1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

থানায় নির্যাতনের শিকার যুবকটি কে?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৯ জানুয়ারি ২০১৭

থানায় এক যুবককে নির্যাতনের ছবি ভাইরাল হয়, যা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যম৷ এ নিয়ে রুল জারি করে আদালত, যাতে যশোরের দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে হাজিরা দিয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়৷ এবার সেই যুবকের পরিচয় নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন৷

বাংলাদেশ পুলিশ
ছবি: picture-alliance/dpa

গত শুক্রবার বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক ‘প্রথম আলো' তাদের অনলাইন সংস্করণে একটি ছবিসহই পুলিশি নির্যাতনের খবরটি প্রকাশ করে৷ খবরে  বলা হয়,‘যশোরে পুলিশ এক যুবককে ধরে নিয়ে থানার মধ্যে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ নির্যাতিত যুবকের স্বজনের অভিযোগ, চাহিদামতো দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে টাকা না দেওয়াতেই এভাবে পিটিয়েছে পুলিশ৷

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘‘নির্যাতনের শিকার যুবক হলেন আবু সাঈদ (৩০)। তিনি যশোর সদর উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে৷ তাঁর স্বজন জানান, সাঈদকে ছাড়াতে দুই লাখ টাকা ঘুস দাবি করেছিল পুলিশ৷ শেষমেশ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে৷'' খবরে ঘটনাটি যশোরের কোতোয়ালি মডেল থানায় বলে উল্লেখ করা হয়৷

খবরে আরো বলা হয়, ‘‘সাঈদকে বুধবার রাতে আটক করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল৷ পরে তাঁর কাছে তিনি ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হাদিবুর রহমান দুই লাখ টাকা দাবি করেন৷''

কিন্তু পরদিনই আবু সাঈদ নামের ওই যুবক যশোর প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তাঁকে নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করেন৷ তিনি জানান, ‘‘বুধবার রাতে এলাকার একটি চায়ের দোকান থেকে পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যায়৷ পরে থানায় নিয়ে আমি দুই নম্বরি ব্যবসা করি কিনা জানতে চায়৷ আমি ওইসব দুই নম্বরি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই৷ সে কারণে পরদিন রাত ৮টার দিকে পুলিশ আমাকে ছেড়ে দেয়৷ আমাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি৷'' তিনি আরো জানান, ‘‘প্রকাশিত ছবির যুবক আমি নই৷''

 

এরপর ওই দিন বেলা দেড়টার দিকে যশোর প্রেসক্লাবে গিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন দাবি করেন, ‘‘ওই নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি৷ যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তা যাশোর কোতয়ালি থানার নয়৷'' তিনি আরো জানান, ‘‘তারপরও ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ তদন্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷'' এ সময় তিনি যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদককে অনুরোধ করেন, যে বা যারা এই ছবি দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছেন – তাদের বিরুদ্ধেও যেন ব্যবস্থা নেয়া হয়৷

সুলতানা কামাল

This browser does not support the audio element.

এদিকে রবিবার হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে এই ঘটনায় রুল জারি করে৷ রুলে যশোরের কোতোয়ালি থানায় এক যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় কেন জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়৷ বিচারপতি রেজাউল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে৷

একইসঙ্গে নির্যাতনের অভিযোগে এসআই নাজমুল ও এসআই হাদিবুরকে আগামী ২৫ জানুয়ারি আদালতে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ এছাড়া আগামী ৩০ দিনের মধ্যে যশোরের এসপিকে এ বিষয়ে তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷

মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ওই যুবক পুলিশের চাপের মুখে এখন তাকে নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন৷ আর ছবিটা তো সত্য৷ কাউকে না কাউকে তো থানায় বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে৷ তাহলে পুলিশই বলুক কাকে নির্যাতন করা হয়েছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে এরকম নির্যাতনের অভিযোগ আগেও আমরা পেয়েছি৷ এটা নতুন কোনো ঘটনা নয়৷ আর পুলিশ সুযোগ পেলেই এ সব ঘটনা ধামাচাপ দেয়ার চেষ্টা করে৷ তাই এই ঘটনার তদন্ত পুলিশকে দিয়ে নয়, অন্যকোনো কর্তৃপক্ষকে দিয়ে কারানো উচিত৷''

সুলতানা কামাল আরো বলেন, ‘‘আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলছি, পুলিশের অপরাধ তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত সংস্থা গঠন করা প্রয়োজন৷''

এদিকে ওই ছবি প্রকাশ হওয়ার পর যশোরের কোতোয়ালি থানায় সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে৷

বন্ধু, এ বিষয়ে আপনার কিছু বলার আছে? জানান নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