1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তীব্র খাবার সংকটে রোহিঙ্গারা

সমীর কুমার দে ঢাকা
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত এলাকার আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা খাবারের তীব্র সংকটে ভুগছেন৷ খাবারের জন্য রাস্তায় এসে বসে আছেন তারা৷ কোনো গাড়ি থেকে শুকনা খাবার দিতে দেখলেই খাবার সংগ্রহ করতে শুরু হয় কঠিন প্রতিযোগিতা৷

Rohingya-Konflikt in Myanmar
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Armangue/AP

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে হাজার হাজার রোহিঙ্গা এখন রাস্তার দু'পাশে অবস্থান করছেন ওই সড়ক দিয়ে কোনো গাড়ি গেলেই পাশে এসে দাঁড়ান তারা৷ একই চিত্র ঘুমধুম, কলাবাগান, পালংখালী ও বালুখালীতে৷ এসব এলাকার রাস্তায় বসে আছেন তারা৷

Rajib Noor.mp3 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

এমন বিপন্নতার মধ্যেই বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সাত মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন৷ শুক্রবার এই ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ৷ তবে এই সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য৷ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর একজন শীর্ষ কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে, এই বিপুল পরিমাণ মানুষকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে তারা অক্ষম৷ 

দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি রাজীব নূর কয়েকদিন ধরে সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখেছেন মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে রাজীব বলেন, ‘‘আমি ৬ সেপ্টেম্বর ভোরে যখন টেকনাফে এসে পৌঁছি তখন ভোরের আলো ফোটেনি৷ বাসস্টান্ডের পাশেই গাদাগাদি করে বহু মানুষকে শুয়ে থাকতে দেখেছি৷ অথচ সেখানে ঘুমনোর মতো কোন পরিবেশই নেই৷ পাশাপাশি খাবার ও পানি সংকটে সেখানে এক ধরনের মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে৷''

প্রশাসনের ভুমিকা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন যে কি করছে সেটাই আমি বুঝতে পারছি না৷ কারণ প্রতিদিন দেশে কী পরিমান রোহিঙ্গা প্রবেশ করছে, তারা কোথায় যাচ্ছে তার কিছুই বলতে পারছেন না প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা৷ পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে অনেকেই মানবিকতার কথা বলছেন, অথচ তাদের কাউকেই এই সাগর-পাহাড় পাড়ি দিয়ে এখানে আসা রোহিঙ্গাদের খাবার দিতে দেখা যাচ্ছে না৷ এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ কিছুটা এগিয়ে এসে খাবার দিয়ে সহযোগিতা করছেন৷''

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির খবর অনুযায়ী, বন্যার মতো ধেয়ে আসা শরণার্থীরা খাবার আর পানির জন্য হাহাকার করছেন৷ সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সংবাদকর্মীদের গাড়ি থামিয়ে জানালায় খাবার আর পানির আকুতি জানাচ্ছেন রোহিঙ্গা নারীরা৷ কখনও কখনও সংবাদকর্মীদের কাপড় টেনে ধরে থামাতে চাইছে তাদের৷ নারীরা তাদের বাচ্চাদের দেখিয়ে খাবার ভিক্ষা চাইছে৷

অষ্ট্রেলিয়াভিত্তিক এবিসি নিউজের খবরে উঠে এসেছে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শরণার্থী শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গাদের বিপন্নতার চিত্র৷ একটি অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরের নেতা নূর মোহাম্মদকে উদ্ধৃত করে এবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘নতুন শরণার্থী যারা এসেছে তাদের অনেকেই দু'দিন ধরে কিছু খায়নি৷ অনেকেই তিন দিন ধরে অভুক্ত আছে৷ তাদের রান্না করার মতো কিছু নেই, কিছু একটি বিছিয়ে যে ঘুমাবে সেরকম কিছুও নেই৷''

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখন যে সংকট তৈরি হয়েছে তা সরকারের একার পক্ষে সমাল দেয়া কঠিন৷ সরকার যদি একা সেটা করতে চায় সেটা ঠিক হবে না৷ সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করা৷ পাশাপাশি এখন সেখানে যে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে সেটার সমাল দিতে দেশি বিদেশি কিছু বড় এনজিওকে সম্পৃক্ত করা৷

তিনি বলেন, ‘‘আমি বলব এটা মানবিক দুর্যোগ৷ এই দুর্যোগটা মানুষদ্বারা সৃষ্টি৷ বিশ্বের অন্যতম বড় এনজিও বাংলাদেশেই আছে৷ তাদের এই বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলার অভিজ্ঞতা আছে৷''

Imtiaz.mp3 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য জন্য জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়ক দপ্তরের প্রধান মার্ক লওকক সাত মিলিয়ন মার্কিন ডলার ডলার অনুদান নিশ্চিত করেছেন৷ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তা করতে জাতিসংঘের সেন্ট্রাল ইমারজেন্সি রেসপন্স ফান্ড (সার্ফ) থেকে এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে৷ জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়ক দপ্তরের ডিজিটাল সার্ভিস রিলিফওয়েবের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়েছে৷

ইউএনএইচসিআর'র বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার শিন্নি কুবো বলেন, ‘‘আমার ভয় হচ্ছে, আরও মানুষ আসবে৷ তাদের জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে৷ আমাদের বিশাল অংকের আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন৷ এমন ঘটনা নজিরবিহীন৷ এই পরিস্থিতি আকস্মিক৷ আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে এই পরিস্থিতি চলবে৷'' 

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