1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তুরস্কের কর্ম জগত

সিমসেক আয়ান/আরবি১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো তুরস্কের নারীরাও কর্মক্ষেত্রে আর পিছিয়ে থাকতে চাইছেন না৷ শীর্ষ স্থানীয় পদগুলিতেও আসীন হচ্ছেন অনেক নারী৷ হচ্ছেন সফল৷

info: Turkish businesswomen support projects to bridge gender gap in Turkey Turkish women entrepreneurs during a training seminar by Women Entrepreneurs Association of Turkey (KAGİDER) credit: we are free to use this photo, free of charge, with giving credit to the NGO, KAGİDER. (©KAGİDER ) “Turkish women leaders make a difference”. I have contacted with the press sections of the organizations; we are free to use them with giving credit to the organizations. Zugeliefert von Ayhan Simsek.
ছবি: KAGİDER

তুরস্কের শীর্ষ স্থানীয় নারী ম্যানেজার গ্যুলার সাবানজে জার্মান শিল্প প্রতিষ্ঠান সিমেন্সের সুপারভাইসরি বোর্ডে সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন সম্প্রতি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগাজিন ফোর্বস-এর এক তালিকায় ২০১২ সালের ১০০ ক্ষমতাশালী নারীর একজন বলে গণ্য করা হয়েছে তাঁকে৷ ৫৭ বছর বয়স্ক সাবানজে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান সাবানজে হোলডিং-এ পরিচালন পর্ষদের প্রধান হিসাবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছেন৷

পশ্চিমা দেশগুলির প্রচার মাধ্যমে তুরস্কের নারী প্রসঙ্গে প্রায়ই একটা নেতিবাচক চিত্র তুলে ধরা হয়৷ যেমন নারী বৈষম্য বা নারী নির্যাতনের খবরা খবরই প্রাধান্য পায় সেখানে৷ সিমেন্সের উঁচু পদে তুরস্কের এক নারী ব্যবসায়ী নির্বাচিত হওয়ায় তুরস্কের সমাজে নারীর স্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ এক অন্য চিত্র উঠে আসে৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে নারী আসন সংরক্ষিত রাখার ব্যাপারে আলাপ আলোচনা-তর্ক বিতর্ক যখন তুঙ্গে, তখন তুরস্কের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের প্রথম সারির পদগুলির ২৬ শতাংশই মেয়েদের দখলে৷ দেখা যায় নেতৃস্থানীয় পদগুলিতে নারী কর্মীর গড় সংখ্যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেয়ে তুরস্কে অনেক বেশি৷

এক সফল নারী

তুরস্কের বৃহৎ মোবাইল ফোন সংস্থা তুর্কসেল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক লালে সারাল ডেভেলিওলু নেতৃস্থানীয় এক সফল নারী কর্মী৷ ৮টি দেশে ছড়িয়ে থাকা কোম্পানির শাখা প্রতিষ্ঠাগুলির দায়িত্বে রয়েছেন তিনি৷ এর মধ্যে রয়েছে ‘তুর্কসেল ইউরোপ'৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে লালে সারাল ডেভেলিওলু জানান, ‘‘জার্মানি ও ইউরোপের অন্যান্য দেশে আমাদের সহকর্মীরা, তুরস্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শীর্ষ পদগুলিতে নারী কর্মীর আধিক্য দেখে বিস্মিত হন৷ এজন্য আমরা গর্বিত৷ অবশ্য কর্মজীবনে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বড় বড় বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করতে হয় সেখানে এখনও৷''

বৈষম্য দূরীকরণে নীতিমালা

লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে হলে নানা ধরনের নীতিমালা তৈরি করা প্রয়োজন৷ এই সব নীতিমালার বাস্তবায়নের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে প্রতিষ্ঠানগুলিকেই৷ লালে সারাল-এর সংস্থায় শীর্ষ পদগুলির ৩৫ শতাংশই নারীদের হাতে৷ এছাড়া মোট কর্মীর অর্ধেকই মেয়ে৷

লালে সারাল বলেন, ‘‘আমরা নারী পুরুষের সমানাধিকারের দিকে বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখি৷ ‘একই কাজের জন্য একই পারিশ্রমিক', এটাই আমাদের প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা৷ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও এই মানদণ্ড বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়৷''

