1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

থাইল্যান্ডে ছাতা-ধরা বই বাঁচাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা

৪ জানুয়ারি ২০১২

গত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে থাইল্যান্ডে প্রলয়ংকরী বন্যায় আরো অনেক ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে জলে ভিজে নষ্ট হয় লক্ষ লক্ষ নতুন এবং পুরনো বই, দেশের বিভিন্ন লাইব্রেরিতে৷ সেগুলি পুনরুদ্ধার করার কাজে জার্মান বিশেষজ্ঞরা৷

Eine Studentin mit einem Bücherstapel auf dem Arm sucht am 04.05.2009 in der Bibliothek der Universität Würzburg (Unterfranken) nach Büchern. Foto: Daniel Karmann dpa/lby +++(c) dpa - Report+++
ছবি: picture-alliance/dpa

থাইল্যান্ডের বর্তমান রাজধানী ব্যাংককের উত্তরে আয়ুত্থায়া, কোন সুদূর অতীতের আরেক রাজধানী৷ এই আয়ুত্থায়া দিনের পর দিন ঘোলাজলে ডুবে ছিল সাম্প্রতিক বন্যায়৷ কাজেই সেখানকার মাহা চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেসমেন্ট, অর্থাৎ মাটির তলার ঘরগুলির যে কি অবস্থা, তা বলাই বাহুল্য৷ দরজা খুললেই একটা ভ্যাপসা গন্ধ৷

কোথায় ইউরোপের কোন কোণে জার্মানি৷ সেখানে লাইপজিশ শহর৷ সেই লাইপজিশের বই সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে আসা বই সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ মানফ্রেড আন্ডের্স প্রথমেই বেসমেন্টের জানলাগুলো খুলে দিলেন৷ ‘‘এখানে হাওয়া ঢোকা দরকার৷ নয়তো ছাতা ধরার পক্ষে আদর্শ পরিবেশ হয়ে দাঁড়াবে,'' বললেন আন্ডের্স৷

গোটা বেসমেন্টটাই ছিল আগে লাইব্রেরি৷ সব দেয়াল জুড়ে প্রায় দেড় মিটার উচ্চতা অবধি বন্যার পানি ওঠার চিহ্ন৷ মঠের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা জল বাড়তে দেখে প্রায় দু'লক্ষ বই ওপরতলায় নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু সব বই বাঁচাতে পারেননি৷ এখনও বেসমেন্টের ঐ প্রাক্তন লাইব্রেরিতে শত শত ভেজা বই ছাতা ধরে পচছে৷ তার মধ্যে যে কতো দুষ্প্রাপ্য, পুরনো বই রয়েছে, তা কেউ জানে না৷

থাইল্যান্ডের সাম্প্রতিক বন্যার ভয়াবহতার দৃশ্যছবি: AP

মানফ্রেড আন্ডের্স, অলিভার মেসারস্মিট এবং ইয়ানা মোচার্স্কি৷ থাইল্যান্ডে জার্মানির গ্যোটে ইনস্টিটিউট লাইপজিশ থেকে আনায় বই সংরক্ষণের এই তিন বিশেষজ্ঞকে৷ বলতে কি, বই বাঁচানোয় এরা জার্মানির সেরা দল বলা চলতে পারে৷ লাইপজিশের বই সংরক্ষণ কেন্দ্রটি চালু হয় নব্বই'এর দশকে, লাইপজিশ পাবলিক লাইব্রেরির অঙ্গ হিসেবে৷ পরে ২০০২ সালে উত্তর জার্মানিতে এলবে নদীর বন্যার পর দলটি বন্যার পানিতে ভেজা হাজার হাজার বহুমূল্য পুঁথি ও কেতাব পুনরুদ্ধারের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে৷ কি ২০০৪ সালে ভাইমার'এর আনা আমালিয়া লাইব্রেরিতে অগ্নিকাণ্ড, কি কোলোনে ২০০৯ সালে নগর মহাফেজখানার অংশ ধসে যাওয়া, সর্বত্রই বই, পুঁথি, দলিল বাঁচানোয় ডাক পড়েছে লাইপজিশের এই বিশেষজ্ঞ দলের৷

আয়ুত্থায় আন্ডের্স প্রথমেই প্লাস্টিকের ব্যাগে মুড়ে রাখা বইগুলোকে মুক্তি দিলেন৷ বললেন, এটা হল বই'এর পক্ষে বিষ৷ বই'এর নাকি প্রথমেই দরকার মুক্ত বাতাসের৷ মঠের ভিক্ষুরা অসহায়ভাবে মাথা নাড়লেন৷ আন্ডের্সও জানেন, থাইল্যান্ডের মানুষরা এখনও বন্যার বিভীষিকায় যেন জবুথবু হয়ে বসে আছেন৷

লাইপজিশের বিশেষজ্ঞরা এর আগে গিয়েছিলেন এক থাই লেখকের নিজস্ব লাইব্রেরি দেখতে৷ সেখানে হাজার পঞ্চাশেক বই নাকি বন্যার পানিতে ডুবে ছিল৷ তার মধ্যে ১০টি মূল্যবান বই লাইপজিশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন আন্ডের্সের দল৷ লাইপজিশে বইগুলোকে শূন্যের নীচে তাপমাত্রায় জমিয়ে আর্দ্রতা-মুক্ত করা হবে, তারপর গামা রশ্মি দিয়ে ছত্রাক ইত্যাদি মারা হবে৷ প্রক্রিয়াটির খরচ হল কিলোপ্রতি ৩৫ ইউরো৷

আয়ুত্থাতেও এলাকার নানা জায়গা থেকে লাইব্রেরিয়ানদের ডাক পড়েছে লাইপজিশের বিশেষজ্ঞদের কাজ দেখতে৷ মোচার্স্কি হাইজিনিক মাস্ক পরে একটা প্রায় শুকিয়ে আসা বই'এর ওপর পানি ঢালছেন  আর বলছেন, ‘‘বইগুলো যদি শুকনো করার পর ফ্ল্যাট না হয়, তাহলে সেগুলো আবার ভেজান৷ ভিজিয়ে আবার চাপ দিয়ে ফ্ল্যাট করুন৷ আর ছাতা সরানোর জন্য কনসেন্ট্রেটেড অ্যালকহল ব্যবহার করবেন৷'' মোচার্স্কি'র হাতে দস্তানা পরা৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