‘ইয়েতি' হলো নোংরা বা কুৎসিত তুষারমানব, যার দেখা পাওয়া যায় হিমালয়ে– এমন গল্প প্রচলিত আছে যুগ যুগ ধরে৷ কিন্তু শতভাগ প্রমাণ মেলেনি৷ ভারতীয় একদল সেনা পর্বতারোহী সম্প্রতি রহস্যজনক বিরাট পায়ের ছাপ দেখেছেন৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার ভারতীয় সেনা কর্তৃপক্ষ দাবি করে, তাদের একদল পর্বতারোহী সম্প্রতি নেপালে হিমালয়ে ওঠার সময় বিরাট রহস্যময় পায়ের ছাপ দেখেছেন৷ তাঁরা মনে করেন, এই পায়ের ছাপ ‘ইয়েতি'র৷
নেপালের লোকগাঁথায় ইয়েতির উল্লেখ পাওয়া যায়৷ কথিত আছে, তুষার ঢাকা হিমালয়ের চূড়ায় তারা থাকে৷ তবে বিজ্ঞানে একে এখনো কল্পগাঁথাই মনে করা হয়৷
ইন্ডিয়ান আর্মির করা টুইটে বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে৷ সেখানে বলা হয়েছে, পায়ের ছাপ ৩২ বাই ১৫ ইঞ্চি (৮১ বাই ৩৮ সেন্টিমিটার)৷ মাউন্ট মাকালুর কাছে একটি ক্যাম্পের অদূরেই গত ৯ এপ্রিল এই পায়ের ছাপ মিলেছে বলে দাবি করেছে তারা৷
‘‘এই প্রথমবার ভারতের সেনাবাহিনীর একটি পর্বতারোহী অভিযান পরিচালনার সময় পৌরাণিক প্রাণী ইয়েতির এই রহস্যময় পায়ের ছাপ মিলেছে,'' টুইটে বলা হয়৷
নেপাল ও চীনের সীমান্তের মাঝে মাকালু পর্বতটি অবস্থিত৷ এটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের একটি৷ এই পর্বতশৃঙ্গের পাশে রয়েছে দুর্গম মাকালু-বারুন উপত্যকা৷ গবেষকরা অনেক আগেই এখানে ইয়েতির খোঁজ করেছেন৷
১৯২০-এর দশকে হিমালয়ের বুনো রোমশ এক প্রাণীর গল্প বেশ জনপ্রিয় হয়ে যায়৷ এতটাই হয় যে, স্যার এডমুন্ড হিলারি পর্যন্ত এই প্রাণীর খোঁজে নামেন৷ ২০০৮ সালে জাপানের একদল পর্বতারোহীও রয়টার্সকে বলেন, তাঁরা ইয়েতির পায়ের ছাপ দেখেছেন৷ তাঁরা ঐ প্রাণীর কোনো ছবি তুলতে পারেননি, যদিও তাঁদের কাছে বড় লেন্স ক্যামেরা ছিল৷
কিন্তু বিজ্ঞানিরা আজ পর্যন্ত ইয়েতির অস্তিত্ব আছে, তেমন কোনো প্রমাণ পাননি৷ ২০১৭ সালে এক দল আন্তর্জাতিক গবেষক হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ‘ইয়েতি' বিষয়ক নমুনা সংগ্রহ করেন এবং এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, এগুলো আসলে ভালুকের ছিল৷
২০০৮ সালে দুই মার্কিনি বলেন, তাঁরা অর্ধেক মানুষ অর্ধেক পশুর অবশেষ পেয়েছেন৷ পরে দেখা যায় সেটি একটি রাবারের গোরিলা পোশাক ছিল৷
জেডএ/এসিবি (রয়টার্স)
হিমালয় কন্যার কান্না
২৫শে এপ্রিল নেপালে ৭.৯ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ বিধ্বস্ত হয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা স্থাপনা ও ঐতিহাসিক স্থান৷
ছবি: Reuters/N. Chitrakar
৬৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
আট দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নেপালের প্রায় ৬৬ লাখ মানুষ কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে কাঠমান্ডুর জাতিসংঘ কার্যালয়৷
ছবি: Reuters/D. Siddiqui
উদ্ধার কাজ
ইট, সিমেন্ট, কাঠের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে হতাহত ব্যক্তিদের বের করে আনছেন উদ্ধারকর্মীরা৷ তবে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হওয়ায় উদ্ধার অভিযানে সময় লাগছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Shrestha
খোলা আকাশের নীচে লাখো মানুষ
ভূমিকম্পের পর থেমে থেমে হচ্ছে পরাঘাত (আফটার শক)৷ তাই আতঙ্ক নিয়ে তাঁবু আর খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাচ্ছেন ভূমিকম্প বিধ্বস্ত নেপালের বাসিন্দারা৷ যাদের ঘর বিধ্বস্ত হয়নি, তাঁরাও ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন৷ শনিবারের ওই ভূমিকম্পের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে৷
ছবি: imago/Xinhua
বেসক্যাম্পে উদ্ধার কাজ
ভূমিকম্পের প্রভাবে তুষার ধসের ফলে মাউন্ট এভারেস্টের বেসক্যাম্পের কিছু অংশ বরফের নীচে চাপা পড়ে৷ এতে মারা গেছেন ১৮ জন৷ মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ চলছে৷
প্রাথমিক সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ ডলার দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএসএইড৷ জার্মানির একটি ত্রাণ দল এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে৷ ভারত বেশ কিছু হেলিকপ্টার, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল এবং ৪০টি শক্তিশালী উদ্ধারকর্মী দল ও ডগ স্কোয়াড পাঠিয়েছে৷ রবিবার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি কার্গো বিমানে করে মোট ৩৪ জনের একটি দল কাঠমান্ডু পৌঁছায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Shrestha
আগের দরবার স্কোয়ার
২০১১ সালে তোলা দরবার স্কোয়ারের ছবি এটি৷
ছবি: P. Mathema/AFP/Getty Images
বিশ্ব ঐতিহ্য বিধ্বস্ত
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়া দরবার স্কয়ার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে৷ কাঠমান্ডুতে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়েই সাতটি বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনা রয়েছে, যা বিধ্বস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
ছবি: P. Mathema/AFP/Getty Images
বিধ্বস্ত ভীমসেন টাওয়ার
কাঠমান্ডুর অন্যতম পর্যটন স্থান ভীমসেন টাওয়ার৷ ভূমিকম্পে ন’তলা এই টাওয়ারটির কয়েক ফুট ধসে পড়েছে৷ ১৮৩২ সালে এটি নির্মাণ করেছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী ভীমসেন থাপরা৷
ছবি: P. Mathema/AFP/Getty Images
ভক্তপুর
ভক্তপুরের বেশিরভাগ ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে৷
ছবি: Reuters/N. Chitrakar
ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া মানুষ
এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটা মানুষের কেবল মাথাটা ধ্বংসস্তূপের বাইরে৷ তাই সবাই মিলে চেষ্টা করছেন তাকে উদ্ধারে৷