যদিও সন্ধ্যা না বলে বিকেল বলা ভালো কারণ, এমনিতেই গ্রীষ্মে রাত দশ এগারটা অবধি আলো থাকে ইউরোপে৷ দর্শক-শ্রোতাও কম নন৷ প্রত্যাশিতই ছিল যে তরুণ-তরুণীর সংখ্যাই হবে বেশি৷ হলোও তাই৷
আয়োজন বলতে একটি স্টেজ৷ ডিস্ক জকি তাঁর মিক্সার ও সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে প্রস্তুত৷ কানে হেডফোন লাগিয়ে পরীক্ষা করছেন৷
রাইন থেকে শরীর জুড়াচ্ছে মৃদুমন্দ হিম বাতাস৷ আর মন জুড়াতে সংগীতের অপেক্ষা৷ বসে রইলাম কখন শুরু হবে সেই কনসার্ট৷
কিন্তু কনসার্ট তো আর শুরু হয় না৷ অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়েই কিনা তরুণ-তরুণীরা সব কানে হেডফোন লাগিয়ে মঞ্চের সামনের খালি জায়গাটায় শরীরে রাইন নদীর মৃদু ঢেউ তুলে যাচ্ছেন৷
শব্দদূষণ স্বাস্থ্যের যেসব ক্ষতি করে
শব্দদূষণ দেশ, কাল, স্থান ভেদে অন্য সমস্যার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সমস্যাটিও বড় করে তুলছে৷ যেমন একটানা গাড়ির শব্দ কিংবা উচ্চ শব্দের গান হৃদরোগের ঝুঁকি, শ্রবণশক্তি হ্রাস, মানসিক চাপ বাড়ানো ছাড়াও নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Chromorange
গানের শব্দ
প্রতিটি মানুষ যেমন আলাদা, তেমনি তার কাছে শব্দের মাত্রার গ্রহণযোগ্যতাও ভিন্ন৷ উচ্চ শব্দের গান কারো কারো জন্য ভীষণ বিরক্তিকর৷ অন্যদিকে সেই গান খুব জোরে বাজালেও যথেষ্ট জোরে নয় বলেও কেউ কেউ মনে করেন৷ আসলে শব্দের মাত্রার ব্যাপারটি অনেকটাই ব্যক্তিগত পছন্দ বা ভালোলাগার ব্যাপার৷
ছবি: Colourbox/P. van Dam
যানবাহনের শব্দ
যানবাহনের শব্দও কারো কাছে কষ্টের বা বিরক্তিকর, আবার কারো কারো হয়ত তেমন খারাপ লাগে না৷ যদিও জার্মানিতে গাড়ি চলার মৃদু শব্দ হলেও হর্ণ শোনা যায় না বললেই চলে৷ তারপরও নাকি জার্মানিতে প্রতি তিন জনের দু’জনই এ দেশের ৪০ মিলিয়ন গাড়ির শব্দে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত৷ এই তথ্য জানা গেছে জার্মানির পরিবেশ বিষয়ক এজেন্সির করা এক জরিপ থেকে৷
ছবি: Getty Images/S. Gallup
শব্দের মাত্রা
জার্মানির খুব ব্যস্ত রাস্তার শব্দ মাত্রার স্তর ৭০ থেকে ৮০ ডেসিবেল, আর ট্রাক চললে তা হয় গড়ে ৯০ ডেসিবেল৷ আর বিমান যাত্রা শুরু করার সময় শব্দের মাত্রা হয় সাধারণত ১২০ থেকে ১৩০ ডেসিবেল৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, শব্দের এই মাত্রা মানুষের সহ্য ক্ষমতার মধ্যে৷
ছবি: picture-alliance/epa/Bombardier
কানের ক্ষতি
শব্দের মাত্রা ১২০ ডেসিবেলের বেশি হলেই নাকি মানসিকভাবে অস্থির হতে পারে যে কেউ৷ কানের ক্ষতি বা শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে ৷ তাছাড়া কানের দু’ পাশের চুলের কোষগুলো নষ্ট হয়ে কানে কম শোনার ঝুঁকি বাড়ায়৷ আর ধীরে ধীরে শব্দ খুব ভালো করে বোঝার শক্তি কমিয়ে দেয়৷ তবে নিয়মিত হেডফোন ব্যবহারেও এমনটা হতে পারে কিন্তু !
