ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি তুরস্কের উপর এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে যে, সে দেশের সরকারের নানা বিতর্কিত পদক্ষেপ সত্ত্বেও তুরস্কের নাগরিকদের ভিসা ছাড়াই ইউরোপে প্রবেশের সুযোগ করে দিতে চলেছে?
বিজ্ঞাপন
সিরিয়ার সংকটের ফলে ইউরোপে শরণার্থীদের যে ঢল নেমেছিল, তা সামাল দিতে নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছিলেন ইইউ নেতারা৷ শেষ পর্যন্ত তুরস্কের সঙ্গে এক চুক্তির মাধ্যমে শরণার্থীদের ইউরোপে সীমান্তেই আটকে দেবার ব্যবস্থা করা সম্ভব হলো৷ বিশাল আর্থিক অঙ্কের বিনিমিয়ে অর্জিত এই চুক্তির সমালোচকের অভাব নেই৷ তবে শুধু অর্থ নয়, শরণার্থীদের ঢল সামলানোর দায়িত্বের বদলে তুরস্ক ইউরোপের কাছ থেকে আরও অনেক সুবিধা আদায় করার জোরালো উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে৷ এই বোঝাপড়ার আওতায় ইউরোপে সংক্ষিপ্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে তুরস্কের নাগরিকদের ভিসার আর প্রয়োজন হবে না৷ তুরস্ক কয়েকটি শর্ত পূরণ করলে চলতি বছরই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে যাবে৷
তুরস্কও এই সব শর্ত পূরণে যথেষ্ট উদ্যোগ দেখাচ্ছে বলে দাবি করছে৷
প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের সঙ্গে মতপার্থক্যের জের ধরে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আহমেত দাভুতোগলু সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই অভিযোগ আরও জোরালো হয়ে উঠেছে৷
তুরস্কের ইজমিরে বসবাসরকারী সিরিয় শরণার্থীর সংখ্যা ৮৫ হাজারের মতো৷ তাদের সেখানে স্থির হতে সহায়তা করেছে কয়েকটি দাতা গোষ্ঠী এবং স্বেচ্ছাসেবীরা৷
ছবি: DW/D. Cupolo
শরণার্থীদের দোকান, রেস্তোরাঁ
ইজমিরের বাসমানি জেলা মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের এলাকা হিসেবে পরিচিত৷ সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে শরণার্থীদের দোকান-পাটের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে৷ অনেক সিরীয় এখানে বসবাস করেন৷ এদের অনেকে আবার তুর্কী বন্ধুদের নামে দোকান খোলেন, জানান রিলিফ সোসাইটির এক সদস্য৷
ছবি: DW/D. Cupolo
বেকার এবং অবহেলিত
শরণার্থীদের জন্য নিত্যদিনের বিল পরিশোধ অনেক সমস্যার মধ্যে একটি সমস্যা৷ তারা তাদের বেকার জীবনের অধিকাংশ সময় কাটান ক্যাফেতে বসে৷ অনেকেই সাধারণ স্বাস্থ্য সেবাও পান না৷ জার্মান মেডিক্যাল শিক্ষার্থী লিয়া ভিল্মসেন সেখানে অনেক শরণার্থীকে বিনা খরচায় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন৷
ছবি: DW/D. Cupolo
দোভাষীর সহায়তা
দোভাষীর সহায়তায় শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন ভিল্মসেন৷ তাদের বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা করেন তিনি৷ ছবির শিশুটির শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ ভিল্মসেন মনে করেন, দু’টি ছোট্ট রুমে ১৪ জন মানুষ বসবাস করছেন৷ ফলে এই সমস্যা৷
ছবি: DW/D. Cupolo
পথশিশুরা
লাইফ জ্যাকেটের দোকানের পাশে খেলছে এক শিশু৷ ইজমিরে থাকা অধিকাংশ শরণার্থী শিশু কিশোর নিয়মিত স্কুলে যায় না৷ তারা বরং বাড়িভাড়া জোটাতে ছোটখাট কাজ করে৷
ছবি: DW/D. Cupolo
শরণার্থী শিবির তৈরি
শরণার্থীদের জন্য কমিউনিটি সেন্টার তৈরির লক্ষ্যে একটি পরিত্যাক্ত ভবন সংস্কার করছেন ইউনিয়ন আয়োজক ইয়ালচিন ইয়ানিক৷ তিনি বলনে, ‘‘আমি শরণার্থীদের সেভাবে সহায়তা করছি, যেভাবে একসময় শ্রমিকদের সহায়তা করতাম৷’’
ছবি: DW/D. Cupolo
নির্ভরশীল করা নয়
আরেক স্বেচ্ছাসেবী ক্রিস ডাউলিং জানান, শরণার্থীদের এমনভাবে সাহায্য করা হয় যাতে তারা সাহায্যের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে না যান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের সমাজের সঙ্গে একীভূত করা, তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা এবং কাজে পেতে কিংবা নিজের মতো কিছু করতে সাহায্য করা৷’’
ছবি: DW/D. Cupolo
গৃহায়ন সমস্যা
মানবিক সাহায্য সংস্থা মার্সি কর্পস ইউরোপীয় অনুদানে চলে৷ সংস্থাটি সম্প্রতি ইজমিরে কাজ শুরু করেছে৷ মূলত শরণার্থীদের গৃহায়ন সমস্যা সমাধানে কাজ করে তারা৷