দক্ষিণ এশিয়ায় চার দশকে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস
Sanjiv Burman১৫ এপ্রিল ২০২০
কোভিড-১৯ মহামারির বিস্তার অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশ ও ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার আট দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গত চার দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ বছর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গড়ে ১ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসতে পারে৷ অথচ ছয় মাস আগের দেওয়া পূর্বাভাসে এই প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হবে বলা হয়েছিল।
রোববার প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ প্রতিবেদনে বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি এ পূর্বাভাস দেয়।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনীতি ভারতের। ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া নতুন অর্থবছরে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ হতে পারে।
বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার সরকারি প্রাক্কলনের অর্ধেকেরও বেশি কমে ২ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে নেমে আসতে পারে। তবে সেটাও নির্ভর করছে করোনা সংকট মোকাবিলায় উপর।
বিশ্বব্যাংক বলছে, এই মহামারীর বিস্তার ও স্থায়িত্বের উপর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি নির্ভর করবে। আপাতত গত ৭ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের সরকারি তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘২০১৯ সালের শেষ দিকে দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক উন্নতির যে ধারা লক্ষ্য করা গিয়েছিল বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস সংকটের নেতিবাচক প্রভাবে তা নষ্ট হয়ে গেছে।’’
লকডাউন মানাতে দেশে দেশে পুলিশের তৎপরতা
অসচেতনতা এবং ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে বিশ্বের অনেক দেশেই কিছু মানুষ বাইরে ঘোরাফেরা করে সবার জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করছেন। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হয়েছে পুলিশ। দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Reuters/P. Ravikumar
মোগাদিসু, সোমালিয়া
আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ার কিছু মানুষ এখনো করোনা ভাইরাসের বিপদটা ঠিক বুঝতে পারছেন না। লকডাউন না মেনে তাই অনেকে আনন্দে মেতেছিলেন রাজধানী মোগাদিসুর লিডো সৈকতে। তাদের অস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখিয়ে ঘরে পাঠায় পুলিশ।
ছবি: Reuters/F. Omar
জেরুসালেম
জেরুসালেমে কট্টর ইহুদিরাও লকডাউন মানতে চাননি। তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর হতে হয়েছে পুলিশকে।
ছবি: Reuters/R. Zvulun
ব্রাইটন, ব্রিটেন
বৃটেনের ব্রাইটন শহরে লকডাউন না মানা একজনকে বুঝিয়ে ঘরে পাঠাচ্ছে পুলিশ।
ছবি: Reuters/P. Cziborra
গুয়াতেমালা সিটি, গুয়াতেমালা
মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়াতেমালার রাজধানী গুয়াতেমালা সিটির কিছু মানুষ আরো বেপরোয়া। কারফিউ অমান্য করে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন তারা। হাতকড়া পরিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় তাদের।
ছবি: Reuters/L. Echeverria
লস এঞ্জেলেস, যুক্তরাষ্ট্র
করোনা ভাইরাসের কাছে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রও বড় অসহায়। মৃত্যুর মিছিল নেমেছে সে দেশে। তারপরও টনক নড়েনি অনেকের। নিজের প্রতি, দেশের প্রতি দুর্যোগের সময়ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে ব্যর্থ কিছু মানুষকে তিরস্কার করছে লসএঞ্জেলেসের পুলিশ।
ছবি: Reuters/K. Grillot
চেন্নাই, ভারত
ভারতের কিছু শহরে লকডাউন না মানা মানুষদের প্রতি পুলিশের আচরণ খুব নির্মম মনে হয়েছে অনেকের কাছে। ছবিতে চেন্নাইয়ের কিছু মানুষকে কান ধরে ওঠবস করাচ্ছে পুলিশ।
ছবি: Reuters/P. Ravikumar
কাঠমান্ডু, নেপাল
নেপালের রাজধানীতেও কিছু মানুষ লকডাউন মানতে নারাজ। করোনা ভাইরাসের কবল থেকে বাঁচতে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনেই তাদের একজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
ছবি: Reuters/N. Chitrakar
আহমেদাবাদ, ভারত
আহমেদাবাদে শুধু পুলিশ দিয়ে কাজ হয়নি। তাই অসচেতন মানুষদের নিয়ম মানতে বাধ্য করার কাজে নেমেছে বিশেষ বাহিনী।
ছবি: Reuters/A. Dave
মস্কো, রাশিয়া
করোনা ভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণ এড়াতে রাজধানী মস্কোয় আংশিক লকডাউন ঘোষণা করেছিল রুশ সরকার। রেড স্কয়ারে সে আদেশ অমান্য করা দুই পথচারীর মুখোমুখি এক পুলিশ কর্মকর্তা।
ছবি: Reuters/M. Shemetov
ব্যাংকক, থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডের রাজধানীতেও সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হয়। এক মোটর সাইকেল আরোহীকে লকডাউনের সময়ে যাবতীয় করণীয় বুঝিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।
ছবি: Reuters/J. Silva
রিও ডি জেনেইরো, ব্রাজিল
ব্রাজিলের কিছু মানুষ করোনা ভাইরাসকে পাত্তা না দিয়ে সূর্যস্নান করছিল। এই দুর্যোগের সময় ঘরে স্নান করার উপকারিতা বোঝাচ্ছে পুলিশ!