ছবি: picture-alliance/dpa/I. Frantisek
টিনিটাস
নিয়মিত কানে জোরে জোরে শব্দ গেলে ‘টিনিটাস’ বা কানে ভো ভো শব্দ হয় এ রকম অসুখও হতে পারে৷ যাঁরা নিয়মিত প্লেনে লম্বা ভ্রমণ করে থাকেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/McPhotos
হৃৎপিণ্ড
তীব্র শব্দ শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে দূর্বল করে দেয়৷ আর সেকারণেই হৃদরোগ, মাথা ঘোরার মতো অসুখের ঝুঁকিও বাড়ে৷ এবং রাতে যদি শব্দ ৫৫ ডেসিবেলের বেশি হয়, তাহলে ঘুমের সমস্যা হয়৷ আর নিয়মিত এমনটা হলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়৷
ছবি: Colourbox/Monkey Business Images
ডাক্তারের পরামর্শ
যাঁদের বড় রাস্তার পাশে বাড়ি, তাঁরা যদি শব্দের কারণে রাতে ঘুমাতে না পারেন, তাঁদেরকে কানে তুলো বা শব্দ না শোনার জন্য বিশেষ ধরনের ইয়ার প্লাগ পাওয়া যায়, সেটা লাগিয়ে রাখার পরামর্শ নাক, কান গলার রোগ বিশেষজ্ঞ পেটার রেনারের৷
ছবি: picture-alliance/OKAPIA KG Germany/Jeffrey Telner
কানের জন্য ‘অ্যাপ’
কান কতটা খারাপ বা কান সম্পূর্ণ সুস্থ কিনা তা জানতে চাইলে যে কেউ স্মার্ট ফোনের ‘মিমি’ অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন৷ অ্যাপটি যে কেউ ডাউনলোড করে নিতে পারেন বিনা মূল্যে৷ স্বাস্থ্য বিষয়ক অ্যাপটি তৈরিতে সহায়তা করেছে জার্মানির স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানী বার্মার জিইকে৷
ছবি: picture-alliance/PhotoAlto/F. Cirou
জার্মানিতে যখন-তখন শব্দ করা যায় না
বাড়ির ভেতরে ড্রিল মেশিন বা বাগানে ঘাস কাটার যন্ত্র বা জোরে শব্দ হয় এমন কোনো মেশিন জার্মানিতে রবিবার বা ছুটির দিনে নিজের বাড়িতেও ব্যবহার করা নিষেধ৷ তাছাড়া প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আবাসিক এলাকায় জোরে শব্দ করা যায় না৷ রাত দশটার পরে তো একেবারেই শব্দ করা যাবে না৷ যদি কেউ করে, তাহলে অন্য প্রতিবেশীদেরও পুলিশকে ডাকার অধিকার রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Goldmann
সকলে মিলে আনন্দ
তরুণ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের জন্মদিন বা সেরকম কোনো পার্টির আয়োজন করা হলে, অনেক সতর্ক জার্মান আগে থেকে প্রতিবেশীদের সেকথা জানিয়ে রাখেন৷ অনেকে আবার এরকম পরিস্থিতিতে পুলিশের ঝামেলা এড়াতে প্রতিবেশীদেরও দাওয়াত দেন৷
ছবি: Fotolia/pressmaster
10 ছবি1 | 10
শুনেছিলাম ‘জার্মান সময়' শিষ্টাচারপূর্ণ৷ কিন্তু এ কী? এই সংগীতসাধকরা তো জাতির সফেদ দেয়ালে কালিমা লেপনে মত্ত৷
খুবই বিরক্ত লাগছিল৷ কোথায় কনসার্ট দেখব বলে এতটা পথ এলাম৷ এদিকে, হেডফোন কানে শরীর দুলানো দর্শকশ্রোতার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে৷
হঠাৎ খেয়াল হলো একটা বিষয়! এদের সবার কানে একই ধরনের হেডফোন৷ এমনকি যাঁরা বসে বসে গা দুলাচ্ছেন, তাঁদের কানেও সেই একই হেডফোন৷ ওদিকে, একই ভঙ্গিমায় নর্তন-কুর্দন করছেন স্বয়ং ডিজে৷ ওরে, এ তো ‘নিরব কনসার্ট'! বুঝতে আর বাকি রইল না৷ মানে গান বাজবে, কনসার্ট হবে, কিন্তু যাঁরা শুনতে চাইবেন, তাঁরাই কেবল শুনবেন৷ যাঁরা চাইবেন না, তাঁরা শুনবেন না৷ এমন কনসার্ট জম্মেও শুনিনি, দেখিওনি৷
জার্মানিতে খোলা কনসার্ট যে হয় না তা নয়৷ সেটিও হয়, তবে শব্দ তৈরির মাত্রায় একটা সীমাবদ্ধতা থাকে৷ আমাদের দেশগুলোতে যেমন কনসার্ট হয়, তার সঙ্গে মিল কম৷ এ হলো ভদ্রলোকের কনসার্ট! তবে কোন ধরনের কনসার্টে আনন্দ বেশি, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে৷
কিন্তু এই ঘটনার অবতারণা অন্য কারণে৷ তা হলো, শব্দদূষণ নিয়ে এদের সচেতনতা৷
কোন শহরে কেমন শব্দদূষণ?
