দিল্লির তিহার জেলেই যেতে হলো বীরভূমের দোর্দন্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। অনেক চেষ্টা করে তিহার যাত্রা এড়াতে পারলেন না।
বিজ্ঞাপন
রাজধানীর রাউস অ্যভিনিউ আদালতের বিচারক রঘুবীর সিংয়ের নির্দেশে ১৪ দিন জেল হাজতে থাকতে হবে অনুব্রত মণ্ডলকে। মঙ্গলবার রাতেই তাকে তিহার জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে প্রথম দিন তাকে সেলে দেয়া হয়নি। জেলের নিয়মানুযায়ী পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল।
এই তিহার যাত্রা এড়াতে প্রচুর চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত। দিল্লি হাইকোর্ট, কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। দিল্লি এসে তিনি ইডির হেফাজতে ছিলেন। তারপর মঙ্গলবার রাতে তিহার যেতে হয়।
কেমন কাটলো প্রথম রাত
অনুব্রতকে জেলের নিয়মমতো নিজের ওষুধ নিয়ে যেতে দেয়া হয়নি। তার প্রেসক্রিপশন দেখে জেলের হাসপাতালের চিকিৎসকরা ওষুধ দেন। অনুব্রত সেই ওষুধ দেখে প্রথমে বুঝতে পারেননি, কোনটা খেতে হবে। পরে সমস্যা মেটে। শ্বাসকষ্টের রোগী অনুব্রতর জন্য হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডারও মজুত রাখা হয়েছিল।
তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা অনুব্রত গ্রেপ্তার
গরুপাচার কাণ্ডে বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআইয়ের ক্যাম্প অফিসে তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বোলপুর থেকে গ্রেপ্তার
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ বোলপুরের বাড়ি থেকে অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিবিআইয়ের বিশাল দল তার বাড়িতে গিয়ে অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সিবিআইয়ের কৌশল
বুধবার মাঝরাতে পাঁচটি গাড়ি নিয়ে বোলপুরে পৌঁছে যান সিবিআই অফিসাররা। বৃহস্পতিবার সকালে তার বাড়ি ঘিরে ফেলে সিআরপিএফ জওয়ানরা। দেড়ঘণ্টা বাড়িতে কথা বলার পর অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
গরুপাচার কাণ্ডে গ্রেপ্তার
অনুব্রতের বিরুদ্ধে গরুপাচার কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ। আগেই তৃণমূলের এই হেভিওয়েট নেতার দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিতর্কিত নেতা
বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন অনুব্রত। এর আগে পুলিশকে বোমা মারার কথা বলেছিলেন অনুব্রত। ভোটের সময় চড়াম চড়াম ঢাক বাজানোর কথা বলেছেন। গাঁজা কেসে বিরোধীদের গ্রেপ্তার করানোর কথা বলেছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
অনুব্রতের লুকোচুরি
এর আগে ১০ বার অনুব্রতকে তলব করেছিল সিবিআই। একবার মাত্র সিবিআইয়ের নিজাম প্যালেসে গেছেন তিনি। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বার বার জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে গেছেন অনুব্রত।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
অসুখ বিতর্ক
এসএসকেএম হাসপাতালে গত সোমবার চিকিৎসার জন্য গেছিলেন অনুব্রত। সেখানে তাকে দেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। বলা হয়, বার্ধক্যজনিত কিছু রোগে ভুগছেন তিনি। তবে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু বোলপুরের চিকিৎসকরা তাকে বেডরেস্টের নির্দেশ দেন।
ছবি: Subrata Goswami
আসানসোলের পথে
আসানসোল আদালতে তোলা হতে পারে অনুব্রতকে। তার আগে সিবিআই তাকে আরো জেরা করতে পারে মনে করা হচ্ছে। অনুব্রতকে সরাসরি গরুপাচার মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গেছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
7 ছবি1 | 7
