে এইভাবেই তো সরকারি ক্ষেত্রে, সমাজে, প্রতিনিয়ত নিজেদের নীতি ও আদর্শকে জোর করে চাপিয়ে দেবে৷ নারী সুরক্ষার নামে উত্তর প্রদেশে যা শুরু হয়েছে, তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই৷
ছবি: DW/R.Chaktaborty
ডা. সৃজনী সিনহা, দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
ভারতে মেয়েদের সুরক্ষার বিষয়টি জরুরি হলেও, ছেলেদের অকারণ হেনস্থাও সমর্থনযোগ্য নয়৷ প্রেমিক-প্রেমিকা, ভাই-বোন – এঁরা রাস্তায় বের হবেন কীভাবে? বরং ‘মরাল পুলিসিং’ না করে মা-বোনেদের সুরক্ষার দিকে একটু নজর দিন মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ৷
ছবি: DW/R. Chaktaborty
কিশোর চৌহান, মিস্টার ইন্ডিয়া, বডি বিল্ডার
বলা হচ্ছে, নির্দোষ ছেলে-মেয়েদের হেনস্থা করা হচ্ছে৷ তাই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতা করে পুলিশকে তাদের কাজ করতে দিলে অসুবিধা কোথায়? আমি তো বলবো, মা-বোনেদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারতের সব রাজ্যে এই স্কোয়াড গড়ে তোলা উচিত৷ যোগী আদিত্যনাথ পথ দেখিয়েছেন৷
ছবি: DW/R. Chaktaborty
রুমা ব্যানার্জি, স্কুল শিক্ষিকা
কে কার সঙ্গে বসে গল্প করবে, কে কার হাত ধরে হাঁটবে – এবার থেকে কি তা-ও ঠিক করে দেবে পুলিশ? মনে হচ্ছে, নতুন সরকার এসে ভারতের সমাজ ব্যবস্থাকে দ্রুত অতীতের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে৷ আমাদের রাজনীতিকদের মনে রাখতে হবে, ছেলে-মেয়ের মেলামেশা আর নারী নির্যাতন এক জিনিস নয়৷
ছবি: DW/R. Chaktaborty
শুভাশিস ভৌমিক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
পার্কে বসে একটি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের মধ্যে গল্প করছিল৷ আচমকা পুলিশের লাঠি পড়ল এক ছাত্রের পিঠে৷ – এ কেমন ঘটনা? সরকার বা পুলিশকে এই অধিকার কে দিয়েছে?
ছবি: DW/R. Chaktaborty
পূর্ণেন্দু রায়, সমাজকর্মী
শুধু ‘অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড’ কেন? এমন কোনো স্কোয়াডেরই সাধারণ মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অধিকার নেই৷ তবে হ্যাঁ, আইন হয়েচে৷ তাই প্রথমদিকে পুলিশি হেনস্থার বহু অভিযোগ উঠলেও দেখতে হবে, সরকার এই ধরনের অভিযোগের সংখ্যা কমিয়ে এনে সত্যিই রাজ্যে নারী সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয় কিনা৷
ছবি: DW/R. Chaktaborty
হেমন্ত শর্মা, মডেল
রোমিও, জুলিয়েট অথবা মজনু – এ সব নাম দিয়ে ইতিহাসের পাত্রদের অপমান করার কোনো মানে হয় না৷ উদ্দেশ্য যদি নারী সুরক্ষা হয়ে থাকে তবে, অপরাধীদের ধরা উচিত৷ কেউ বাইক ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মানেই সে অপরাধী – সরকার এবং পুলিশের এই ধারণা পরিবর্তন জরুরি৷
ছবি: DW/R. Chaktaborty
জালাল উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টে কেরানি
আমি আদিত্যনাথ সরকারের এই পদক্ষেপকে পূর্ণ সমর্থন করি৷ গোটা দেশে যেভাবে মহিলাদের প্রতি অন্যায় হচ্ছে, তাতে কোথা থেকে তো শুরুটা করতেই হবে৷ নোট বাতিলের মতোই ‘বখাটে’ ছেলেদের শায়েস্তা করতে গিয়ে হয়ত দু-একজন নিরপরাধের প্রতি অন্যায় করা হবে৷ কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে সেটা মেনে নেওয়াই ভালো৷
ছবি: DW/R. Chaktaborty
শুভজিৎ চৌধুরি, জনৈক সাংসদের ব্যক্তিগত সচিব
সবে দেশের চারটে রাজ্যে ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি, এরপর যদি আরও চারটে রাজ্য তাদের দখলে চলে আসে তাহলে দেখবেন, শুধুমাত্র মেয়েদের দিকে তাকানোর অপরাধে রোজ শ’য়ে শ’য়ে ছেলেকে জেলে ঢোকানো হচ্ছে৷