বিশ্বের ৫০টি শহরের প্রায় দুই লক্ষ মানুষের শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করে একটি তালিকা তৈরি করেছে বার্লিনের কোম্পানি ‘মিমি হিয়ারিং টেকনোলজিস’৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Becker
সবচেয়ে বেশি দূষণ গুয়াংজুতে
চীনের এই শহরে শব্দদূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি বলে এক জরিপে জানা গেছে৷ বার্লিনের কোম্পানি ‘মিমি হিয়ারিং টেকনোলজিস’ বিশ্বের ৫০টি শহরের মানুষের শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করে একটি তালিকা তৈরি করেছে৷
ছবি: CC/Karl Fjellstorm, itdp-china
এরপর দিল্লি
তালিকায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শব্দদূষণের শিকার শহর হিসেবে আছে ভারতের রাজধানীর নাম৷ ভারতেরই আরেক শহর মুম্বইয়ের নাম আছে চার নম্বরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Tyagi
শীর্ষ দশে দু’টি ইউরোপীয় শহর
মিমি হিয়ারিং টেকনোলজিস তাদের পাওয়া তথ্যের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও নরওয়ের একটি গবেষণা সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণ করে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড হিয়ারিং ইন্ডেক্স’ নামের একটি তালিকা তৈরি হয়েছে৷ সেখানে সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার ১০টি শহরের মধ্যে ইউরোপের দু’টি শহর আছে৷ সেগুলো হচ্ছে, বার্সেলোনা (৭) আর প্যারিস (৯)৷ তালিকাটি দেখতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: picture-alliance/Prisma/Raga Jose Fuste
শীর্ষ দশের অন্যরা
সবচেয়ে খারাপ অবস্থার দশটি শহরের মধ্যে বাকিগুলো হচ্ছে কায়রো (৩), ইস্তাম্বুল (৫), বেইজিং (৬), মেক্সিকো সিটি (৮) ও বুয়েনস আইরেস (১০)৷
ছবি: Getty Images/K. Desouki
সবচেয়ে নীরব
সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহর শব্দদূষণের মাত্রা সবচেয়ে কম৷ এর পরেই আছে ভিয়েনা, অসলো, মিউনিখ ও স্টকহোম৷ অর্থাৎ সবচেয়ে কম শব্দদূষণ হওয়া পাঁচটি শহরই ইউরোপের৷
ছবি: picture-alliance/prisma/Etienne
জার্মানির চার শহর
শব্দদূষণ সবচেয়ে কম এমন ১০ শহরের মধ্যে জার্মানির শহর আছে সর্বোচ্চ চারটি৷ তালিকায় মিউনিখ ছাড়াও আছে ড্যুসেলডর্ফ (৬), হামবুর্গ (৭) ও কোলনের (৯) নাম৷ সবমিলিয়ে ৫০টি শহরের মধ্যে জার্মানির আরও চারটি শহর রয়েছে৷ সেগুলো হচ্ছে, স্টুটগার্ট, বার্লিন, হ্যানোভার ও ফ্রাংকফুর্ট৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/S. Ziese
তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি শহর
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ হয় লস অ্যাঞ্জলসে (৩৩)৷ আর সবচেয়ে কম হয় পোর্টল্যান্ডে (৮)৷ বাকি শহরগুলো হচ্ছে নিউ ইয়র্ক (১৯), হিউস্টন (২১), শিকাগো (২৪) ও সান ফ্রান্সিস্কো (২৬)৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. C. Hong
যুক্তরাজ্যের পাঁচ
এগুলো হলো লিভারপুল (১২), গ্লাসগো (১৬), বার্মিংহাম (২৫), লন্ডন (২৭) ও ম্যানচেস্টার (৩০)৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/McPhoto
8 ছবি1 | 8
শব্দদূষণ করে মানুষের ক্ষতি করা কিংবা কোলাহল করে অন্যকে বিরক্ত করার ব্যাপারে কড়া আইন আছে এদেশে৷ অন্যকে বিরক্ত করার সীমা নিয়ে আইনের ব্যাখ্যায় পরে আসি৷ প্রথমে আসুন দেখি, রাষ্ট্রীয়ভাবে শব্দদূষণের মাত্রা নিয়ে কতটা সচেতন এরা৷
