ত্রিপুরা যা পারে, পশ্চিমবঙ্গ পারে না। দাদাকে রাজ্যের পর্যটন অ্যাম্বাসডর ঘোষণা করল ত্রিপুরা।
বিজ্ঞাপন
আগামী মাসেই সরকারিভাবে ত্রিপুরা পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসডর হিসেবে কাজ শুরু করতে পারেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মহারাজের বেহালার বাড়িতে এসেছিলেন ত্রিপুরার প্রতিনিধিরা। সৌরভ তাদের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন বলেই সূত্র জানাচ্ছে। যদিও সৌরভ সরাসরি এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
মঙ্গলবার আচমকাই সৌরভের বেহালার বাড়িতে পৌঁছে যান ত্রিপুরার পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন দপ্তরের সচিব উত্তমকুমার চাকমা এবং দপ্তরের কর্মকর্তা তপনকুমার দাস। ত্রিপুরার বিখ্যাত সুন্দরী মন্দিরের একটি মডেল এবং ফুলের স্তবক নিয়ে তারা সৌরভের বাড়ি পৌঁছান।
সৌরভকে তারা জানান, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার অনুরোধ, সৌরভ যেন তাদের রাজ্যের পর্যটন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসডর হন। সূত্র জানাচ্ছে, প্রাথমিকভাবে সৌরভ বলেছিলেন, তিনি প্রস্তাবটি ভেবে দেখবেন। তবে দিনের শেষে তিনি প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন। ফলে আগামী মাস থেকেই তিনি কাজ শুরু করতে পারেন।
নিজে থেকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিরাট কোহলি। আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলার সময় তিনি এই ঘোষণা করেন। তিনি বলেছেন, বোর্ডকে আগে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন, রোহিত শর্মাকেও জানিয়েছিলেন। সেইসময়ের কোচ রবি শাস্ত্রীর সঙ্গেও তার কথা হয়েছিল। বিরাট জানিয়ে দেন, তিনি টেস্ট এবং একদিনের ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করবেন।
ছবি: AFP/D. Sarkar
কোহলির জায়গায় রোহিত
এরপর কোহলির জায়গায় রোহিত শর্মাকে প্রথমে ভারতের টি-টোয়েন্টি টিমের অধিনায়ক করা হয়। কিছুদিন পর একটা বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, একদিনের ক্রিকেটেও রোহিতই অধিনায়ক হবেন। বোর্ডের যুক্তি ছিল, সাদা বলের ক্রিকেটে একজনই অধিনায়ক থাকা উচিত।
ছবি: Getty Images/D. Sarkar
সৌরভের সাফাই
কোহলির কাছ থেকে এইভাবে একদিনের ক্রিকেটের অধিনায়কের পদ ছিনিয়ে নেয়ার পর প্রবল বিতর্ক শুরু হয়। তখন সৌরভ জানান, কোহলিকে জানিয়েই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আর তিনি কোহলিকে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব না ছাড়ার অনুরোধ করেছিলেন। কোহলি সেটা শোনেননি। সাদা বলে একজন অধিনায়ক থাকা উচিত বলে নির্বাচকরা রোহিতকে অধিনায়ক করেছেন।
ছবি: Getty Images/AFP/P. Paranjpe
বিরাটের জবাব
এরপর বোমা ফাটান বিরাট কোহলি। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সৌরভ তাকে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব না ছাড়ার কোনো কথা বলেননি। আর একদিনের ক্রিকেটে রোহিতকে অধিনায়ক ঘোষণার দেড় ঘণ্টা আগে তাকে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সেটাও দক্ষিণ আফ্রিকায় দল নির্বাচন নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার পর একেবারে শেষে।
ছবি: Getty Images/A. Davidson
'বোর্ড দেখছে'
