ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে গাজায় অন্তত ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন৷ মঙ্গলবার সেখানে বড় কিছু না ঘটলেও জমে উঠেছে এর্দোয়ান-নেতানিয়াহুর কথার লড়াই৷ দূত প্রত্যাহার আর পালটা প্রত্যাহারও চলছে তুরস্ক আর ইসরায়েলের মধ্যে৷
বিজ্ঞাপন
ঘটা করেই যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের উদ্বোধন হলো জেরুসালেমে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেল আভিভ থেকে জেরুসালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফিলিস্তিন এবং বিশ্বের নানা স্থানের মুসলিম দেশগুলোতে শুরু হয় প্রতিবাদ৷ যুক্তরাষ্ট্র তবু সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেনি৷ গত ১৩ মে, অর্থাৎ জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের আগের দিন থেকেই গাজায় শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ৷ বিক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালায়৷ ১৪ জুনও চলে গুলিবর্ষণ৷ দু'দিনে অন্তত ৬০ জন ফিলিস্তিনি মারা যায়, আহত হয় প্রায় ২৫০০ জন৷
জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর এবং এই স্থানান্তরের কারণে বিক্ষুদ্ধ ফিলিস্তিনিদের হত্যার প্রতিবাদে আঙ্কারা থেকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় তুরস্ক৷ জবাবে ইসরায়েলও তেল আভিভ থেকে তুর্কি দূতকে ফিরে যেতে বলে৷
দূত প্রত্যাহারের মাঝেই থেমে নেই দু' দেশের দ্বন্দ্ব৷ ইসরায়েলের এক সময়ের ‘বন্ধুপ্রতিম' দেশ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি টুইটারে
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তোপ দাগান৷ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নিষ্ঠুর আচরণের জন্য নেতানিয়াহুকে ‘বর্ণবাদী দেশের নেতা' হিসেবে অভিহিত করেন৷ নেতানিয়াহুও চুপ থাকেননি৷ নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেন, ‘‘হামাসের সবচেয়ে বড় সমর্থকদের একজন এর্দোয়ান৷ সুতরাং তিনি যে সন্ত্রাস এবং হত্যার বিষয়টি ভালো বুঝবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷ তার প্রতি পরামর্শ – তিনি যেন আমাদের নৈতিকতা শেখাতে না আসেন৷''
এর্দোয়ানের জবাবও আসে খুব তাড়াতাড়ি৷ হামাস এবং তাঁকে নেতানিয়াহু প্রকারান্তরে সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়ায় ক্ষুব্ধ তুর্কি প্রেসিডেন্ট দাবি করেন হামাস কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয়৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘হামাস সন্ত্রাসী সংগঠন নয় এবং ফিলিস্তিনিরা সন্ত্রাসী নয়৷ এটা দখলদারি শক্তির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের জন্মভূমি রক্ষার প্রতিরোধ আন্দোলন৷''
একদিকে মৃত্যুর মিছিল, অন্যদিকে সাড়ম্বরে দূতাবাস উদ্বোধন
জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের দিনটি মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে আরেকটি কালো দিন হয়ে থাকলো৷ এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে গাজা-ইসরায়েল সীমান্তে এ পর্যন্ত ৫৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন৷ আহত প্রায় ২৫০০৷
ছবি: Reuters/M. Salem
বিক্ষোভ ও গণজমায়েত
‘গ্রেট মার্চ অফ রিটার্ন’ আন্দোলনের অংশ হিসাবে গাজার শাসনক্ষমতায় থাকা হামাসের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনিরা গত ছয় সপ্তাহ ধরে সীমান্তে বিক্ষোভ করে আসছে৷ সোমবার ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি ১৩টি স্থানে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল৷
ছবি: Reuters/M. Salem
ইসরায়েলের পদক্ষেপ
বরাবরের মতোই ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গুলি চালায়৷ বিক্ষোভরত নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের সাথে শুরু হয় অসম লড়াই৷
ছবি: Reuters/I. Abu Mustafa
ধোঁয়া এবং সংঘর্ষ
দিনভর চলে লড়াই৷ ইন্তিফাদার ইতিহাসের রক্তাক্ত দিনটিতে ৫৮ জন প্রাণ হারান৷ আহত হন শত শত৷ নারীরা অংশ নিতে থাকেন জাতীয় মুক্তি ও ভূমি অধিকারের এ লড়াইয়ে৷
ছবি: Reuters/I. Abu Mustafa
মৃতের তালিকায় শিশু ও প্রতিবন্ধী
দূতাবাস উদ্বোধনের আগ দিয়ে গাজা সীমান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ফিলিস্তিনিরা৷ সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সী ৬ শিশু আছে এবং হুইলচেয়ারে চলাফেরা করা এক ব্যক্তিও আছেন৷
ছবি: picture-alliance/Zumapress/M. Issa
বিদায়
চোখের জলে সহযোদ্ধারা বিদায় দিচ্ছেন নিহত এক ফিলিস্তিনিকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Khatib
স্বজনহারা
ছবিটি গাজা উপত্যকার এক ফিলিস্তিনির দাফনের সময় তোলা৷ ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত ওই ফিলিস্তিনির নাম মাহমুদ আবু তাইমা৷ স্বজনরা মুষড়ে পরেছেন তাইমার মৃত্যুতে৷
ছবি: picture alliance/Xinhua/K. Omar
শুভ উদ্বোধন!
একদিকে চলছে রক্তপাত অন্যদিকে জেরুসালেমে সাজসাজ রবে উদ্বোধন হচ্ছে অ্যামেরিকার দূতাবাস৷
মোটর সাইকেল শোভাযাত্রাও ছিল জেরুজালেমে অ্যামেরিকার দূতাবাস উদ্বোধনের দিন৷
ছবি: Reuters/A. Awad
দূতাবাসে ট্রাম্পকন্যা
অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইসরায়েলে যান অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা ও তাঁর স্বামী জারেড কুশনার৷ দু’জনই হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা৷