আওয়ামী লীগে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব আর বিএনপিতে মামলার ভয়ের ফলে দুইটি দলের তৃণমূলে প্রকৃত অর্থে রাজনীতি নেই আছে সংঘাত আর ভয়। যদিও দুইটি দলই ২০২৩ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলকে চাঙা করতে মাঠে নামার কথা বলেছে।
বিজ্ঞাপন
গত মাসে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের তৃণমূলকে চাঙ্গা করার সিদ্ধান্ত হয়। করোনার কারণে দলে মাঠ পর্যায়ে যে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে নির্বাচনের এক বছর আগেই তারা তা কাটিয়ে ওঠার সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে বিএনপির বিভন্ন পর্যায়ের নেতারা তিন দিনের ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে। ওই বৈঠকে তৃণমূলে সংগঠন সক্রিয় করতে জেলায় জেলায় সফরের কথা বলা হয়। দুইটি দলই স্থানীয় পর্যায়ে সম্মেলন ও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।
ইউপি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছেনা। দলীয়ভাবে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক আধিপত্য থাকলেও প্রায় প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদেই অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকট হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীর ছাড়াছড়ি। এর একমাত্র কারণ বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় সহজেই ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ তাদের কেউই হাতছাড়া করতে চাইছেন না।
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স
তৃণমূলের কথা:
শেখ আব্দুল ওয়াহাব ১৪ বছর ধরে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এরমধ্যে দুই বার কাউন্সিল হলেও তিনিই সভাপতি রয়ে গেছেন। তার কথা," আর কেউ যোগ্য হলে তাকেই তো সভাপতি করা হতো।”
তিনি স্বীকার করেন তার উপজেলায় নানা গ্রুপিং, কোন্দল আছে। বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কোন্দল প্রকট হয়। তার কথা," দলে এখন অনেক নেতা। সবাই ইউপি চেয়ারম্যান হতে চায়। তাই আমার এলাকায় অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে।” তিনি জানান,"অনেক দিন ধরে দল ক্ষমতায় থাকায় স্বার্থের দ্বন্দ্বে নানা গ্রুপ ও উপদল হয়েছে। তারা আবার বিভিন্ন জন বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নেতার লোক। বাইরে থেকেও দলে লোক ঢুকেছে। তারাও আলাদা গ্রুপ।” তবে তার দাবি ,"এরপরও তৃণমূলে দল চাঙা আছে।”
উপজেলা পর্যায়ে মূলত নানা প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি, নানা উন্নয়নমূলক কাজকে কেন্দ্র করেই আওয়ামী লীগে বিভক্তি। স্থানীয় পর্যায়ে অধিপত্য ধরে রাখতেও জেলা এবং কেন্দ্রীয় নেতারা এই গ্রুপিং-এ জড়িয়ে পড়ছেন। ফলে বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালন, ফুল দেয়া , টেন্ডার এসব নিয়ে সংঘাত সংঘর্ষ লেগেই আছে । কেন্দ্রীয় নির্দেশেও তা বন্ধ হচ্ছেনা।
সাখাওয়াত হোসেন শফিক
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের(আসক) হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট এই আট মাসে তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ সংঘর্ষ হয়েছে ৫৮টিঁ। এইসব সংঘর্ষে মারা গেছেন আট জন। আহত হয়েছেন ৮০২ জন। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে ছয়টি। আহত হয়েছেন ৩১ জন।
পাশের উপজেলা মোড়েলগঞ্জের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কেরামত আলী খান। তিনি ১৫ বছর ধরে সাধারণ সম্পাদক। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে স্থায়ীভাবে ঢাকায় থাকছেন। তিনি বলেন,"এখন বিএনপি করে মামলা খাওয়া ছাড়া আর কোনো আশা নাই। এলাকায়ও দলের নেতা-কর্মীরা নিষ্ক্রিয়। অনেকেই মামলার আসামি। আর মিছিল মিটিং করলেই গায়েবি মামলা। বিএনপি করা এখন কঠিন। আমি তো অবসর নিতে চাই। তারপরও দল সাধারণ সম্পাদক পদে নাম রেখেছে। আমি কী করব!” তার কথা," এই পরিস্থিতি সারাদেশেই। তৃণমূলে বিএনপির কোনো কার্যক্রম বলতে কিছু নেই।”
সব সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ৷ প্রতিষ্ঠার ৬৮ বছর পরও দাপটের সঙ্গেই এগিয়ে যাচ্ছে দলটি৷ স্বাধীন দেশে সরকার গঠন করেছে ৪ বার৷ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের কিছু চিত্র...