ছবি: Getty Images

জার্মানি সহ ইউরোপীয় অনেক দেশে নারী পুরুষের মজুরিতে যে তারতম্য লক্ষ্য করা যায়, তা বিস্মিত করে তুর্কি কর্মজীবীদের৷

লালে সারাল আরো জানান, ‘‘কর্মী নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার জন্য আমরা নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি৷ একই সাথে আমরা ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনের মধ্যে একটা ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছি৷''

নারী কর্মীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা

লালে সারালের প্রতিষ্ঠানটি কর্মরত মা ও শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য উন্নত মানের চিকিত্সা বিমার ব্যবস্থা করেছে৷ এ ছাড়া প্রতিষ্ঠান ভবনে তরুণী মায়েদের জন্য নির্দিষ্ট কক্ষ দেয়া হয়েছে, যেখানে তারা সন্তানদের খোঁজ খবর নিতে পারেন৷ এই ধরনের পদক্ষেপ মেয়েদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে সাহায্য করে৷ তবে তুরস্কের কর্ম জগতে নারী কর্মীদের অবস্থান সব দিক দিয়েই মসৃণ, একথা বললে ভুল হবে৷ অনেক শীর্ষ পদে নারী কর্মীর সংখ্যা ইউরোপের তুলনায় বেশি থাকলেও কর্মজগতে মেয়েদের প্রবেশ করার পথটি এখনও সুগম নয়৷ নেতৃস্থানীয় পদগুলিতে নারী কর্মীর উঁচু হার, সমাজের পরিপূর্ণ চিত্রটি তুলে ধরে না৷ পরিচালন পর্ষদের সদস্যদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ নারী, বলেন মুরাত ইয়েশিলডেরে৷ আন্তর্জাতিক কোম্পানি এগোন সেন্ডারের প্রতিনিধি তিনি৷ বস্তুত উঁচু পদে নারী কর্মীর সংখ্যা আরো কম হবে, যদি পারিবারিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরিসংখ্যানে ধরা না হয়৷ শুধু এই ধরনের কোম্পানিগুলিতেই পরিচালনা ক্ষেত্রে মেয়েদের প্রভাব বেশি৷

তুরস্কের নারী ব্যবসায়ীদের সংস্থা কাগিদের-এর প্রধান সেমা কেনডিরিজে কিছুটা উদ্বেগের সুরে জানান, তাঁর দেশে কর্মজীবী মেয়েদের হার ৩৫ শতাংশ থেকে নেমে ২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷ প্রতি চার জনে মাত্র একজন মেয়ের চাকরি রয়েছে৷ সংখ্যাটা ইউরোপের যে কোনো দেশের চেয়ে কম৷

অবস্থার পরিবর্তনে আশাবাদী

অবশ্য তুরস্কের নারী ব্যবসায়ীরা আশা করেন যে, তাঁরা এই অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবেন৷ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বেকার নারীদের কাছে যেতে পারবেন৷ লালে সারাল জোর দিয়ে বলেন, মেয়েদের কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগাতে হলে নারী পুরুষের সমানাধিকারের ক্ষেত্রে আরো অনেক কিছু করতে হবে৷ নারী কর্মীরা একটি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখতে পারেন৷ কেননা সমস্যার সমাধানে পুরুষদের তুলনায় মেয়েরা ভিন্নভাবে এগিয়ে যান৷

নারী উন্নয়নে স্নোড্রপস নামের একটি প্রকল্পের উল্লেখ করা যায়৷ এটির সঙ্গে লালে সারালও যুক্ত৷ ২০০০ সাল থেকে প্রকল্পটির পক্ষ থেকে দরিদ্র পরিবারের ৯৫০০০ মেয়েকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে৷ এই সাহায্য ছাড়া এইসব মেয়ের স্কুলে পড়া সম্ভব হোত না৷

‘নারী শক্তি এবং অর্থনীতি' নামে আরেকটি প্রকল্পও নারীদের বিকাশে সাফল্য দেখিয়েছে৷ আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বল নারী ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ দিচ্ছে সংস্থাটি৷ ৫৫০০০ ব্যবসায়ী এই সুবিধা পাচ্ছেন৷ সামনের চার বছরে এই ঋণ পাবেন আরো এক লাখ নারী ব্যবসায়ী৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