জেলে রুটি দেয়া হলেও অনুব্রত খাননি। তিনি ভাত, ডাল, তরকারি খেয়েছেন। সম্ভবত বুধবার তাকে সেলে দেয়া হবে। তাকে পিএমএলএ(মানি লন্ডারিং) বন্দিদের জন্য নির্দিষ্ট সাত নম্বর সেলে রাখা হতে পারে। তার সাবেক দেহরক্ষী সায়গল হোসেন, অভিযুক্ত এনামুল হক, বিএসএফের আধিকারিক সতীশ কুমার ও হিসাবরক্ষক মনীশ কোঠারিও এখন তিহার জেলে বন্দি।
মঙ্গলবার রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে ঠোকার আগে অনুব্রতর জন্মসাল ও তারিখ জিজ্ঞাসা করেন ইডির অফিসার। অনুব্রত জন্মসাল ভুলে যান। তিনি শুধু বলেন, অঘ্রাণ মাস, চৌঠা অঘ্রাণ। অবাঙালি অফিসার কিছু বুঝতে পারেননি। তিনি অনুব্রতর আধার কার্ডের কপি দেখাতে বলেন। তখন অনুব্রত বলেন, তার বয়স ৬৬ বছর। এবার ইডি-র অফিসার তার জন্মসাল বের করে নিন।
১০ দিনের সিবিআই হেফাজতে অনুব্রত
বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। ভোর রাতে তাকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার সিবিআই দপ্তরে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
১০ দিনের সিবিআই হেফাজত
বৃহস্পতিবার বিকেলে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিল তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। বিচারক তাকে ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
গরুপাচার মামলায় গ্রেপ্তার
অনুব্রত, ওরফে কেষ্টর বিরুদ্ধে গরুপাচার মামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগ। এবিষয়ে জেরা করার জন্য ১০ বার সিবিআই তাকে ডেকেছিল। অনুব্রত গেছিলেন একবার। সিবিআইয়ের অভিযোগ, অনুব্রত তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। তাই তাকে গ্রেপ্তার করতে হচ্ছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কলকাতার পথে
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসানসোল থেকে কলকাতার পথে রওনা হয় সিবিআই। অনুব্রতকে তোলা হয় সিবিআইয়ের গাড়িতে। গাড়ির ভিতর বসে ভেঙে পড়েন তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বাড়িতে সিবিআই
বৃহস্পতিবার ভোরে সিবিআইয়ের বিরাট দল পৌঁছে যায় বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে। সেখানে তাকে ঘণ্টাদেড়েক জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে আটক করা হয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আদালতের পথে
নাটকীয় কায়দায় গাড়িতে তুলে তাকে আসানসোলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঝে দুর্গাপুরের একটি হোটেলে কিছুক্ষণের বিরতি। সেখান থেকে বার হচ্ছেন কেষ্ট।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বাড়ির সামনে ভিড়
অনুব্রত চলে যাওয়ার পরেও তার বাড়ির সামনে জটলা ছিল। স্থানীয় মানুষ দিনভর অপেক্ষা করেছেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির বাড়ির সামনে। বাড়ির সামনে ছিল প্রচুর সিআরপিএফের জওয়ান।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রাস্তায় 'চোর'
আদালত চত্বরে এবং রাস্তায় তাকে উদ্দেশ্য করে সাধারণ মানুষ 'চোর চোর' বলে চেঁচান। অনুব্রত অবশ্য এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনো কথা বলেননি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
7 ছবি1 | 7
তবে জন্মসাল ভুললেও নিজের ওষুধের কথা ভলেননি তিনি। ওষুধের ব্যাগ দেখিয়ে জানতে চান, তিহারে ওষুধ, নেবুলাইজার, অক্সিজেন দেবে তো? তাকে আস্বস্ত করেন তার আইনজীবী। তিনি জানিয়ে দেন, তিহার জেল হাসপাতাল থেকে ওষুধ দেয়া হবে।
অনুব্রতকে সাংবাদিকরা বগটুই নিয়ে বারবার প্রশ্ন করলেও তিনি একটা কথাও বলেননি।
ভরসা হাইকোর্ট
দিল্লি হাইকোর্টে অনুব্রতর জামিনের আবেদন বিচারাধীন আছে। তার আইনজীবী সম্পৃক্তা ঘোষাল জানিয়েছেন, অনুব্রতকে নিয়ম মেনে গ্রেপ্তার করতে পারেনি ইডি। তাছাড়া গ্রেপ্তার করার পর প্রায় দুই মাস কেটে গেলেও ইডি চার্জশিট দিতে পারেনি।