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
সর্বাধিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ
১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া আওয়ামী লীগ স্বাধীন বাংলাদেশের ১০টি সংসদ নির্বাচনের মাত্র দুটিতে অংশ নেয়নি৷ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করায় সংকটে পড়ে দলটি৷ ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে দলের দু’টি অংশ আলাদাভাবে অংশ নেয়৷ ১৯৮১ সালে দলকে ঐক্যবদ্ধ করেন শেখ হাসিনা৷ ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে দলটি অংশ নেয়নি৷ এছাড়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও তারা বর্জন করে৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয়
১৯৭৩ সালের ৭ই মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ সেই নির্বাচনে ৩০০টির মধ্যে ২৯৩টি আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ৷ সেবার এক কোটি ৯৩ লাখ ২৯ হাজার ছয়শ' ৮৩ ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল এক কোটি ৩৭ লাখ ৯৮ হাজার ৭১৭ ভোট৷
ছবি: bdnews24
দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই আওয়ামী লীগ
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর নেতৃ্ত্ব সংকটে জর্জরিত আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়৷ এ নির্বাচনে আবদুল মালেক উকিলের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ৩৯টি আসন পায় এবং মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন অংশ পায় দু’টি আসন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
বিরোধী দলের ভূমিকায়
১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃ্ত্বাধীন ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ ৭৬টি আসনে জয় লাভ করে৷ সেই নির্বাচনে দলটি ২৬ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পায়৷ সেবারই প্রথমবারের মতো সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে যোগ দেন শেখ হাসিনা৷
ছবি: dapd
আবার বিরোধী দলে
স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৮৮টি আসনে জয় লাভ করে আবার প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সংসদে যায়৷ ৮৮টি আসন পেলেও মোট ভোটে আওয়ামী লীগ ১৪০টি আসন জয়ী বিএনপির কাছাকাছিই ছিল৷ আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৩০ দশমিক এক শতাংশ ভোট আর বিএনপি পেয়েছিল ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট৷
ছবি: Sarah Kabori/Nur Uddin, Dhaka
২১ বছর পর ক্ষমতায়
১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতে ২১ বছর পর আবার ক্ষমতায় ফেরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ৷ এর আগে বিএনপি সরকারের অধীনে আয়োজিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন তারা বয়কট করে৷ সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ১৪৬টি আসন এবং ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পায়৷ সেই সুবাদে প্রথম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন দলনেত্রী শেখ হাসিনা৷
ছবি: Saiful Islam Kallol
ভোট বিস্ময়
৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাত্র ৬২টি আসন পায় আওয়ামী লীগ৷ সেবার নির্বাচনে জয়ী বিএনপি পায় ১৯৩টি আসন আর ৪১ দশমিক ৪০ শতাংশ ভোট, যেখানে আওয়ামী লীগ মাত্র ৬২ আসনে জয়ী হয়ে ৪০ দশমিক ২ শতাংশ ভোট৷ এর আগে ’৯১-এর নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ আসন অনেক কম পেলেও ভোট অনেক বেশি পেয়েছে৷ এবারও ২ কোটি ২৩ লাখের বেশি ভোট পায় দলটি, যেখানে তিনগুণ বেশি আসনে বিজয়ী বিএনপি পায় ২ কোটি ৩০ লাখ ভোট৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
ভোটের জোয়ার
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে ২৩০ আসনে জয় লাভ করে আওয়ামী লীগ আর ভোট পায় ৪৯ শতাংশ৷
ছবি: bdnews24
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ আসন
বেশিরভাগ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে তা প্রতিরোধেও তৎপর হওয়ায় আওয়ামী লীগ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ আসনে জয় লাভ করে৷ ৮১টি আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করে জয়ী হয়৷ মোট ২৩৪ আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ৷ তত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাস করায় ক্ষমতাসীন দলের অধীনেই হয় এই নির্বাচন৷
ছবি: imago/Xinhua
9 ছবি1 | 9
দেশের আরো কয়েকটি এলাকায় কথা বলে একই চিত্র পাওয়া গেছে। আর নেতাদের অনেকেই এখন ঢাকায় থাকেন। তাদের কথা মামলার ভয়ে তারা এলাকায় যেতে পারেন না। সংগঠন করবেন কীভাবে? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বিএনপির থানা এবং জেলা পর্যায়ের অনেক নেতাই এখন আর এলাকায় যান না। তারা ঢাকা অথবা বড় বড় শহরে থাকেন। সেরকমই একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,"দুই কারণে এলাকায় যাই না। প্রথম কারণ মামলা। আর দ্বিতীয়ত, এলাকায় গেলে কর্মীদের কষ্টের কথা শুনে অসহায় বোধ করি। কিছু করতে পারি না।”
অবশ্য এর মধ্যেও স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপিতে গ্রপিং এবং সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনা আছে। আসকের হিসাব অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে আগস্ট এই আট মাসে বিএনপি বনাম বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে দুইটি । এইসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪৫ জন। তবে তাদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বেশি হয়েছে। এই সময়ে পুলিশের সাথে ১১টি সংঘর্ষ এবং ৪১২ জন আহত হয়েছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির কবে কত আসন
বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৮ সালে৷ সেই থেকে গত ৪৮ বছরে অনুষ্ঠিত প্রায় সব জাতীয় নির্বাচনেই জনপ্রিয়তার প্রমাণ রেখেছে দলটি৷ গত দশটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অর্জন নিয়েই এই ছবিঘর...
