ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৬৩০ জন নিহত হয়েছে৷ নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক৷ এদিকে হামাসের রকেট হামলার কারণে তেল আভিভ থেকে বিমান চলাচল বন্ধের পথে৷ যুদ্ধ বন্ধের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে৷
বিজ্ঞাপন
গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ ইসরায়েলের এক সেনা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, বুধবারের হামলায় অন্তত ৩০ জন হামাস সদস্য নিহত হয়েছে৷ ৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া হামলায় এ পর্যন্ত ২১০ জন হামাস সদস্য নিহত হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি৷ ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতিও বাড়ছে৷ হামাসের রকেট হামলা বন্ধ করার লক্ষ্যের কথা বলে শুরু করা হামলায় কমপক্ষে ২৯ জন সেনাসদস্যকে চিরতরে হারিয়েছে দেশটি৷ এক ফিলিস্তিনি স্নাইপারের গুলিতে বুধবারও প্রাণ হারায় ইসরায়েলি এক ট্যাংক অফিসার৷
এদিকে গাজা থেকে ছোড়া রকেট তেল আভিভ বিমানবন্দরের কাছের একটি বাড়িতে আঘাত হেনেছে৷ আরো হামলার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ ইসরায়েল থেকে এবং ইসরায়েলের দিকে তাদের সব ফ্লাইট বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে৷ ইসরায়েল সরকারও তেল আভিভের বেন গুরিয়ন বিমান বন্দরের ৮০টি ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে৷ তবে তেল আভিভের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ রাখতে ইচ্ছুক দেশগুলোর প্রতি এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধও জানিয়েছে ইসরায়েল৷ মূলত আর্থিক ক্ষতি এড়াতেই এ অনুরোধ৷ চলমান পরিস্থিতিতে তেল আভিভে স্বাভাবিক বিমান চলাচল দৃশ্যত ঝুঁকিপূর্ণ৷
ছবিতে গাজা
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি ক্রমশ বাড়ছেই৷ তবুও হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কোনো লক্ষণ নেই৷ গাজার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ছবিঘর৷
ছবি: Reuters
স্বজনের আর্তনাদ
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি ক্রমশ বাড়ছেই৷ ছবিতে স্বজনের মৃত্যুতে বিলাপ করছেন এক ফিলিস্তিনি৷ গাজায় এমন দৃশ্য প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে৷ ছবিটি ২১ জুলাই তোলা৷
ছবি: Reuters
নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান
বিমান হামলা চালানো হবে - ইসরায়েলের এমন সতর্কবার্তা শুনে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যাচ্ছে একদল ফিলিস্তিনি৷ ২২ জুলাই ছবিটি তোলা৷ মঙ্গলবার গাজায় হামলার পরিমাণ আরো বাড়িয়েছে ইসরায়েল৷
ছবি: Reuters
ধ্বংসস্তূপের মাঝে আশ্রয়ের সন্ধান
সহায়সম্বল বলতে যা কিছু তা ঐ কাগজের বাক্সে৷ আর এই বাক্সসহ রাস্তায় হাঁটছে গাজার এই শিশুটি৷ তার পেছনে থাকা ধ্বংসস্তূপ একটি বাড়ির৷ গাজার পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বিমান হামলায় বাড়িটি এভাবে ধসে গেছে৷
ছবি: Reuters
ধোঁয়ার কুণ্ডলী
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের বিমান হামলার কারণে সৃষ্টি হয়েছে এই ধোঁয়া৷ ২২ জুলাই গাজা থেকে তোলা ছবি এটি৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন৷ কিন্তু তাঁর এই আহ্বান তেমন একটা আমলে নিচ্ছে না ইসরায়েল বা হামাস৷
ছবি: Reuters
বাদ পড়ছে না হাসপাতালও
গাজার মসজিদ, স্কুল এমনকি হাসপাতালেও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল৷ ফলে বেসামরিক প্রাণহানি বাড়ছে৷ ছবিতে গাজা সিটির আল-সাফিয়া হাসপাতালে শিশুদের মরদেহবাহী একটি লাশের ব্যাগ সরাচ্ছেন সেচ্ছাসেবীরা৷
ছবি: Marco Longari/AFP/Getty Images
গাধার গাড়িতে পালানো
গাধায় টানা গাড়িতে করে পালাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা৷ ছবিটি ২১ জুলাই তোলা৷ বলাবাহুল্য, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে গাজার বাইরে যাওয়া প্রায় অসম্ভব৷ কারণ অঞ্চলটির দুই দিক ঘিরে রেখেছে ইসরায়েল৷ আর একদিকে মিসরের সঙ্গে সীমান্ত৷ অপর পাশে সমুদ্র৷ ফলে গাজার মধ্যেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করতে হয় তাদের৷
ছবি: Reuters
ইসরায়েলি সেনা
গাজার উত্তরাঞ্চলে ‘স্টেজিং এরিয়ার’ দিকে তাকিয়ে আছেন ইসরায়েলি সেনারা৷ গাজায় বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযানও পরিচালনা করছে ইসরায়েল৷ এতে ইসরায়েলি কয়েকজন সেনা নিহত হয়েছে৷
ছবি: Reuters
হামলার প্রতিবাদ
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে৷ ছবিটি গত ২০ জুলাই অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় তোলা৷
ছবি: Reuters
নিষেধাজ্ঞা, অগ্নিকাণ্ড
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ নিষিদ্ধ করে প্যারিস পুলিশ৷ প্রতিবাদে রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় সাধারণ জনতা৷ ছবিটি ২০ জুলাই তোলা৷ এই ঘটনার পর প্যারিসে অবস্থানরত ইহুদিদের নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এথেন্সে প্রতিবাদ
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়৷ ছবিটি ১৭ জুলাই তোলা৷
ছবি: Reuters
ঢাকায় প্রতিবাদ
হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যকার সহিংস পরিস্থিতি নিরসনে ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন বাংলাদেশিরা৷ ছবিটি ১৮ জুলাই তোলা৷ বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসও গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্র সমালোচনা করেছেন৷
ছবি: Reuters
11 ছবি1 | 11
দেশের বাইরে নানা স্থানে আটকে পড়া ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়েও বেনইয়ামিন নেতানিয়ানহু সরকার উদ্বিগ্ন৷ তাই তেল আভিভ থেকে অন্যান্য বিমানের ফ্লাইট বন্ধ করার সময়েও ইসরায়েলি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে নেয়া হচ্ছে বিশেষ উদ্যোগ৷ ইসরায়েলের এল আল এয়ারলাইন্স ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়ে নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরানোয় সহায়তা করবে বলে সরকারের তরফ থেকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে৷
তবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কোনো পক্ষই সাড়া দিচ্ছে না৷ মিশর সরকারের দেয়া এ প্রস্তাব মেনে নিয়ে শুরুতে ইসরায়েল সাময়িকভাবে যুদ্ধ বন্ধ রাখলেও হামাস তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়৷ তারপরও শান্তিপুনস্থাপন প্রচেষ্টা অব্যাহত৷ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কার্যকর করার উপায় খুঁজতে মিশর সফর করছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি৷ একই লক্ষ্য নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন গিয়েছেন ইসরায়েলে৷ কিন্তু অবস্থা এখনো তথৈবচ৷ ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা বেড়েই চলেছে৷ গাজায় মৃতের মিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে প্রতিদিন৷ প্রতিদিন মিছিলে যোগ হচ্ছে নারী আর শিশুদের কচি, নিষ্পাপ মুখ৷ বুধবারও ইসরায়েলের গোলার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছে গাজার দক্ষিণে আট বছর বয়সি এক শিশু৷