তেজস্ক্রিয় বর্জ্যবাহী ট্রেনের যাত্রাপথে প্রতিবাদের ঝড়
৮ নভেম্বর ২০১০যাত্রা শুরু ফ্রান্স থেকে
শুক্রবার ফ্রান্স থেকে যাত্রা শুরু করে পারমাণবিক বর্জ্যবাহী একটি ট্রেন৷ গন্তব্য জার্মানির উত্তরের শহর গোর্লেবেন৷ কিন্তু পরমাণু বিরোধীরা এই ট্রেনটিকে কিছুতেই গন্তব্যে যেতে দিতে রাজি নন৷ রবিবার ট্রেনটির যাত্রাপথের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷ গোর্লেবেনের কাছের শহর ডোনেনবার্গের জঙ্গলে প্রায় ৪ হাজার বিক্ষোভকারী রেল লাইনের ওপরে অবস্থান নেয়৷ এসময় পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করে, সাহায্য নেয় জলকামানের৷ জবাবে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ এর আগে জার্মানির অপর শহর সেলেতে বিক্ষোভকারীরা রেলপথ অবরোধ করলে তেজস্ক্রিয়বাহী ট্রেনটির যাত্রা বিলম্বিত হয়৷
প্রতিবাদ বিক্ষোভে আহতের সংখ্যা
একেবারে সঠিক পরিসংখ্যান এখনো কেউ দিতে পারেনি৷ তবে, ডোনেনবার্গে পুলিশের ঘোড়ার সামনে পিছলে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন এক নারী৷ এছাড়া পুলিশ মুখপাত্রের বরাতে একাধিক সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, সেখানে আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ১২ জন৷ তবে আহতের এই সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷
ট্রেনের যাত্রা বিলম্বিত
গন্তব্যের শেষ ৫০ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দিতে প্রচণ্ড বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে ট্রেনটিকে৷ বর্তমানে সেটি জোরপূর্বক যাত্রা বিরতিতে রয়েছে ডালেনবুর্গে৷ পুলিশ ট্রেনটিকে ঘিরে রেখেছে৷ তাছাড়া অনেক পুলিশ সদস্য ২৪ ঘন্টারও বেশি দায়িত্বে থাকায় বিপত্তি শুরু হয়েছে৷ ফলে গতকাল সেটির যাত্রাপথ থেকে সব প্রতিবাদকারীকে সরাতে সক্ষম হয়নি নিরাপত্তা বাহিনী৷
এখানে বলা প্রয়োজন, গোর্লেবেন শহরেও কিন্তু পরমাণু বিরোধীরা কঠোর অবস্থান নিয়েছে৷ শনিবার সেখানে কমপক্ষে ২৫ হাজার বিক্ষোভকারী অবস্থান নেয়৷ প্রতিবাদ অব্যাহত ছিল রবিবারও৷ সর্বশেষ খবরে দেখা যাচ্ছে, ডোনেনবুর্গের কৃষকরা বিভিন্ন রাস্তায় লরি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করেছে৷
বিক্ষোভের কারণ
প্রথমত পারমাণবিক জ্বালানির বিরুদ্ধে অনেক জার্মানের অবস্থান বহুদিনের৷ তাছাড়া, গোর্লেবেনের যেখানে পারমাণবিক বর্জ্য জমা রাখা হচ্ছে, সেটি শুরুতে ছিল অস্থায়ী আধার৷ পরিবেশবাদীরা এই আধারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত৷ তাদের সন্দেহ, সরকার শেষমেষ হয়তো গোর্লেবেনের মাটির উপরের এই অস্থায়ী আধারকেই পরমাণু বর্জ্যের স্থায়ী আধারে পরিণত করবে৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়