মূলত তুর্কিদের তৈরি ওসমানিয়া বক্সিং ক্লাব৷ জার্মানিতে তাদের অনেক শাখা৷ সেখানে নাকি বক্সিংয়ের আড়ালে চলছে অপরাধমূলক কাজকর্ম৷ ক্লাবগুলিতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির বেশ কিছু অঞ্চলে এতদিন তাদের নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে৷ বহু সাধারণ নাগরিকই বক্সিং ক্লাবগুলোর পাশ দিয়ে যাতায়াত করতেন না৷ অভিযোগও জমছিল প্রচুর৷ শেষ পর্যন্ত শুরু হলো পুলিশি অভিযান৷ জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৬০টি বক্সিং ক্লাবে অভিযান চালিয়ে পুলিশ অস্ত্র, মাদক, নিষিদ্ধ কাগজপত্র উদ্ধার করেছে৷ এই ৬০টি ক্লাবই ওসমানিয়া বক্সিং গ্যাংয়ের অংশ৷
২০১৫ সালে জার্মানি জুড়ে ওসমানিয়া বক্সিং গ্যাং তৈরি হয়৷ অভিযোগ, বক্সিং ক্লাব হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করালেও তার পিছনে নানা অপরাধমূলক কাজকর্ম চালায় তুর্কি তরুণরা৷ অভিযোগ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অশ্লীল আচরণ, মাদকপাচার, যৌন ব্যবসায় দালালি ইত্যাদি নানারকম অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে তারা যুক্ত ছিল৷ জার্মানির বেশ কিছু এলাকা নিজেদের দখলে নেওয়ারও চেষ্টা করছিল তারা৷ অভিযোগ, বহু জার্মান নাগরিক ওসমানিয়া গ্যাংয়ের এলাকা দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পেতেন৷ গ্যাংয়ের ৮ সদস্যের বিরুদ্ধে নানারকম অপরাধমূলক কাজের মামলা চলছে স্টুটগার্টে৷
মঙ্গলবার প্রায় এক হাজার জনের একটি টিম নিয়ে ওসমানিয়া গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে জার্মান পুলিশ৷ কোলন থেকে এসেন, সর্বত্র চলে অভিযান৷ বাজেয়াপ্ত করা হয় তাদের কম্পিউটারের হার্ডড্রাইভ৷ প্রতিটি ক্লাব থেকেই প্রচুর নিষিদ্ধ জিনিস উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর৷ পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতেও প্রয়োজনে অভিযান চালানো হবে৷ বস্তুত, ওসমানিয়া বক্সিং গ্যাং মূলত তুর্কি মানুষদের একটি সংগঠন৷ অভিযোগ, ওই গ্যাংয়ের তরফ থেকে জাতীয়তাবাদী এবং উগ্র দক্ষিণপন্থি কথাবার্তা প্রচার করা হতো৷ এরদোয়ান সরকারের সঙ্গেও তাদের যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে৷
জার্মান সরকার জানিয়েছে, জার্মানিতে এ ধরনের ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত হওয়া যাবে না৷ অপরাধমূলক কাজ করলে কড়া শাস্তি পেতে হবে৷
এর্দোয়ানের পক্ষে, বিপক্ষে যারা
ক্ষমতা বাড়ানোর গণভোটে জয়ের পর এর্দোয়ানকে নিয়ে আলোচনা চলছে গোটা বিশ্বেই৷ সংখ্যাগরিষ্ঠ তুর্কি তাঁর ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে রায় দিয়েছেন, তবে বিপক্ষেও আছেন অনেক মানুষ৷ রবিবারের সেই গণভোটের পর বিক্ষোভ হয়েছে ইস্তানবুলে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/E. Gurel
প্রতিবাদ, গ্রেপ্তার
রবিবারের গণভোটের পর থেকে তুরস্কের ইস্তানবুলে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছিলেন রিচেপ তাইয়েপ এর্দোয়ানের ক্ষমতা বাড়ানোর বিপক্ষে থাকা একদল প্রতিবাদকারী৷ শুরুতে পুলিশ তাদের বাধা না দিলেও বুধবারের খবর হচ্ছে, অন্তত ৩৮ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ৷
ছবি: Reuters/K. Aslan
অল্প ব্যবধানে জয়
তুরস্ক সরকারের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, রবিবার ভোট দেওয়া তুর্কিদের মধ্যে ৫১ দশমিক চার শতাংশ ভোটর ‘হ্যাঁ’ ভোট দিয়েছেন৷ এই ভোট সেদেশের প্রেসিডেন্টের হাতে অভূতপূর্ব ক্ষমতা তুলে দেয়ার জন্য যথেষ্ট৷ বিক্ষোভকারীরা অবশ্য মনে করছেন, ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা হয়নি৷ ৬০ শতাংশ ভোট পুর্নগণনার দাবি জানিয়েছেন এর্দোয়ানের বিরোধী পক্ষ৷
ছবি: Reuters/K. Aslan
অভিনব প্রতিবাদ
ইস্তানবুলে প্রতিবাদকারীরা হাড়ি পাতিল হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন৷ তারা সেসব দিয়ে শব্দ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷ কেউ কেউ আবার এর্দোয়ানকে ‘চোর, খুনি’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন৷ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিক্ষোভের খবর ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/E. Gurel
ভিন্নচিত্র
তুরস্কের সামগ্রিক চিত্রটা অবশ্য ভিন্ন৷ এর্দোয়ানের ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষের মানুষরা তুরস্কের বিভিন্ন শহরে আনন্দ মিছিল করেছেন৷ অনেক নারীও তাঁকে ভোট দিয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/E. Gurel
এর্দোয়ানের জনপ্রিয়তায় কমতি নেই
একরোখা আচরণের জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর্দোয়ান এক সমালোচিত চরিত্র হলেও নিজের দেশের জনগণের মধ্যে তাঁর সমর্থন তেমন একটা কমেনি বলেই মনে হচ্ছে৷ গতবছর তাঁর বিরুদ্ধে সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়েছিল কার্যত জনগণ প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের পাশে থাকায়৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/L. Pitarakis
‘ডিক্টেটর’ এর্দোয়ান?
গণভোটে জয়ের পর এর্দোয়ান কি ‘ডিক্টেটরদের’ মতো ব্যবহার শুরু করবেন? এটা সত্য যে, এর ফলে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে৷ তুরস্কের সংবিধানে পরিবর্তন আনার ইচ্ছা বহু আগেই প্রকাশ করেছিলেন তিনি৷ এখন সে পথ পরিষ্কার৷ তবে সিএনএনকে তিনি জানিয়েছেন, গণভোট তাঁকে ‘ডিক্টেটর’ বানাচ্ছে না৷ বরং নতুন ব্যবস্থা তাংর জন্যনয়, তুরস্কের মঙ্গলের জন্যই, বলেন এর্দোয়ান৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/M. Meissner
6 ছবি1 | 6
এসজি/এসিবি (ডিডাব্লিউ)
প্রতিবেদনটি নিয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