একে তো পাবলিক অনুষ্ঠান, হোক সে রাজনৈতিক বা সামাজিক, জোরে মাইক বাজিয়ে অন্যদের বিরক্ত করবেন? ভুলে যান৷ এখানে সেটা সম্ভব নয়৷
ক'দিন আগে, জার্মানির দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল সামাজিক গণতন্ত্রী পার্টির বার্ষিক সমাবেশ হয়েছে ডয়চে ভেলে অফিসের একটু সামনেই৷ মহাজোট সরকার গঠন নিয়ে দলটিতে মতবিরোধ ছিল৷ কনফারেন্স হলের বাইরে প্রতিবাদও হয়েছে৷ কিন্তু সিকিমাইল দূর থেকেও তা শোনা সম্ভব নয়৷
এখানে রাস্তায় অযথা গাড়ির হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ৷ কেউ যদি একবার হর্ন বাজান, তাহলে অন্যরা ধরে নেন যে, খুব জরুরি কিছু ঘটে গেছে৷ সবাই সেই গাড়িকে পথ ছেড়ে দেবেন৷
পুরো দেশ রেল নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত৷ তাই রেলগাড়ির আওয়াজ নিয়ে বেজায় শঙ্কিত জার্মানরা৷ একটা গবেষণায় দেখা গেছে, রেলগাড়িগুলো গড়ে ১১০ ডেসিবেল শব্দ তৈরি করে৷ এর মানে হলো, একটি করাত কল এক মিটার দূরে যে শব্দ তৈরি করবে তেমনটি৷
এ নিয়ে পরিবেশবাদীদের বিস্তর অভিযোগ৷ ফেডারেল পরিবেশ সংস্থা ইউএফএ-এর গবেষণায় দেখা যায়, বছরে ২ হাজার জার্মানের হৃদরোগের কারণ পরিবহনে সৃষ্ট শব্দ৷ আর এ কারণে স্বাস্থ্যসেবায় অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ইউরো৷
আগামী কয়েক বছরের মধ্যে শব্দদূষণের মাত্রা দিনে ৫৫ ডেসিবেল ও রাতে ৪৫ ডেসিবেলে নামিয়ে আনার জন্য কাজ করছে সরকার৷
এবার আসি ব্যক্তিগতভাবে আপনি কতটা কোলাহল করতে পারবেন জার্মানিতে, সেই হিসেবে৷
জার্মান সিভিল কোড বলছে, কোনো বাড়ির বাসিন্দা কখনোই ‘অত্যাধিক শব্দ' তৈরি করতে পারবেন না, যা অন্যের জন্য ক্ষতিকর৷ এখন প্রশ্ন হলো, এই ‘অত্যাধিক' বিষয়টি কিভাবে নির্ধারিত হবে৷ আসলে এটি নির্ধারণ করা কঠিন৷ তাই এ নিয়ে ফি বছর হাজারো নালিশ জমা পড়ে আদালতে৷ আদালতও অনেক সময় মজার মজার রায় দেন৷
যেমন, এক ব্যক্তির পুকুরে ব্যাঙ প্রচুর আওয়াজ করত৷ আর যায় কোথায়? সইতে না পেরে মামলাই ঠুকে দিলেন প্রতিবেশী৷ কিন্তু আদালত ব্যাঙের স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিলেন৷
আবার, কোলন শহরে আরেক ব্যক্তির কুকুর খুব চিৎকার করে৷ তাই আদালত রায় দিলেন যে, কুকুর দিনে ৩০ মিনিটের বেশি চিৎকার করতে পারবে না৷ আর একবার চিৎকার করলে ১০ মিনিট তাকে চুপ থাকতে হবে৷ কী বিপদ বলুন তো!
সে যাই হোক, সাধারণভাবে এখানে নিয়ম হলো, অন্যকে বিরক্ত করা যাবে না৷ রাত আটটার পর থেকে পরদিন ভোর সাতটা পর্যন্ত সময়কে কোয়ায়েট টাইম বা নিরব সময় বলে ধরা হয়৷ এছাড়া সপ্তাহে রোববার ও অন্য ছুটির দিনও এই কোয়ায়েট টাইমের আওতায় পড়বে৷ অর্থাৎ এ সময়ে শব্দ করে বাগানে এমন কোনো যন্ত্রের ব্যবহার করা যাবে না কিংবা ওয়াশিং মেশিন চালানো যাবে না৷ তবে হ্যাঁ, মৃদু নাক ডাকা যেতে পারে!
তাই বন্ধের দিন বলে ধেই ধেই করে নাচলে এ অনাচার সহ্য করবেন না প্রতিবেশীরা৷ তিরস্কারের পাশাপাশি বাড়তি পাওনা হিসেবে মামলাটিও খেতে হবে৷
তবে সব নিয়মই নিজেদের স্বাস্থ্য সমুন্নত রাখতে তৈরি করা, যেগুলো আমাদের তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে খুবই বেমানান৷ কারণ, স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা আসতে এখনো ঢের সময় লাগবে আমাদের৷