প্রশ্ন হলো, কে ঠিক বলছেন, সৌরভ না বিরাট? সৌরভ এরপর জানিয়েছেন, বোর্ড বিষয়টি দেখছে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝখানে বোর্ড কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। দল দেশে ফেরার পর নিতে পারে।
ছবি: privat
গাভাস্কারের মতে
সুনীল মনোহর গাভাস্কার মনে করেন, বিরোধের কারণ, কোহলির বিবৃতি। টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময় কোহলি বলেছিলেন, তিনি টেস্ট ও একদিনের ক্রিকেটে অধিনায়ক থাকবেন। তার বলা উচিত ছিল, এই দুই ফরম্যাটে অধিনায়ক থাকতে তার কোনো অসুবিধা নেই। কোহলির কথায় বোর্ড চটেছে বলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ছবি: picture alliance/AP Photo
অশ্বিন বনাম শাস্ত্রী
ভারতীয় স্পিনারদের মধ্যে অন্যতম রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি সম্প্রতি ক্রিকইনফোডটকমে বলেছেন, ২০১৮-১৯-এর অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় কোচ রবি শাস্ত্রীর একটি কথায় ভেঙে পড়েছিলেন। সে সময় একটি টেস্টে স্পিনার কুলদীপ যাদব পাঁচ উইকেট নেয়ার পর রবি শাস্ত্রী বলেছিলেন, কুলদীপই এখন ভারতের সেরা স্পিনার। ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সফল বোলার অশ্বিন এই কথাটা মেনে নিতে পারেননি বলে একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।
ছবি: Getty Images/AFP/P. Parks
শাস্ত্রীর জবাব
রবি শাস্ত্রী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, সবার টোস্টে মাখন মাখানো একজন কোচের কাজ নয়। তার কাজ, কোনো এজেন্ডা ছাড়া ঠিক তথ্য পরিবেশন করা। কুলদীপ সেই টেস্টে অসাধারণ বল করেছিলেন এবং পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন। তিনি এত ভালো বল করেছিলেন বলেই ওই কথাগুলো বলেছিলেন বলে জানিয়েছেন শাস্ত্রী।
ছবি: dapd
শাস্ত্রী খুশি
শাস্ত্রীর বক্তব্য, তার ওই মন্তব্যের ফলে অশ্বিন আরো ভালোভাবে নিজের কাজটা করেছেন। তাই তিনি খুশি। শাস্ত্রীর দাবি, তার মন্তব্যের পরই অশ্বিন নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছেন। উপরের ছবিতে মহম্মদ শামির সঙ্গে শাস্ত্রী।
ছবি: IANS
9 ছবি1 | 9
আইপিএলে দিল্লির দলের সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি। তবে মাঝে একটু বিরতি নিয়ে তিনি কলকাতায় ফিরেছেন। আর সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছেন ত্রিপুরার মন্ত্রী।
এর আগেও সৌরভ ত্রিপুরা যেতে পারেন, এমন গুজব ছড়িয়েছে। বস্তুত, ত্রিপুরায় ভোটের সময়েও শোনা গেছিল, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সৌরভকে বিজেপিতে যোগ দিতে বলেছিলেন এবং মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সৌরভতা মানতে চাননি। যদিও বিজেপি বা সৌরভ কোনোপক্ষই এবিষয়ে কখনো মুখ খোলেনি। এদিনও সৌরভ নিজে কিছু জানাননি। তবে সূত্র জানাচ্ছে, ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসডর হতে সম্মত হয়েছেন মহারাজ।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে ত্রিপুরায় গেছিলেন ভারতের আরেক ক্রিকেটার ঋদ্ধিমান সাহা। ত্রিপুরার হয়েই তিনি এখন ক্রিকেট খেলেন। রাজ্যের ক্রিকেট মেন্টরও তিনি। এবার ত্রিপুরার পথে সৌরভ। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, ত্রিপুরা যা পারে, পশ্চিমবঙ্গ তা পারে না কেন? উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসডর শাহরুখ খান।