ছবি: DW/R. Chaktaborty
9 ছবি1 | 9
অন্য শিবির বলছে, ২০১৪ সালে মোদী সরকার আসার পর সংঘ পরিবার সরকারি রক্ষাকবচের আড়ালে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দেশ জুড়ে৷ উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের জিগির তুলে দেশের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতাকে প্রহসনে পরিণত করছে৷ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থানগুলির উপর চডাও হচ্ছে যখন তখন৷ তকমা সেঁটে দিচ্ছে হিন্দু-বিরোধী তথা রাষ্ট্রবিরোধীর৷ তারই জেরে গণপিটুনি একটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এই তো, গত সপ্তাহেই ঝাড়খন্ডে পুলিশের চোখের সামনেই গণপিটুনির মর্মান্তিক শিকার হয় নয় জন৷ তারমধ্যে জনা পাঁচেক মুসলিম গরু ব্যবসায়ী৷ বিজেপি এবং তার সহযোগী দল একান্ত নিজস্ব দুটি কর্মসূচি হাতে নেয়৷ একটি ‘লাভ-জেহাদ’, যাকে বলা হয়ে থাকে, রোমিও-স্কোয়াড, অন্যটি গো-রক্ষক বাহিনী৷ এদের প্রধান কাজ স্থানীয় লোকজনদের ক্ষেপিয়ে তাৎক্ষণিক ফয়সালা করা৷ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে হিন্দু মেয়েদের মুসলিম যুবকদের হাত থেকে রক্ষা করার নামে এবং গরু ব্যবসায়ী বা পাচারকারীদের হাত থেকে গো-মাতাকে বাঁচানোর নামে ত্রাসের সঞ্চার করে এরা৷ এটা নিছক আইন শৃংখলার প্রশ্ন নয়৷ মোদী সরকার বা তাঁর গৈরিক দলের পরোক্ষ সমর্থনেই এইসব কান্ড-কারখানা বেড়ে চলেছে৷ কয়েকদিন আগে একটি হিন্দু মেয়ে এক মুসলিম প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গেলে সেই মুসলিম পরিবারের অভিভাবকে নির্মভাবে মারধর করা হয়৷ অথচ মোদী সরকার সব দেখেও যেন না দেখার ভান করে আছে৷ এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর অবস্থানও বিভ্রান্তিকর৷
মোদী সরকারের তিন বছরের রিপোর্ট কার্ড সম্পর্কে প্রবীণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডক্টর অমল মুখোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘মোদী সরকারের যতটা গর্জন আছে, ততটা বর্ষণ নেই৷ বিকাশ হার বলে যেটা দেখানো হচ্ছে, সেটা শুধু পরিষেবা ক্ষেত্রে, ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রের নয়৷ কাজেই সেটাকে সাফল্য বলা চলে না৷ দেশের দু’টি প্রধান সমস্যা দারিদ্র্য ও বেকারত্ব৷ এই দুটি ক্ষেত্রেই মোদী সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ৷ দুই কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কার্যত হয়েছে মাত্র কয়েক লক্ষ৷ অন্যদিকে সহিষ্ণুতার অভাব গত তিন বছরে বারংবার চোখে পড়েছে, যেটা গণতন্ত্রের বিপদের কারণ৷ কাশ্মীর ইস্যুর অগ্রগতি হয়নি ধর্ম-ভিত্তিক রাজনীতির কারণে৷ কাশ্মীরিদের কাছে মোদী সরকার তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে৷ শক্তি প্রয়োগে কাশ্মীর ইস্যুর হাল হবে না, হবে আলোচনায়৷ আর সেক্ষেত্রে পাকিস্তানকে ডাকা দরকার৷ কিন্তু পাকিস্তানসহ নিকট প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অনুকূল নয়, বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে৷’’
ভারতে সারোগেসির সেকাল-একাল
ভারতে সারোগেসি বা গর্ভ ভাড়া সহজলভ্য ও খরচ কম হওয়ায় বাণিজ্যের বাজার দাঁড়িয়েছে ১৫০০ কোটি টাকার মতো৷ তবে গত বছর এই পদ্ধতিকে প্রায় নিষিদ্ধ করার আইন হয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে ভারতের কয়েকটি ক্লিনিকের কথা৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Panthaky
সারোগেসি আসলে কী?
