তুরস্ক, সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৩,৫০০ ছাড়িয়েছে
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
সোমবার ভোরে সিরিয়া ও তুরস্কে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ এতে এখন পর্যন্ত তুরস্কে ২,৩৭৯ জন ও সিরিয়ায় ১৪০০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
ভূমিকম্পের পর উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে তুরস্ক৷ আবেদনে সাড়া দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১৭টি দেশের ২০টি উদ্ধার দল দেশটির উদ্দেশে যাত্রা করে৷ পরবর্তীতে জরুরি চিকিৎসক দল পাঠানোর কথাও ভাবছেন ইইউ কর্মকর্তারা৷
ভূমিকম্পের পর উদ্ধার তৎপরতা চলার মধ্যেই আরও কয়েকবার কম্পন অনুভূত হয়৷ এর মধ্যে একটির মাত্রা ছিল ৭.৫৷
রাত পর্যন্ত তুরস্ক কর্তৃপক্ষ দুই হাজার ৭৩৯ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে৷ আহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৪৮৩ জন৷
অন্যদিকে সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ৭১১ জন মারা যাওয়ার তথ্য জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ আর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশে ৭০০ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে দ্য হোয়াইট হ্যালমেটস স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন৷
ভূমিকম্পের এপিসেন্টার বা ভূকম্পন বিন্দু ছিল তুরস্কের গাজিয়ানটেপ৷ স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪.১৭ মিনিটে ভূমিকম্প শুরু হয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে৷
‘‘৪০ বছর ধরে এখানে বাস করছি৷ আজকের মতো এমন অনুভূতি কখনো হয়নি,’’ বলে জানান গাজিয়ানটেপের বাসিন্দা এরদেম৷ কমপক্ষে তিনবার খুব ভালোভাবে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বলেও জানান তিনি৷
এর আগে ১৯৩৯ সালে তুরস্কে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল৷ সেই সময় ৩৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ এছাড়া ১৯৯৯ সালে ৭.৪ মাত্রার আরেক ভূমিকম্পে প্রায় ১৭ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন৷
সিরিয়ায় ১৯৯৫ সালে জাতীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র তৈরি হওয়ার পর এটিই সে দেশে আঘাত করা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প বলে জানিয়েছেন ঐ কেন্দ্রের প্রধান রায়েদ আহমেদ৷
দুর্গত এলাকায় ভবন ধসে পড়েছে৷ উদ্ধার তৎপরতা চলছে৷
লেবানন ও সাইপ্রাসেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানা গেছে৷
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন তুরস্ক ও সিরিয়ার প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন৷ এছাড়া সহায়তা করতে ইতিমধ্যে ইইউর দল রওয়ানা হয়েছে বলেও জানান তিনি৷
নিহতদের আত্মীয়স্বজনের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷ দুর্গত এলাকায় জার্মানি অবশ্যই সহায়তা পাঠাবে বলেও জানান তিনি৷
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন সিরিয়া ও তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে বার্তা পাঠিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন৷ রাশিয়া থেকে উদ্ধারকর্মীরা ঐ দুই দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন৷
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তুরস্ককে ‘প্রয়োজনীয় সহায়তা’ দিতে চেয়েছেন৷ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তুরস্কের তৈরি ড্রোন ইউক্রেনকে সহায়তা করছে৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)
এই শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ সব ভূমিকম্প
সোমবার ভোরে সিরিয়া ও তুরস্কে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২,৩০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷ ছবিঘরে এই শতাব্দীতে বিশ্বে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সব ভূমিকম্পের তথ্য থাকছে৷
ছবি: AP
৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, সিরিয়া ও তুরস্ক
সোমবার ভোরে সিরিয়া ও তুরস্কে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ এতে এখন পর্যন্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় ২,৩০০-র বেশি মানুষ মারা গেছেন৷
ছবি: Ghaith Alsayed/AP Photo/picture alliance
