দক্ষিণ আফ্রিকার প্রান্তিক শিশুদের সহায়তায় সুইটবাইক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১
প্রত্যন্ত গ্রামের শিশু-কিশোরদের পক্ষে দূরে স্কুলে যাওয়াই অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে৷ দক্ষিণ আফ্রিকার এক এনজিও সেই দূরত্ব ঘোঁচাতে এক অভিনব উদ্যোগ নিচ্ছে৷ চাঁদার উপর নির্ভর করে তারা সেই কাজ করছে৷
বিজ্ঞাপন
স্কুলে যাবার দীর্ঘ পথে পাড়ি দিয়ে এসিলে সজাদুর দিন শুরু হয়৷ পৌঁছতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে৷ সে দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের একটি গ্রামের মেয়ে৷ এই অঞ্চলে কোনো গণপরিবহণ ব্যবস্থা নেই৷ শিশুরা প্রায়ই দেরিতে স্কুলে পৌঁছায়, অথবা আদৌ স্কুলে যায়ই না৷ এসিলে ইনকুলু প্রাইমারি স্কুলে পড়ে৷
স্কুলের ডেপুটি প্রিন্সিপাল ভিকা মাডলালার মতে, বেশ কয়েকটি সমস্যার সমাধান করতে হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘দেরিতে স্কুলে আসার সমস্যা ছাড়াও স্কুলে না আসার প্রবণতাও আমাদের সামলাতে হয়৷ পথে মেয়েদের হাঁটাও একটা বিষয় বটে৷ জানেন তো, গোটা দক্ষিণ আফ্রিকায় অপরাধ এক বড় সমস্যা৷ সে কথাও ভাবতে হয়৷’’
কয়েক কিলোমিটার দূরে এক এনজিও স্থানীয় দরিদ্র পরিবারের শিশুদের পরিবহণ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছে৷ নাদিয়া এরাসমুস, আয়ান্দা মাসেনগেমি ও স্যাম ওয়েনগার ‘সুইটবাইক’ উদ্যোগের সদস্য৷
স্কুলের দূরত্ব ঘোচাতে অভিনব উদ্যোগ
02:52
সম্প্রতি সুইজারল্যান্ড থেকে আনা ৪৭০টি সেকেন্ড হ্যান্ড সাইকেল নামানো হচ্ছে৷ ডারবান শহরের প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে মারগেটের কাছে বেশ কয়েকটি স্কুলপড়ুয়াদের কাছে সেগুলি পৌঁছে দেওয়া হবে৷ আয়ান্দা মাসেনগেমি বলেন, ‘‘যখনই নতুন কন্টেনার আসে আমি শিশুর মতো উৎসাহ নিয়ে প্যাকেট খুলতে যাই৷ কন্টেনার এলে মনে হয় আমরা এই দেশে একটা পরিবর্তন নিয়ে আসছি৷ খুবই সুন্দর অনুভূতি৷’’
দুই বছর আগে যাত্রা শুরু করে সুইটবাইক এরই মধ্যে বিভিন্ন স্কুলে প্রায় ২,০০০ বাইসাইকেল পৌঁছে দিয়েছে৷ সুইটবাইকের ওয়ার্কশপে প্রত্যেকটি সাইকেল জোড়া দিতে হয় ও পরীক্ষা করতে হয়৷
চাঁদার উপর নির্ভর করে এই প্রকল্প চালানো হচ্ছে৷ টাকার অঙ্কের উপর নির্ভর করে স্যাম ওয়েনগার ও তাঁর টিম প্রতি বছর কয়েকটি কন্টেনার-ভর্তি সাইকেল আমদানি করেন৷ করোনা সংকটের কারণে সম্প্রতি সাইকেল পেতে বিলম্ব ঘটছে৷ সংগঠনের প্রতিনিধি স্যাম ওয়েনগার বলেন, ‘‘উৎসব মরসুমের আগে স্কুল বন্ধ হওয়া পর্যন্ত আমরা যত বেশি সম্ভব সাইকেল বিতরণের চেষ্টা করছি৷ এই মুহূর্তে চাপ থাকলেও আমরা সামলে নেবো৷’’
ওয়ার্কশপে পাঁচ জন শিক্ষানবিশ মিস্ত্রী কাজ করেন৷ নাদিয়া এরাসমুস সেটির দায়িত্বে রয়েছেন৷
ইয়ুলিয়া ইয়াকি/এসবি
সাইকেলে চড়ে ইউরোপের ইতিহাস দেখা
প্রায় পঞ্চাশ বছর ইউরোপ ছিল পূর্ব আর পশ্চিমে বিভক্ত৷ চরম বৈরি দুই অংশের বিভাজনরেখার প্রতীকী নাম ছিল ‘দ্য আয়রন কার্টেল ট্রেল’ বা লৌহ যবনিকা৷ সেই রেখা এখন সাইকেলে ইউরোপ ঘুরে দেখার পথ৷ চলুন দেখে আসি...
