1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তেল অপসারণ যন্ত্র আবিষ্কার করলেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

নদী বা সমুদ্রের পানিতে ভেসে থাকা তেল অপসারণের জন্য নতুন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী মো. ফারুক বিন হোসেন ইয়ামিন৷ তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে এই পরীক্ষা সফল হয়েছে৷

Maschine um Wasser und Öl zu trennen Bangladesch Sundarban
নিজ আবিষ্কৃত যন্ত্রের সঙ্গে মো. ফারুক বিন হোসেন ইয়ামিনছবি: Md Faruk Bin Hossain

সুন্দরবনের শেলা নদীতে তেল ট্যাংকার ডুবে যাওয়ার পর তেল ছড়িয়ে পড়ে নদীতে, যা অপসারণে স্থানীয় মানুষকে কাজে লাগানো হয়৷ নারী ও শিশুসহ সবাই খালি হাতে সেই তেল তোলার কাজ করেন৷ এটা আহত করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী মো. ফারুক বিন হোসেন ইয়ামিনকে৷ তিনি চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষের এই তেল তোলার কাজকে কম খরচে যান্ত্রিকভাবে করার কথা ভাবতে থাকেন৷ আর সেই ভাবনা থেকেই দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি করে ফেলেন তেল অপসারণের যন্ত্র৷ প্রাথমিকভাবে তিনি ছোট আকারে ‘কর্কসিট' দিয়ে যন্ত্রটি তৈরি করে সফল হলেও, এটি বড় আকারেও করা সম্ভব৷

প্রয়োজনে বড় আকারেরও তৈরি করা যাবে এ যন্ত্রছবি: Md Faruk Bin Hossain

মো. ফারুক বিন হোসেন ইয়ামিন ডয়চে ভেলেকে জানান, যন্ত্রটির দুটি অংশ – তেল শোষক এবং পাম্প৷ নির্দিষ্ট স্তরের তেল শোষন ক্ষমতা সম্পন্ন শোষক অংশটি দুটি স্তর বিশিষ্ট মুখের মতো কাঠামো, যা তেলের নির্দিষ্ট স্তরকে শোষন করে ভেতরের দিকে প্রবাহিত করে৷ সেই প্রবাহিত তেল পাম্পের মাধ্যমে শোষিত হয়ে সংগ্রাহক আধারে জমা হয়৷ অর্থাৎ সংগ্রাহক পাত্রে তেল এবং কিছু পরিমাণ পানি জমা হয়৷ কিন্তু আধারটির নীচের দিকের নিষ্কাশন ভাল্ব খুলে দিয়ে পানির স্তরটি অপসারণ করলে ঐ সংগ্রাহক পাত্রে শুধু তেলই জমা হবে, যা কিনা পরবর্তীতে ড্রামে ভরে ব্যবহারের জন্য অপসারণ করা যাবে৷

তিনি বলেন, বড় আকারে স্টিল দিয়ে তৈরি করা হলে শোষক যন্ত্রটির প্রতিটি ইউনিট দৈর্ঘ্যে ২০ ফুট হবে৷ এছাড়া তেলের স্তরের ওপর নির্ভর করে এর প্রস্থ হ্রাস বা বৃদ্ধি করার ব্যবস্থা থাকবে, যাতে শোষক অংশটির মুখ তেলের স্তরের গভীরতা অনুযায়ী পানির ওপরে স্থাপন করা যায়৷

জল থেকে আলাদা হয়ে গেল তেল!ছবি: Md Faruk Bin Hossain

মো. ফারুক জানান, ২০ ফুটের একটি যন্ত্রের জন্য আট থেকে দশ অশ্ব ক্ষমতা সম্পন্ন ডিজেল পাম্প ব্যবহার করতে হবে, যা প্রতি ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার লিটার তেল উত্তোলন করতে সক্ষম৷ এই ক্ষমতা পাম্পের অশ্ব ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল৷ এর অর্থ, কতটি ইউনিট ব্যবহার করা প্রয়োজন সেটা নদীর প্রস্থ এবং তেলের পরিমাণের উপর নির্ভর করবে৷ তাঁর কথায়, দেশীয় উপাদানে একটি শোষক ইউনিট তৈরি করতে দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা ব্যয় হবে৷

প্রাথমিকভাবে ‘কর্কসিট' দিয়ে তৈরি যন্ত্রটির কার্যকারিতা দেখা হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পুকুরে মঙ্গলবার৷ এবং এই পরীক্ষা সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন মো. ফারুক বিন হোসেন ইয়ামিন৷

তিনি জানান, দুর্ঘটনা ঘটার পর অতি দ্রুততার সাথে নদীতে আড়াআড়িভাবে রাবার টিউব অথবা রাবার ডেম দিয়ে তেল ছড়িয়ে পড়া এলাকা আবদ্ধ করে দিতে হবে৷ এতে নীচ দিয়ে পানি চলে যাবে, কিন্তু তেলের স্তরটি টিউব বেষ্টিত এলাকায় আবদ্ধ থাকবে৷ পরবর্তীতে এ যন্ত্রটি ব্যবহার করে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ তেল অপসারণ করা সম্ভব৷

মো. ফারুক বলেন, যন্ত্রটি ৭০ ভাগ তেল এবং ৩০ ভাগ পানি শোষন করে৷ পরে তেল এবং পানি আলাদা করে ঐ তেল ব্যবহারের উপযোগীও করা যাবে৷

ইয়ামিন বলেন, ‘‘আমি এই যন্ত্রটি দেশের কাজে লাগাতে চাই৷ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় বা সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ এগিয়ে এলে আমি বড় আকারের এই শোষক যন্ত্র তৈরি করব৷'' এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলেও তাঁর কোনো আপত্তি নেই বলে জানান মো. ফারুক বিন হোসেন ইয়ামিন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