১৪ আগস্ট, ২০২১, হাইতি
হাইতির দক্ষিণাঞ্চলে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানলে ২,২০০র বেশি মানুষ প্রাণ হারান৷ প্রায় ১৩ হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷
ছবি: Reginald Louissant Jr/AFP/ Getty Images
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসিতে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের কারণে প্রায় দেড় মিটার উঁচু সুনামি হয়েছিল৷ প্রাণ হারান চার হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ৷
ছবি: Getty Images/C. Court
১ নভেম্বর, ২০১৭, ইরান
পূর্বাঞ্চলীয় কেয়ারমানশাহ রাজ্যে ৭.৩ মাত্রা ভূমিকম্পে চারশর বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Pakizeh
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, মেক্সিকো
মধ্য মেক্সিকোতে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৩৬৯ জন প্রাণ হারান৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/G.M. Contreras
২৪ আগস্ট, ২০১৬, ইটালি
রোমের পূর্বে পাহাড়ি এলাকায় ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৩০০ জন নিহত হয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/M.Cavallari
১৬ এপ্রিল, ২০১৬, ইকুয়েডর
দেশটির প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলীয় এলাকায় ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে সাড়ে ছয়শর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন৷
ছবি: Imago/Zumapress
২৬ অক্টোবর, ২০১৫, পাকিস্তান-আফগানিস্তান
৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে দুই দেশ মিলিয়ে প্রায় চারশ জন প্রাণ হারান৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Shah
২৫ এপ্রিল, ২০১৫, কাটমান্ডু, নেপাল
৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প প্রায় নয় হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়৷ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কাটমান্ডু থেকে ৮০ কিলোমিটার পশ্চিমে৷
ছবি: Reuters/N. Chitrakar
১১ মার্চ, ২০১১, ফুকুশিমা, জাপান
৯ মাত্রার ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামি ও তারপর পারমাণবিক কেন্দ্রে বিপর্যয়ের ঘটনায় প্রায় ২১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়৷
ছবি: picture alliance/dpa
১২ ডিসেম্বর, ২০১০, পোর্ট অফ প্রিন্স, হাইতি
৭.৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ এতে কমপক্ষে তিন লক্ষ ২০ হাজার মানুষ নিহত হয়৷ আহত হয় প্রায় তিন লক্ষ মানুষ৷ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল হাইতির রাজধানী পোর্ট অফ প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে৷
ছবি: AP
১২ মে, ২০০৮, সিচুয়ান, চীন
৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানলে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ মারা যায়৷ এতে ৫০ লক্ষেরও বেশি ভবন ধসে পড়ে৷ নিহতদের বেশিরভাগই ধসে যাওয়া ভবনের নীচে পড়ে প্রাণ হারায়৷
ছবি: AFP/Getty Images
২৬ মে, ২০০৬, ইয়োগিয়াকার্টা, ইন্দোনেশিয়া
২০০৬ সালের ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৫,৮০০ মানুষের প্রাণ যায়৷ আহত হয় প্রায় ৩৬ হাজার৷
ছবি: AP
৮ অক্টোবর, ২০০৫, কাশ্মীর, পাকিস্তান
৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৭৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়৷ এছাড়া ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে প্রায় ১,৩০০ জন এবং আফগানিস্তানেও বেশ কয়েকজন নিহত হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images/E. Feferberg
২৬ ডিসেম্বর,২০০৪, আচে, ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে সমুদ্রগর্ভে সংঘটিত ৯.১ মাত্রার ভূমিকম্প যে সুনামির অবতারণা ঘটায়, তাতে ১৪ দেশের প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়৷
ছবি: AFP/Getty Images/Choo Youn Kong
২৬ ডিসেম্বর, ২০০৩, বাম, ইরান
৬.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন৷ আহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০ হাজার৷
ছবি: AP
২৬ জানুয়ারি, ২০০১, গুজরাট, ভারত
গুজরাটে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণ হারায় ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ৷