ছবি: picture-alliance/R. Hackenberg
কির্কেনেস, নরওয়ে
ঠান্ডা যুদ্ধের সেই সময়ের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে যাত্রা শুরু করতে হবে নরওয়ের কির্কেনেস শহরের কাছের এই রাস্তা থেকে৷ বন-জঙ্গলের ভেতর দিয়ে, হৃদের তীর ঘেঁষে এই পথ গিয়ে মিলেছে রাশিয়ার সীমান্তে৷
ছবি: picture-alliance
সেন্ট পিটার্সবার্গ, রাশিয়া
এই পথে প্রথম শহরের দেখা পাওয়া যাবে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে পৌঁছালে৷
১৯২৪ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত শহরটির নাম ছিল লেনিনগ্রাদ৷ এ শহরে নেভার নদীর তীরে রয়েছে দ্য হার্মিটেজ জাদুঘর৷ জাদুঘরটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে৷
ছবি: picture-alliance
তালিন, এস্তোনিয়া
সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে এস্তোনিয়ার রাজধানী তালিনে গেলে মুগ্ধ হবেন টাউন হল দেখে৷ এটিও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত৷
ছবি: picture-alliance
রিগা, লাটভিয়া
বাল্টিক অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর লাটভিয়ার রাজধানী রিগা৷এই শহরের আর্ট নুভৌ-কেও বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো৷
ছবি: picture-alliance
গদান্স্ক, পোলান্ড
বাল্টিক সাগরের তীর ধরে ধরেই এগিয়ে যায় সাইকেল৷ তাই পোলান্ডের গদানস্কে পৌঁছানোর পর মন চাইলে পানিতে টুক করে একটা ডুব দিয়ে আসতে পারেন৷ ভালোই লাগবে! এ শহর থেকেই শুরু হয়েছিল লৌহ যবনিকার পতন৷
ছবি: picture-alliance
ল্যুবেক, জার্মানি
গদান্স্ক থেকে চলে আসুন জার্মানির ল্যুবেকে৷ এ শহরে গেলে হল্সটেন্টর গেটটা দেখতে ভুলবেন না কিন্তু!
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Warnecke
পয়েন্ট আলফা, জার্মানি
ঠান্ডা যুদ্ধের সময় পয়েন্ট আলফা নামটি নিয়মিতই স্থান পেতো খবরে৷জার্মানির হেসে আর টুরিঙ্গিয়ার এই সীমান্ত অঞ্চলে সব সময়ই থাকতো টানটান উত্তেজনা৷
ছবি: picture-alliance
চেব, চেক প্রজাতন্ত্র
জার্মানির বাভারিয়া এবং স্যাক্সনির কাছেই চেক প্রজাতন্ত্রের শহর চেব৷ ৩০ হাজার অধিবাসীর এই শহরের কিছু স্থাপত্য দেখলে মনে হবে যেন মধ্য যুগের ফিরে গেছেন৷
ছবি: picture-alliance
ব্রাতিস্লাভা, স্লোভাকিয়া
সাইকেল নিয়ে এরপরে চলে যান স্লোভাকিয়ার ব্রাতিস্লাভে৷ এ শহরের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান ব্রাতিস্লাভা ক্যাসল৷১৯৯২ সালে এখানেই চূড়ান্ত হয়েছিল স্লোভাকিয়ার সংবিধান৷
ছবি: picture-alliance
সপ্রন, হাঙ্গেরি
৬০ হাজার অধিবাসীর এই শহরের টাউন হলটিও (ওপরের ছবিতে মাঝখানে) দেখার মতো৷ অনেক পর্যটকের কাছে অবশ্য ফায়ার টাওয়ার (ওপরের ছবিতে বাম দিকে) বেশি প্রিয়৷
ছবি: picture-alliance
বেলাসিকা মাউন্টেন, গ্রিস
সাইকেল চালানোর এই রুটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান গ্রিসের এই পাহাড় অঞ্চল৷ গেলে নিশ্চয়ই মুগ্ধ হবেন৷
ছবি: picture-alliance
এদির্নে, তুরস্ক
দ্য আয়রন কার্টেন ট্রেল-এর ইতিহাস দর্শন শেষ হবে তুরস্কের এই শহরে গেলে৷ রোমানদের প্রতিষ্ঠা করা এই শহরের পাশেই বুলগেরিয়ার সীমান্ত৷