সারোগেসি হলো সন্তান জন্মদানের জন্য কোনো নারীর গর্ভ ভাড়া নেওয়া৷ এই প্রক্রিয়ায় কোনো সন্তানহীন দম্পতি অথবা কোনো একক মা বা বাবা সন্তানলাভের জন্য কোনো নারীর গর্ভ ভাড়া নিতে পারেন৷ বলা বাহুল্য, এক্ষেত্রে ‘সারোগেট মা’ বা যিনি সেই সন্তান ধারণ করছেন, এতে তাঁর সম্মতি থাকতে হবে৷ সন্তানটি প্রসবের পর অবশ্য সারোগেট মা সদ্যজাত সন্তানকে ঐ দম্পতিকে দিতে বাধ্য থাকবেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Hussain
কারা এমন সন্তান চান?
বিদেশি সন্তানহীন দম্পতি, প্রবাসী ভারতীয় দম্পতি, একক বাবা-মা, সমকামী – এমন অনেকেই সারোগেসির জন্য ভারতকে বেছে নেন৷ এমন ভারতীয় দম্পতিরা, যাঁদের ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ-এর মাধ্যমে, অর্থাৎ শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়ে সন্তানধারণ করা সম্ভব নয়, তাঁরাও সারোগেসির দ্বারস্থ হন৷ বর্তমানে ভারতে এ ধরনের ক্লিনিক বেশি আছে দিল্লি ও মুম্বইয়ের মতো বড় বড় শহরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Panthaky
ভারতে সারোগেসির সূত্রপাত
ডা. নয়না প্যাটেল ভারতে প্রথম সারোগেসি বাণিজ্যিকভাবে চালু করেন৷ আহমেদাবাদ থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে আনন্দ শহরে ২০০৫ সালে বাণিজ্যেকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করেন তিনি৷ সেসময় থেকেই নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে ডা. নয়না প্যাটেল এক বিশ্বস্ত ও জনপ্রিয় নাম হয়ে ওঠে৷
ছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images
আকাঙ্খা ক্লিনিক
২০১৫ সালে ডা. প্যাটেল একটি ক্লিনিক চালু করেন, ঐ আনন্দেই, যার নাম আকাঙ্খা৷ সারোগেসি, আইভিএফ’সহ অন্যান্য নানা ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে৷ তবে সারোগেসির জন্য রয়েছে বিশেষ কিছু সুবিধা৷ যেমন শুক্রাণু ব্যাংক৷ এমনকি সন্তান প্রসবের পর সদ্যজাতকে যথেষ্ট পরিমাণ দুধের জোগান দিতে রয়েছে ‘মিল্ক ব্যাংক’-ও৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেট মায়েরা
আকাঙ্খা ক্লিনিকে সারোগেট মায়েদের গর্ভধারণ থেকে শুরু থেকে প্রসব পর্যন্ত সেখানেই থাকতে হয়৷ ক্লিনিকের একেবারে নীচ তলায় তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে৷ বর্তমানে সেখানে অন্ততপক্ষে ৭০ জন সারোগেট মা রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ৬২ জন সন্তানসম্ভবা৷
ছবি: DW/D. Guha
আকাঙ্খা ক্লিনিকে খরচ
সারোগেসির জন্য এখানে খরচ পড়ে সাড়ে ৬ থেকে সাড়ে ৭ লাখ রুপি৷ তবে অর্থটা নির্ভর করে সারেগেট মা এবং ‘ইন্টেনডেড পেরেন্ট’ বা আইপি, অর্থাৎ সেই নিঃসন্তান দম্পতির শারীরিক অবস্থার ওপর৷ এক্ষেত্রে শুত্রাণু বা ডিম্বাণুর প্রয়োজন হলে অর্থের পরিমাণটি বাড়তে পারে৷ এমনকি প্রথমবারে গর্ভধারণ সম্ভব না হলে, এক-একটি প্রতিস্থাপনে বেড়ে যেতে পারে খরচ৷
