তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল অ্যামেরিকা। রাশিয়ার কাছ থেকে এস ৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কেনার জন্য।
রাশিয়ার এস ৪০০ মিসাইল।ছবি: Maksim Blinov/Sputnik/dpa/picture alliance
বিজ্ঞাপন
বিরোধ প্রায় এক বছর ধরে চলছিল। রাশিয়ার কাছ থেকে তুরস্ক এস ৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কেনার পরই বিরোধের সূত্রপাত। অ্যামেরিকার দাবি, এ কাজ ন্যাটোর নীতি-বিরোধী এবং মার্কিন সেনার কাছে বিপদের কারণ। ফলে তাঁর শাসনের একেবারে শেষ পর্বে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন। এই নিষেধাজ্ঞা তুরস্কের সামরিক সাজসরঞ্জাম কেনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সি ও তার সঙ্গে যুক্ত অফিসারদের উপর লাগু হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ''অ্যামেরিকা তুরস্কের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে একাধিকবার জানিয়েছে, তাঁরা যদি এস ৪০০ সিস্টেম কেনেন, তা হলে তা মার্কিন সেনার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চিন্তার কারণ হবে। তুরস্কের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে ও প্রতিরক্ষা শিল্প ক্ষেত্রে রাশিয়া ঢুকে যাবে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের হাতে প্রচুর অর্থ চলে আসবে। এ সবই অ্যামেরিকার চিন্তার কারণ।''
পম্পেও বলেছেন, ''তুরস্কের সামনে বিকল্প সিস্টেমও ছিল। ন্যাটোর সদস্য দেশগুলি সেই সিস্টেমই ব্যবহার করে।
তুরস্ক হলো অ্যামেরিকার গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু দেশ এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অ্যামেরিকার শরিক দেশ। অ্যামেরিকা চায়, তুরস্কের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক বজায় থাক, সামরিক সহযোগিতা বজায় থাক। কিন্তু সেটা করতে হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এস ৪০০-র বাধা দূর করতে হবে।''
ইসরায়েলসহ মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী ১০ দেশ
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সামরিক শক্তির দিক থেকে কোন দশটি দেশ সবচেয়ে এগিয়ে? বিশ্বের ১৩৮টি দেশকে নিয়ে করা বিশ্ব র্যাংকিং অনুযায়ী তার একটা তালিকা থাকছে ছবিঘরে৷ দেখুন...
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Hassan
মরক্কো, বিশ্ব র্যাংকিং ৫৭
উত্তর আফ্রিকার মাগরেব অঞ্চলের দেশ মরক্কোর সক্রিয় সেনাসদস্য সংখ্যা তিন লাখ ১০ হাজার৷ সামরিক খাতে বাজেট এক হাজার কোটি ডলার৷ জিএফপি স্কোর ০. ৮৪০৮৷ ছবিতে মরক্কোর জাতীয় পতাকা৷
ছবি: picture alliance/dpa/Sputnik/N. Seliverstova
সিরিয়া, বিশ্ব র্যাংকিং ৫৫
দীর্ঘ দিন ধরে যুদ্ধ চলছে সিরিয়ান আরব রিপাবলিকে৷ ফলে বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনীর শক্তিও কমেছে অনেক৷ তারপরও নয় নাম্বারে রাখতে হবে তাদের৷ দেশটির সক্রিয় সেনা সদস্য এক লাখ ৪২ হাজার জন৷ জিএফপি স্কোর ০. ৮২৪১৷ সামরিক খাতে বাজেট ১৮০ কোটি ডলার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Str
ইরাক, বিশ্ব র্যাংকিং ৫০
যুদ্ধে বিধ্বস্ত হলেও, অর্থনীতি দুর্বল হয়ে গেলেও আট নাম্বারে রয়েছে ইরাক৷ সামরিক খাতে বার্ষিক ব্যয় ১৭৩ কোটি ডলার৷ সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী ইরাকের সক্রিয় সামরিক সদস্য সংখ্যা এক লাখ ৬৫ হাজার৷ জিএফপি স্কোর ০.৭৯১১৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J.al-Helo
