আগামী শনিবার তুরস্কে আফগান শান্তি আলোচনা শুরুর কথা ছিল। তা স্থগিত রাখা হয়েছে। তালেবান নিয়ে সংশয়ে অ্যামেরিকা।
বিজ্ঞাপন
আফগানিস্তানের শান্তি আলোচনায় আবার বাধা। আগামী শনিবার তুরস্কে আফগান সরকার ও তালেবানের প্রতিনিধিদের বৈঠকে বসার কথা ছিল। ওই আলোচনা হচ্ছিল জাতিসংঘ ও তুরস্কের উদ্যোগে এবং তা সমর্থন করছিল অ্যামেরিকা। তুরস্কের বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, আলোচনা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসের পর তা হতে পারে।
আর সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তালেবান অংশ নিচ্ছিল না বলে আলোচনা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।
তালেবানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে অ্যামেরিকা। মার্কিন জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি হাউস কমিটিকে বলেছেন, ''তালেবানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত তালেবান কী করে। যদি তারা আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চায়, তাহলে তাদের চুক্তি মেনে চলতে হবে।''
তিনি জানিয়েছেন, ''আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর প্রতিবেশী কোনো দেশে গোয়েন্দা রাখার বিকল্প ভাবনা অ্যামেরিকা খতিয়ে দেখছে। তাহলে সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের উপর নজর রাখা যাবে এবং কোনো বিপদ এলে তার দ্রুত মোকাবিলা করা যাবে।''
মার্কিন জেনারেল বলেছেন, তারা ওই অঞ্চলে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়ে যাবেন। তালেবানের কাজকর্মের উপরেও নজর রাখা হবে। তাদের চাপেও রাখা হবে।
আফগানিস্তান যুদ্ধের যত ক্ষয়ক্ষতি
আফগানিস্তান থেকে দেশে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে মার্কিন সেনাদের৷ দেড় যুগেরও বেশি আগে শুরু হওয়া এই যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: Hoshang Hashimi/AP Photo/picture alliance
আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে গবেষণা
আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি৷ গবেষণায় নিহতের সংখ্যা, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয়ের পরিমাণসহ নানা দিক বেরিয়ে এসেছে৷ এ যুদ্ধে পাকিস্তানের কেমন ক্ষতি হয়েছে উঠে এসেছে সেই তথ্যও৷
ছবি: DW/S. Tanha
নিহতের সংখ্যা
২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে দুই লক্ষ ৪১ হাজার মানুষ মারা গেছেন৷
ছবি: picture-alliance/ASSOCIATED PRESS/R. Gul
আছে বেসামরিক লোকও
এই দুই দশকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ৭১ হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন৷ তাছাড়া দুই হাজার চারশ ৪২ জন মার্কিন সেনা, প্রতিরক্ষা দপ্তরের ছয়জন বেসামরিক লোক, তিন হাজার নয়শ ৩৬ জন মার্কিন ঠিকাদার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র জোটের এক হাজার একশ ৪৪ জন সেনা মারা গেছেন৷ যুদ্ধে ৬৬ হাজার থেকে ৬৯ হাজার আফগান সেনা ও পুলিশ মারা গেছে, পাকিস্তানের সেনা মারা গেছে ৯,৩১৪ জন৷
ছবি: picture alliance/dpa/J. Jalali
আছে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীও
গবেষণা পত্রটি বলছে, এ সময়ের মধ্যে ১৩৬ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী এবং ৫৪৯ জন মানবাধিকারকর্মী মারা গেছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/Shah Marai
সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে
গবেষণায় সরাসরি যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে৷ কিন্তু যুদ্ধ চলাকালীন রোগবালাই, খাবার কিংবা পানির সংকটেও আরো অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Habibi
ব্যয়ের পরিমাণ
যুদ্ধ চলাকালীন এ বিশ বছরে মার্কিন যুত্তরাষ্ট্রকে গুণতে হয়েছে দুই দশমিক দুই ছয় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার৷
ছবি: Imago Images/Zuma/A. Dinner
সৈন্য ফেরত নেওয়ার ঘোষণা
গত বুধবার আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ ১ মে থেকে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করার কথা বলেন তিনি৷ এদিকে, বাইডেনের ঘোষণার পর ন্যাটো বাহিনীও তার সদস্যদের ফিরিয়ে আনার কথা জানায়৷
ছবি: Andrew Harnik/AFP/Getty Images
7 ছবি1 | 7
আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা গিয়েছিল ২০০১ সালে। তারপর টানা ২০ বছর তারা সেখানে আছে। মার্কিন ইতিহাসে আফগানিস্তানের সংঘাত হলো সেদেশের দীর্ঘতম যুদ্ধের কাহিনি।
অ্যামেরিকার আফগানিস্তান অভিযানের পর পাঁচ বছরের তালেবান শাসনের অবসান হয়েছিল। বাইডেন এখন সেনা প্রত্যাহারের কথা বলায় প্রশ্ন উঠেছে, আফগানিস্তানে কি আবার গৃহযুদ্ধ শুরু হবে? আবার কি সেখানে আল কায়দা, আইএসের মতো সংগঠনের প্রভাব বাড়বে?
ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, এই গোষ্ঠীগুলির উদ্দেশ্যই হলো অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানো। তারা সেই উদ্দেশ্য থেকে সরে আসেনি।