ছবি: Sam Panthakya/AFP/Getty Images
বিভিন্ন সময় খবরে এসেছে যে ক্লিনিক
আকাঙ্খা ক্লিনিক যেহেতু শুরু থেকেই সারোগেসি নিয়ে কাজ করছে, তাই বহুবার পত্রিকায় খবর হয়েছে এই ক্লিনিক নিয়ে৷ এখানে সারোগেট মায়েরা পান সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ লাখ রুপি৷ এজেন্ট, অর্থাৎ যাঁরা এই মায়েদের জোগাড় করে দেন, তাঁরা পান ২৫ হাজার রুপি৷
ছবি: DW/D. Guha
উরুজেন ক্লিনিক, দিল্লি
দিল্লির চিকিৎসক দম্পতি অশোক ও সুরভী গুপ্তা এই সারোগেসি ক্লিনিকটি চালু করেন৷ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁরা এই কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত৷ এই ক্লিনিকে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান পেতে আপনাকে খরচ করতে হবে ১২ থেকে সাড়ে ১২ লাখ রুপি৷ আগে এখানে নিঃসন্তান বিদেশি দম্পতিরাই বেশি আসতেন, তবে বর্তমান দেশি দম্পতিদের অনেকেই আসেন৷
ছবি: DW/D. Guha
অশোক গুপ্তা
উরুজেন এর চিকিৎসক অশোক গুপ্তা৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেট মা
উরুজেন ক্লিনিকের দু’জন সারোগেট মা৷ এই ক্লিনিকে সেই সব মায়েদের নির্বাচন করা হয়, যাঁদের নিজেদের আর সন্তানের প্রয়োজন নেই এবং যাঁদের আর বাচ্চা হবে না৷ এঁরা সন্তান গর্ভে আসা থেকে শুরু করে প্রসব পর্যন্ত নিজেদের বাড়িতেই থাকেন৷ তাই এঁরা পুরো সময়টা উপভোগ করেন এবং হাসিখুশি থাকেন৷ এই মায়েরা পান সাড়ে তিন লাখ রুপি৷
ছবি: DW/D. Guha
জেনোম, কলকাতা
কলকাতায় সারোগেসির জন্য এই ক্লিনিকটি সুনাম রয়েছে৷ এই ক্লিনিকে সন্তান পেতে আপনাকে খরচ করতে হবে ১০ লঅখ রুপির মতো৷ আর সারোগেট মায়েরা পান ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ রুপি৷
ছবি: DW/D. Guha
ঐন্দ্রী স্যান্নাল
এই ক্লিনিকটির চিকিৎসক ঐন্দ্রী স্যান্নাল৷
ছবি: DW/D. Guha
কাউন্সেলর
দুই সারোগেট মায়ের মাঝে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি জেনোম ক্লিনিকের সারোগেট মায়েদের কাউন্সেলিং করে থাকেন৷ তবে এই দুই সারোগেট মা এখন এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন৷ সারোগেসির ক্ষেত্রে একজন মা নিজের সন্তানসহ কেবল পাঁচবার গর্ভধারণ করতে পারবেন৷ অর্থাৎ যে মায়ের নিজের দু’টি সন্তান রয়েছে, তিনি আর তিনবার সারোগেট মা হতে পারবেন৷ তবে অস্ত্রপচার বা সিজারিয়ানের মাধ্যমে প্রসব হতে পারবে মাত্র দু’বার৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেট মায়েদের থাকার ব্যবস্থা
কলকাতায় সারোগেট মায়েদের তিনরকম থাকার ব্যবস্থা রয়েছে – হোম, নিজের বাসা, এমনকি যাঁরা বাচ্চা নেবে তাঁদের বাসাতেও চাইলে থাকতে পারেন সন্তানসম্ভবা সারোগেট মা৷
ছবি: DW/D. Guha
কলকাতার হোম
এই হোমের ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে সেখানে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের থাকার পরিবেশ ততটা ভালো নয়৷ তবে সেখানে তাঁকে তাঁর পরিবারের মানুষ দেখতে যেতে পারেন৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেসি বন্ধে আইন
