1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দক্ষিণ আফ্রিকায় ঐতিহ্যগত চিকিৎসার পুনরুত্থান

১২ ডিসেম্বর ২০১৮

দক্ষিণ আফ্রিকায় জড়িবুটি ও বিভিন্ন প্রাণীর শরীরের অংশ নিয়ে ঐতিহ্যগত চিকিৎসা পদ্ধতি আজও জনপ্রিয়৷ কিন্তু বিপুল চাহিদার ফলে প্রয়োজনীয় ঔষধি গাছপালা হারিয়ে যাচ্ছে৷ এক অভিনব প্রকল্পের মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে৷

Jemen Insel Sokotra Drachenbaum
ছবি: picture-alliance/Wildlife/S. Muller

দক্ষিণ আফ্রিকার অনেক বড় জনপদে এমন হাট বসে, যেখানে আফ্রিকার চিরায়ত পদ্ধতির চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় সব উপকরণ সংগ্রহ করতে পারেন৷ সেখানে  জড়িবুটি, ছাল, শিকড় ও বিভিন্ন প্রাণীর শরীরের এমন সব অংশ পাওয়া যায়, যেগুলির বিশেষ নিরাময় ক্ষমতা আছে বলে অনেকে বিশ্বাস করেন৷

মাশালা এচেনি কা কুমালো নামের সাংগোমা বা চিকিৎসকও এখানে উপকরণ সংগ্রহ করতে এসেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন লক্ষ্যে এই জড়িবুটি ব্যবহার করি৷ যেমন অশুভ আত্মা তাড়াতে অথবা সৌভাগ্য ফিরিয়ে আনতে৷ সত্যি বলতে কি, এ সব জড়িবুটি কোথা থেকে আসে, আমি তা জানি না৷ কোথায়, কীভাবে তা চাষ হয়, তাও আমার জানা নেই৷''

বিপুল চাহিদা, জোগানের সমস্যা

এমন উদাসীনতার পরিণাম সুখকর নয়৷ বর্ধিষ্ণু শহর ও গ্রামের বিপুল চাহিদা পূরণ করতে দক্ষিণ আফ্রিকায় লাগামহীনভাবে অনেক ঔষধি গাছ সংগ্রহ করা হয়৷ এককালে পেপারবার্ক বা গোলমরিচের গাছ গোটা দেশে ছড়িয়ে থাকলেও এখন সেটি লুপ্তপ্রায় হয়ে উঠেছে৷

সাংগোমা-রা মূলত এই গাছের ছাল ব্যবহার করেন৷ সর্দিকাশি ও ফুসফুসে সংক্রমণসহ অন্য কিছু রোগ নিরাময়ে সেটি কাজে লাগানো হয়৷ কিন্তু ছাল ছাড়িয়ে নিলে গাছ মরে যায়৷ দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রুগার জাতীয় পার্কে সামান্য কয়েকটি গাছ এখনো অবশিষ্ট রয়েছে৷ রেঞ্জার হিসেবে সাইমন চাউকে বলেন, ‘‘আমাদের গোলমরিচের গাছ সংরক্ষণ করতে হবে৷ চোরাশিকারিরা ক্রুগার পার্কে প্রবেশ করে গাছের ছাল, শাখাপ্রশাখা ও শিকড় চুরি করে৷ তারা বিশাল মুনাফা করে, কারণ ক্রুগার পার্কের বাইরে পেপারবার্ক এর মধ্যেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে৷''

চারাগাছের নার্সারি

ক্রুগার পার্কে এক নার্সারিতে অতি যত্ন সহকারে চারাগাছের বংশবৃদ্ধি করা হচ্ছে৷ মিউরেল বালোয়ি ও কারিন হানওয়েগ বেশ কয়েক বছর ধরে এই প্রকল্প দেখাশোনা করছেন৷ প্রকৃতির কোলে তাঁরা আর চারাগাছ সংগ্রহ করতে পারেন না৷ কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের কারিন হানওয়েগ বলেন, ‘‘জঙ্গলে পেপারবার্ক গাছ ফল অথবা বীজ উৎপাদন করে না৷ তবে আমরা প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরে তা খুঁজে পেয়েছি৷ এই নার্সারিতে সেই গাছ একটু বড় হলে স্থানীয় সমাজে বিলিয়ে দেওয়া হয়৷''

এই এলাকায় এমন গাছে কেন আর বীজ হয় না, তা কেউ জানে না৷ গত কয়েক বছরে আরও গরম ও শুষ্ক আবহাওয়া এর কারণ হতে পরে৷

এই নার্সারি এর মধ্যে প্রায় ১৩,০০০ গাছ পার্কের আশেপাশের অঞ্চলে বিলিয়ে দিয়েছে৷ লুইজ সোয়েমার ও রোজি মাখুবেলা আরও একঝাঁক চারাগাছ নিয়ে এক গ্রামে গেছেন৷ সেখানে তাঁরা এক ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছেন৷ জঙ্গলের মধ্য দিয়ে কয়েক ঘণ্টা পাড়ি দিতে হয়৷

সাংগোমাদের সহায়তা

পার্কের সীমান্তে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ বসবাস করেন৷ চিকিৎসার প্রয়োজনে তাঁদের মূলত সাংগোমা-দের দ্বারস্থ হতে হয়৷ সমাজে তাঁদের যথেষ্ট প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে৷ রোজি মাখুবেলা নিজেও একজন সাংগোমা৷ লুইজ সোয়েমার পার্কের প্রশাসনিক বিভাগে কাজ করেন৷

ওয়ার্কশপে শুধু সাংগোমা-রাই অংশ নিচ্ছেন৷ যথেষ্ট আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কারণ মুক্ত প্রকৃতিতে তাঁরা আর জড়িবুটি খুঁজে পাচ্ছেন না৷ পেশাদারী চোরাই সংগ্রহকারীরা আগেই সবকিছু লুট করে নিয়েছে৷ সানপার্কস সংগঠনের লুইজ সোয়েমার বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে আমরা তাদের পেশার খাতিরে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করেছি৷ আমরা যে সব গাছ গজাচ্ছি, সেগুলি বাজারে এনে সহজলভ্য করে তোলার বিভিন্ন পথ এবার খতিয়ে দেখছি৷''

সাঙ্গোমা-দের সঙ্গে আলোচনার পর লুইজ ও রোজি ৬ বছর আগে প্রথম ওয়ার্কশপের এক অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন৷ রোজ চাউকে সে সময়ে চারাগাছ পেয়েছিলেন৷ এখন সেগুলি বড় গাছ হয়ে উঠেছে এবং প্রকল্পের বেড়ে চলা সাফল্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে৷

ফ্রাংকেনফেল্ড/শ্নাইডার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