ছবি: Reuters/L. Landau
কেপটাউন, সাউথ আফ্রিকা
সাউথ আফ্রিকায় সাধারণ মানুষকে লকডাউন মানাতে একসঙ্গে কাজ করছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
ছবি: Reuters/M. Hutchings
ঢাকা, বাংলাদেশ
ঢাকার রাস্তায় এক ব্যক্তিকে কান ধরে ওঠবস করাচ্ছে পুলিশ৷
ছবি: DW/H. U. R. Swapan
13 ছবি1 | 13
ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশে, নেপাল ও ভুটানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি রেখা খাড়াভাবে (শার্প ফল) নিচের দিকে নেমে যাবে।
বাকি চার দেশ শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মালদ্বীপে প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়ে যেতে পারে।
আফগানিস্তান (মাইনাস ৫ দশমিক ৯ থেকে মাইনাস ৩ দশমিক ৮ শতাংশ), মালদ্বীপ (মাইনাস ১৩ শতাংশ থেকে মাইনাস সাড়ে ৮ শতাংশ), পাকিস্তান (মাইনাস ২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে মাইনাস ১ দশমিক ৩ শতাংশ) ও শ্রীলঙ্কা (মাইনাস ৩ শতাংশ থেকে মাইনাস দশমিক ৫ শতাংশ)।
বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করে নিজ দেশের জনগণকে সুরক্ষা দেওয়াকে প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ দরিদ্র মানুষেরাই সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে থাকেন।
এসএনএল/কেএ(রয়টার্স)
করোনা ঠেকাতে বলিউড তারকাদের আর্থিক অনুদান
ভারতে করোনা মোকাবিলায় কোন কোন বলিউড তারকা অর্থদান করলেন, দেখুন ছবিঘরে…
ছবি: AFP/Getty Images/I. Mukherjee
অক্ষয় কুমার
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি করোনা মোকাবিলায় একটি বিশেষ তহবিল ঘোষণা করেন। এরপর বেশ কয়েকজন বলিউড তারকা এই তহবিলে অর্থদান করেছেন। এখন পর্যন্ত এই তহবিলে সবচেয়ে বড় অঙ্ক দান করেছেন অভিনেতা অক্ষয় কুমার। তিনি দিয়েছেন মোট ২৫ কোটি ভারতীয় রুপি।
ছবি: UNI
শাহরুখ খান – জুহি চাওলা
প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে শাহরুখের দান করা কোনো অঙ্কের খোঁজ না পাওয়া গেলেও, টুইটারে তিনি জানান, শীঘ্রই টাকা পাঠাতে চলেছে তার ও জুহি চাওলার যৌথ ব্যবসায়িক সংস্থা ‘রেড চিলিজ’। শাহরুখ আরো জানান, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের সরকারকে ৫০ হাজার পিপিই দিচ্ছেন তাঁরা। পাশাপাশি এক মাসের জন্য প্রায় ১৫ হাজার পরিবারের অন্নসংস্থানের দায়িত্বও নেবেন শাহরুখ-জুহি।
ছবি: Getty Images/AFP/Stringer
সালমান খান
শাহরুখের মতোই অভিনেতা সালমান খানও সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে অর্থদান করেননি। তিনি মুম্বাই চলচ্চিত্রে কর্মরত ২৫ হাজার দিনমজুরের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে পারেন৷
ছবি: DW/S. Zain
রজনীকান্ত
দক্ষিণী চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী অভিনেতা রজনীকান্ত প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে ৫০ লাখ রুপি দান করেছেন। শুধু তাই নয়, দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমাজগতে কর্মরত দিনমজুরদের জন্যেও অর্থ সাহায্য করেছেন তিনি।
ছবি: Getty Images/AFP/A. Sankar
ক্যাটরিনা কাইফ
ক্যাটরিনা কাইফ জানিয়েছেন, তিনি ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে ও মহারাষ্ট্রের রাজ্যভিত্তিক তহবিলে অর্থ দান করেছেন। টাকার অঙ্ক জানা যায়নি৷
ছবি: AP
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাস
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও তাঁর মার্কিন স্বামী, গায়ক নিক জোনাস প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে অর্থদান করেছেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু দানের অঙ্ক প্রকাশ করেননি৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Jaiswal
অনুষ্কা শর্মা-বিরাট কোহলি
অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মা ও তাঁর ক্রিকেটার স্বামী বিরাট কোহলি ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী তহবিলে তাঁদের অর্থদানের কথা। টাকার অঙ্ক তারাও জানাননি।
ছবি: IANS
শিল্পা শেঠি
অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি ও তাঁর শিল্পপতি স্বামী রাজ কুন্দ্রা ২১ লাখ রুপি দান করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে।
ছবি: Getty Images/AFP
কারিনা কাপুর- সাইফ আলি খান
কারিনা ও অভিনেতা সাইফ আলি খানও অর্থের অঙ্ক প্রকাশ করেননি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের অর্থসাহায্যের কথা নিশ্চিত করেছে এই দম্পতি।
ছবি: AFP/Getty Images/S. Jaiswal
কঙ্গনা রানাওয়াত
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর 'ফ্যান' হিসেবে পরিচিত অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত মোট ২৫ লাখ ভারতীয় রুপি দান করেছেন।
ছবি: STRDEL/AFP/Getty Images
তরুণদের দায়বদ্ধতা
বলিউডের তরুণ প্রজন্মের অভিনেতাদের অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে অর্থদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এরমধ্যে রয়েছেন ভিকি কৌশাল (এক কোটি রুপি), বরুণ ধাওয়ান (৩০ লাখ রুপি), কার্তিক আরিয়ান (এক কোটি রুপি), রাজকুমার রাও, সোনম কাপুর, আলিয়া ভাট, সারা আলি খান।