ভারতে সারোগেসি নিয়ে যে নতুন আইনটি উত্থাপিত হয়েছে, তা অনুযায়ী বিদেশি তো বটেই, দেশীয় নিঃসন্তান দম্পতিদের জন্যও বাণিজ্যেক সারোগেসি বন্ধ হতে যাচ্ছে৷ অর্থাৎ আইনটি পাশ হলে, অর্থের বিনিময়ে গর্ভভাড়া নেওয়া আর যাবে না ভারতে৷ কেবল নিঃসন্তান বিবাহিত দম্পতি – যাঁরা মেডিক্যাল কারণে বাবা-মা হতে পারছেন না – একমাত্র তাঁরাই সন্তানের জন্য কোনো নিকটাত্মীয়ের সাহায্য নিতে পারবেন৷
ছবি: DW/D. Guha
16 ছবি1 | 16
তবে ডক্টর মুখোপাধ্যায় মনে করেন, ‘‘মোদীর ভাবমূর্তি জনমানসে এখনো উজ্জ্বল৷ ‘মন কী বাত’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মোদীর সরাসরি জনসংযোগ প্রশংসনীয় সন্দেহ নেই৷ তাতে রাজনৈতিক দিক থেকে লাভবান হয়েছে তাঁর ‘পদ্মদল’৷ তার ফলেই সাম্প্রতিক কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে মোদীর বিজেপি ক্ষমতাসীন হতে পেরেছ৷ দেশের বৃহত্তম রাজ্য উত্তরপ্রদেশও রয়েছে সেই তালিকায়৷’’ তবে তিনি মনে করেন, মোদী সরকারের এই তিন বছরে সামগ্রিকভাবে দেশের খুব একটা উন্নতি হয়নি৷
অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের এক শিক্ষক কিংশুক মজুমদার কিন্তু মোদী সরকারকে দিয়েছেন ফুলমার্কস৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আর্থিক ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগ (এফডিআই) উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে৷ অবকাঠামোর ক্ষেত্রে চলেছে বিপুল কর্মযজ্ঞ৷ সড়ক, রেল, সেতু, বন্দর প্রকল্পের কাজ চলেছে ব্যাপকভাবে৷ দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না, এটা মানা যায় না৷ শেয়ার বাজারের দিকে তাকান৷ সেখানে সূচক উর্ধগামী৷ এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি এখন ভারত৷ বিমুদ্রাকরণের মাধ্যমে কালো টাকা রাতারাতি খতম করা সম্ভব নয়৷ মোদী সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেটাই বড় কথা৷ আগেকার সরকার এ পদক্ষেপ নেয়নি৷’’
প্রধানমন্ত্রী মোদীর জনপ্রিয়তা এবং তিন বছরের কথিত সাফল্যকে কাজে লাগাতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে বিজেপি৷ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে৷ অন্যদিকে কংগ্রেস এবং সহমতাবলম্বী দলগুলি মোদী সরকারের তিন বছরের ব্যর্থতা তুলে ধরতে প্রচার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে৷ বিজেপির সাফল্যের বড় পরীক্ষা আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং বলা বাহুল্য, ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচন৷ পর্যবেক্ষকদের একাংশের জল্পনা, রাষ্ট্রপতি নির্বচনে যদি বিজেপি মনোনীত কেউ প্রাথী জয়ী হন, তাহলে সাধারণ নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে আনতে পারে বিজেপি৷