সংযুক্ত আরব আমিরাত, বিশ্ব র্যাংকিং ৪৫
সামরিক শক্তির দিক থেকে আরব বিশ্বের সব দেশের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত থাকছে সাত নাম্বারে৷ তাদের জিএফপি স্কোর০.৭০৩৪, সক্রিয় সেনা সদস্য ৬৪ হাজার জন৷ সামরিক খাতে বার্ষিক ব্যয় ২২৭৫ কোটি ডলার৷
ছবি: Imago/imagebroker
আলজেরিয়া, বিশ্ব র্যাংকিং ২৮
উত্তর আফ্রিকার মাগরেব অঞ্চলের আরেক মুসলিম অধ্যুষিত (৯৯%) দেশ আলজেরিয়ার এক লাখ ৩০ হাজার সদস্য নিয়ে গড়া সামরিক বাহিনীর জন্য বাজেট ১৩০০ কোটি ডলার৷ জিএফপি স্কোর ০.৪৬৫৯৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Belghoul
ইসরায়েল, বিশ্ব র্যাংকিং ১৮
এক লাখ ৭০ হাজার সক্রিয় সেনাসদস্য নিয়ে ইসরায়েল আছে পঞ্চম স্থানে৷ সামরিক খাতে বাজেট ২০০০ কোটি ডলার৷ জিএফপি স্কোর ০.৩১১১৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Hollander
সৌদি আরব, র্যাংকিং ১৭
কিংডম অব সৌদি অ্যারাবিয়ার সক্রিয় সেনাসদস্য চার লাখ ৭৮ হাজারেরও বেশি৷ সামরিক খাতে বাজেট ৬৭৬০ কোটি ডলার৷ তবে বিশাল বাজেট হলেও ০.৩০৩৪ জিএফপি স্কোর নিয়ে সৌদি আরব রয়েছে চতুর্থ স্থানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Hassan
ইরান, বিশ্ব র্যাংকিং ১৪
ইরানের সক্রিয় সেনাসদস্য সংখ্যা পাঁচ লাখ ২৩ হাজার৷সামরিক খাতে বার্ষিক ব্যয় ১৯৬০ কোটি ডলার৷ইরানের জিএফপি স্কোর ০.২১৯১৷
ছবি: picture-alliance/R. Fouladi
তুরস্ক, বিশ্ব র্যাংকিং ১১
এর্দোয়ানের দেশ তুরস্কের সক্রিয় সেনাসদস্য সংখ্যা তিন লাখ ৫৫ হাজারেরও বেশি৷ সামরিক খাতে বছরে ব্যয় ১৯০০ কোটি ডলার৷ জিএফপি স্কোর ০. ২০৯৮৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
মিশর, বিশ্ব র্যাংকিং ৯
আরব বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সামরিক শক্তির দিক থেকে সবার ওপরে রয়েছে আরব রিপাবলিক অব ইজিপ্ট৷ তাদের সামরিক খাতে বাজেট ১১২০ কোটি ডলার এবং সক্রিয় সেনাসদস্য সংখ্যা চার লাখ ৪০ হাজার৷ জিএফপি স্কোর ০.১৮৭২৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Desouki
10 ছবি1 | 10
জবাবে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাঁরা অ্যামেরিকার এই একতরফা নিষেধাজ্ঞা খারিজ করছেন ও এই সিদ্ধান্তের নিন্দাকরছেন।
তুরস্কের মিলিটারি প্রকিওরমেন্ট এজেন্সি এসএসবির প্রধান ইসমাইল ডেমির জানিয়েছেন, এর ফলে তুরস্কের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কোনো ক্ষতি হবে না। তুরস্ক নিজের দেশে সম্পূর্ণ স্বাধীন প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তুলবেই।
আঙ্কারা আগে জানিয়েছিল, তারা প্রথমে মার্কিন প্যাট্রিয়ট মিসাইল সিস্টেম কিনতে চেয়েছিল। কিন্তু অ্যামেরিকা তা বিক্রি করতে রাজি হয়নি। তখন তারা রাশিয়ার সিস্টেম কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। তছাড়া গ্রিসও রাশিয়ার তৈরি ক্ষেপনাস্ত্র কিনেছে। তাদের অ্যামেরিকা কিছু বলেনি। অথচ, তুরস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। এটা দুমুখো নীতি।
প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার মাস খানেক আগে ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিলেন। অবশ্য এ ক্ষেত্রে বাইডেনও মনে করেন, তুরস্ক রাশিয়ার মিসাইল সিস্টেম কিনে ভুল কাজ করেছে। গত অক্টোবরে তুরস্ক প্রথমবার রাশিয়ার মিসাইল পরীক্ষা করে দেখে। তখনই অ্যামেরিকা তাদের সাবধান করে দিয়েছিল।