তুরস্কে ও গ্রিসে শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে৷ আহত কয়েকশ৷ উদ্ধারকাজ এখনও চলছে৷
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার বিকেলে গ্রিস ও আনাতোলিয়া উপদ্বীপ সংলগ্ন এজিয়ান সাগরে সৃষ্ট ভূমিকম্প তুরস্কের ইজমির শহর ও গ্রিসের সামোস দ্বীপে আঘাত হানে৷ ছয় দশমিক নয় মাত্রার এ ভূমিকম্পে ইজমির শহরের অন্তত ১৭টি ভবন ধসে পড়ে৷
তুরস্কের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ইজমিরে চল্লিশ লাখের বেশি লোক বাস করেন৷
রাতভর উদ্ধারকাজ শেষে ২৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে উদ্ধারকর্মীরা৷ শতাধিক বাসিন্দাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তুরস্কের পরিবেশ ও নগর পরিকল্পনামন্ত্রী মুরাত কুরুম৷
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, ভূমিকম্পের ফলে শহরটির ভেঙ্গে পড়া ভবনের অংশ ও আসবাবপত্র পানিতে ভাসছে৷ কর্তৃপক্ষ জানায়, ভূমকম্পের ফলে সাগরে সৃষ্ট ছোট আকারের সুনামির কারণে শহরের কিছু অংশ পানিতে তলিয়ে যায়৷
উদ্ধার কাজে প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী মোতায়েন করেছে কর্তৃপক্ষ৷ মোতায়েন করা হয়েছে জরুরি খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা দলও৷
ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে প্রায় তিনশ' আফটারশক হয়েছে বলে জানিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ৷ ফলে আতঙ্ক বিরাজ করছে বাসিন্দাদের মধ্যে৷
এদিকে ভূমিকম্পের আঘাতে গ্রিসের সামোস দ্বীপে ভবন ধসে দু'জন নিহত হয়েছেন ও ১৯ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে৷ এ দ্বীপটিতে প্রায় ৪৫ হাজার লোক বাস করেন৷
আরআর/এফএস (এপি, রয়টার্স)
২১ শতকের ভয়াবহ সব সুনামি
গত পরশু সুনামি আঘাত হেনেছে ইন্দোনেশিয়ায়৷ গত ১৮ বছরে ৮-১০টি ভয়াবহ সুনামি আঘাত হেনেছে গোটা বিশ্বে৷ অগণিত মৃত্যুর সঙ্গে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও ছিল মারাত্মক৷
ছবি: Reuters/Antara Foto/Bisnis Indonesia
ইন্দোনেশিয়ায় সুনামি
গত ২২ ডিসেম্বর ভয়াবহ সুনামি আঘাত হানে ইন্দোনেশিয়ায়৷ জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপের নিকটবর্তী আনাক ক্রাকাতাও নামক আগ্নেয়গিরিতে উদগীরণের ফলে এই সুনামির সৃষ্টি হয়৷ এতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৮০ জন মারা গেছে এবং আট শতাধিক আহত হয়েছে৷
আনাক ক্রাকাতাও একটি ছোট আগ্নেয়গিরি দ্বীপ৷ ১৮৮৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় আগ্নেয়গিরি ক্রাকাতোয়ার উদগীরণের ফলে এই আগ্নেয়দ্বীপের সৃষ্টি হয়৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/D. Roszandi
নিউজিল্যান্ড ২০১৬
২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ডে স্থানীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সুনামি আঘাত হানে৷ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার পরে নিউজিল্যান্ডে এটি ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সুনামি৷ কায়কোরা ভূমিকম্পে ২০ হাজার আফটারশক হয়েছিল৷ এবং ২২ মিটার উঁচু সুনামি আঘাত হানে৷ আগাম সতর্কতা থাকায় হতাহতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ছিল৷ মাত্র দু’জন নিহত ও ২০জন আহত হয় সেই সুনামিতে৷
ছবি: Imago/Xinhua/L. Huizi
বিধ্বস্ত জাপান
২০১১ সালে জাপানের সুনামি ছিল ইতিহাসের ভয়াবহতম সুনামিগুলোর একটি৷ সমুদ্রের গভীরে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের ফলে ১৩৩ ফুট উঁচু এই সুনামির সৃষ্টি হয়৷ এতে ১৬ হাজার লোক নিহত হয়, আহত হয় অগণিত৷ এই সুনামিতেই ফুকোশিমা পারমাণবিক বিপর্যয় ঘটে৷ চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্যোগের পর এটিই ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দুর্যোগ৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Tomizawa
চিলির দু্র্যোগ
চিলি এমনিতেই ভূমিকম্পপ্রবণ৷ ১৯৬০ সালের ভূমিকম্পটি এখনো সর্বোচ্চমাত্রার রেকর্ড ধরে রেখেছে৷ ২০১০ সালে চিলিতে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে উপকূল অঞ্চলে মারাত্মক সুনামি আঘাত হানে৷ সেই সময় জাপান ও রাশিয়ার সমুদ্র উপকূলে সুনামি সতর্কতা দেওয়া হয়৷ সেই সুনামিতে চিলির উপকূলীয় এলাকার ৫২৫ অধিবাসীর প্রাণহানি ঘটে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Hernandez
সলোমন আইল্যন্ড ২০০৭
পাপুয়া নিউগিনির সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপ সলোমন আইল্যন্ডে ২০০৭ সালে আঘাত হানে ৪০ ফুট উঁচু সুনামি৷ ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট এই সুনামিতে ৫২ জন নিহত হন এবং দ্বীপটির সহস্রাধিক বসতবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল বিধ্বস্ত হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Robichon
ভারত মহাসাগরে তৃ্তীয় সর্বোচ্চ সুনামি
২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে হওয়া ভূমিকম্পটি ছিল ইতিহাসের তৃ্তীয় সর্বোচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প৷ ৯ দশমিক ৯ মাত্রার সেই ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামি ভারত মহাসাগর সংলগ্ন ১৪টি দেশে আঘাত হানে৷ সেই সুনামিতে নিহত হয় ১৪ দেশের ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ৷ ছবিটি থাইল্যন্ডের সমুদ্র সৈকতে সুনামি আঘাত হানার পরের৷