তুরস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার পক্ষে অধিকাংশ জার্মান
৩০ অক্টোবর ২০১৯
সিরিয়ায় কুর্দিদের উপর সামরিক অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক৷ এ কারণে দেশটির বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন অধিকাংশ জার্মান৷
বিজ্ঞাপন
জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ ২৫ থেকে ২৮ অক্টোবর দুই হাজার প্রাপ্তবয়স্ক জার্মান নাগরিকের উপর জরিপ করেছে৷ এতে ৬১ শতাংশ উত্তরদাতা তুরস্কের বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার পক্ষে তাঁদের মত জানিয়েছেন৷
এছাড়া ৬৯ শতাংশ উত্তরদাতা তুরস্কের কাছে জার্মানির অস্ত্র বিক্রির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন৷
সিরিয়ায় অভিযান শুরুর পর তুরস্কের কাছে অস্ত্র বিক্রি কমিয়ে দিয়েছে জার্মানি৷ যদিও চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল অস্ত্র বিক্রি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছিলেন৷
এদিকে, জরিপে অংশ নেয়া ৫৮ শতাংশ উত্তরদাতা তুরস্ককে ন্যাটো থেকে বের করে দেয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷
বাম দলের অনেক রাজনীতিবিদও একই সমর্থন জানান৷
আক্রমণের পর যা করছেন সিরীয়রা
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্কের সামরিক অভিযানে দেশটির বহু সামরিক-বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে৷ মুত্যু আতঙ্কে তুরস্কের নিকটবর্তী অঞ্চলগুলো থেকে সরে গেছেন বেশিরভাগ মানুষ৷
ছবি: Karlos Zurutuza
নিরাপত্তার খোঁজ
গত ৯ অক্টোবর কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে তুরস্কের সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রায় দুই লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ অনেক কুর্দি ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলে আশ্রয় নিতে সীমান্ত অতিক্রমনেরও চেষ্টা করেন৷
ছবি: Karlos Zurutuza
শুধু পুরুষ
তুরস্কের সামরিক অভিযান শুরুর পর সিরিয়ার উত্তর-পূর্বের অনেক গ্রাম প্রায় খালি হয়ে গেছে৷ তুরস্কের নিকটবর্তী শহরগুলো ছেড়ে নারী ও শিশুরা ভেতরের দিকে চলে গেছেন৷ ফলে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে হাতেগোনা কিছু পুরুষের বসবাস৷
ছবি: Karlos Zurutuza
সবই ফাঁকা
আমুদার বাজারটি একসময় বেশ সরগরম থাকলেই এখন সেখানে মানুষেরই দেখা পাওয়া যায় না৷ তুরস্কের আক্রমণ শুরুর পর থেকেই অনেকগুলো দোকান বন্ধ হয়ে গেছে৷ সিরিয়ার মুদ্রার পতনের কারণে অনেক দোকানে সাশ্রয়ী অফারে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে৷
ছবি: Karlos Zurutuza
শহরে ফিরে এসো
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকেই দেশটির উত্তর-পূর্বের প্রধান শহর কামিশলি উত্তেজনাপূর্ণ ছিল৷ সার্বিক পরিস্থিতিতে এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে কে থাকবেন তা এখনো স্পষ্ট নয়৷
ছবি: Karlos Zurutuza
লড়াই
তুর্কি সেনাবাহিনী এবং আঙ্কারা সমর্থিত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কুর্দির যুদ্ধবিরোধী ইউনিট লড়াই করছে৷ তবে আসাদের সমর্থন পাওয়ার পর কুর্দি যোদ্ধাদের অবস্থা কী হবে তা এখনও পরিষ্কার নয়৷
ছবি: Karlos Zurutuza
অনিশ্চয়তা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিরিয়ার উত্তর পূর্বাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করায় সিরিয়ান কুর্দিরা একে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখেছন৷ এরকমই একজন মাসুদ বলেন, আমরা জানি ট্রাম্প আমাদের সাথে কী করেছিলেন, তবে পুতিনের উদ্দেশ্য সম্পর্কেও আমরা কিছুই জানি না৷
ছবি: Karlos Zurutuza
মন্তব্য নয়
আসাদের অধীনে কয়েক দশকের নৃশংস নির্যাতনের পর ডেরিকের অনেক বাসিন্দা বেশ কয়েক বছর ধরে কার্যত স্ব-শাসন উপভোগ করলেও এই অঞ্চলের সম্ভাব্য শাসনভার নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না৷
ছবি: Karlos Zurutuza
আরো মৃত্যু
সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিহতদের লাশ নিয়ে আসতে হচ্ছে৷ কারণ তুরস্ক সামরিক ও বেসামরিক উভয় লক্ষ্যেই বিমান হামলা চালিয়েছে৷
ছবি: Karlos Zurutuza
মৃত্যু উপত্যকা
সিরিয়ান কুর্দিরা দাবি করেছেন, তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রায় ১১ হাজার লোককে হারিয়েছেন তারা৷ আইএস উল্লেখযোগ্য অঞ্চলগুলোতে নিয়ন্ত্রণ হারালেও এখনো হত্যা বন্ধ হয়নি৷ তুরস্ক সিরিয়ার উত্তর-পূর্বে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে কয়েক ডজন বেসামরিক এবং শত শত যোদ্ধা নিহত হয়েছেন৷
ছবি: Karlos Zurutuza
কুর্দিরা একা
২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর সিরিয়ার কুর্দিরা সরকার বা বিরোধী দলের পক্ষে যাওয়ার পক্ষে ছিল না৷ এখন অ্যামেরিকা সৈন্য প্রত্যাহার করার পর তারা একা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছে, তবে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তাদের পেছনে কেউ নেই৷
ছবি: Karlos Zurutuza
10 ছবি1 | 10
তবে জার্মানির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল ‘টাগেসস্পিগেল' দৈনিককে বলেছেন, ন্যাটো থেকে তুরস্ককে বহিস্কার করলে ‘ইইউর পূর্ব সীমান্তে নতুন করে নিরাপত্তা ঝুঁকি' তৈরি হতে পারে৷
ইউরোপ ও উত্তর অ্যামেরিকার ২৯টি দেশ নিয়ে ন্যাটো গঠিত৷ জোটের দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় সেনাবাহিনীটি তুরস্কের৷
জার্মানদের তুর্কি ভাবনা
তুরস্কের বাইরে সবচেয়ে বেশি তুর্কির বাস জার্মানিতে৷ এদের সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অতিথি শ্রমিক হিসেবে তুর্কিরা জার্মানিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন৷
সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানিতে অভিবাসন ও মুসলিমবিরোধী এএফডি দলের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় তুর্কিদের প্রতি জার্মানদের বিদ্বেষ বাড়ছে বলে বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে৷