ছবি: picture-alliance/dpa/Dinodia Photo Library
নির্বাচন বর্জনের শীর্ষে
বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর দেশে মোট জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে ১০টি৷ এর মধ্যে তিনটিতে, অর্থাৎ ১৯৮৬, ১৯৮৮ ও ২০১৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি দলটি৷ সমসাময়িক দলগুলোর মধ্যে বিএনপিই কিন্তু নির্বাচন বর্জনের তালিকার শীর্ষে৷
ছবি: Bdnews24.com
প্রতিষ্ঠার পরই ক্ষমতায়
তখনকার সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)৷ প্রতিষ্ঠার এক বছর পর, ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে দলটি৷ ৩০০ আসনের মধ্যে ২০৭ টি আসন পায় তারা৷ মোট এক কোটি ৯৬ লাখ ৭৬ হাজার ১২৪ টি ভোটের মধ্যে ৭৯ লাখ ৩৪ হাজার ২৩৬ টি ভোট পায় দলটি৷
ছবি: imago/United Archives International
নির্বাচন বর্জনের শুরু
স্বৈরশাসক হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে দু’বার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ প্রথমটি হয় ১৯৮৬ সালে ও পরেরটি ১৯৮৮ সালে৷ এ দুই নির্বাচনের কোনোটিতেই অংশগ্রহণ করেনি বিএনপি৷
ছবি: Bdnews24.com
জামায়াতের সমর্থনে ক্ষমতায়
১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রায় দশ বছর পর ক্ষমতায় ফের দলটি৷ সংসদের মোট ৩০০ টি আসনের মধ্যে ১৪০ আসনে জয়ী হয় তারা৷ সেই নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী পায় ১৮টি আসন৷ জামায়াতের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে বিএনপি৷ নির্বাচনে মোট তিন কোটি ৪৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮০৩ টি ভোট পড়ে, এর মধ্যে এক কোটি পাঁচ লাখ সাত হাজার ৫৪৯টি ভোট পায় দলটি৷
ছবি: DW/M.Rahman
‘বিতর্কিত’ নির্বাচন
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ বিরোধীদলগুলো তখন আন্দোলনে নামে৷ ফলে ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে মূলত বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গড়া দল ফ্রিডম পার্টি ছাড়া আর কোনো দল অংশগ্রহণ করেনি৷ স্বাভাবিক কারণেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় বিএনপি৷
ছবি: Reuters
বিরোধী দল হয়ে সংসদে
বিরোধী দলগুলোর চাপের মুখে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয় বিএনপি৷ বিতর্কিত সেই নির্বাচনের তিন মাস পর, ১৯৯৬ সালের ১২ই জুন অনুষ্ঠিত হয় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ ভোট এবং ৩০০ আসনের মধ্যে ১১৪টিতে জিতে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সংসদে যায় দলটি৷
ছবি: bdnews24.com
প্রথমবারের মতো এককভাবে ক্ষমতায়
২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৯৩টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে দলটি৷ তবে এককভাবে ক্ষমতায় আসার পেছনে ছিল জামায়াতের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতা৷
ছবি: bdnews24.com
ভরাডুবি
সেনা সমর্থিত সরকারের অধীনে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ নির্বাচনে ব্যাপক ভরাডুবি হয় দলটির৷ তবে সেবারও ৩৩ দশমিক ২ ভাগ ভোট পায় দলটি৷ তবে আসন পায় মাত্র ৩০টি৷
ছবি: DW/M. Mamun
আবার বর্জন এবং সংসদের বাইরে
১৯৯৬ সালে তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে নামসর্বস্ব একটি দলকে নিয়ে নির্বাচন করেছিল দলটি৷ অনেকটা একই রকমের ঘটনা ঘটে ২০১4 সালে৷ ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়ে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে৷ সেই নির্বাচন বর্জন এবং প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়ার ফলে পাঁচ বছরের জন্য সংসদের বাইরে থেকে যায় দলটি৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. K. Godhuly
9 ছবি1 | 9
নেতারা যা বলেন:
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স দাবি করেন, এখন সারাদেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ ৬০ হাজার মামলা চলমান আছে। তিনি বলেন,"এই মামলা আর পুলিশি হয়রানি মোকাবেলা করেই আমরা দলকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু সরকারের কর্র্তৃত্ববাদী মনোভাবের কারণে আমরা বাধাগ্রস্ত হচ্ছি। এই সরকার বিএনপিকে সংঘবদ্ধ হতে দিতে চায় না।”
গত মাসের ইউপি নির্বাচনে স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থীতা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক । তিনি বলেন আগে স্থানীয় পর্যায় থেকে তালিকা পাঠানো হত। এবার যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারবেন। তিনি বলেন,"নানা কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব ও ভুল বোঝাবুঝি আছে। এই দ্বন্দ্বের কারণ অনুসন্ধানে প্রত্যেক বিভাগে কমিটি কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি করা হবে।”