উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মুন জে-ইনে এপ্রিলে লিডার্স সম্মেলনে বৈঠক করার পরিকল্পনা করছেন৷ তার আগে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে আলোচনার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে উত্তর কোরিয়া৷
বিজ্ঞাপন
১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধের অবসানের পর দুই কোরিয়ার নেতাদের মধ্যে এটা হবে তৃতীয় বৈঠক৷ মার্চের ২৯ তারিখে দুই কোরিয়ার কর্মকর্তারা এপ্রিলের সম্মেলনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন৷ মূলত দুই দেশের নেতাদের বৈঠকে কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে সেটা নির্ধারণ করবেন কর্মকর্তারা৷ শনিবার এসব তথ্য জানিয়েছে সউল৷
২৯ তারিখের বৈঠকটি হবে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্তের গ্রাম পানমুনজমে৷ দক্ষিণ কোরিয়ার তিনজনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির পুনরেকত্রীকরণ মন্ত্রী চো মিঅং ইয়োন৷ আর উত্তর কোরিয়ার দলটির নেতৃত্বে থাকবেন কোরিয়ান অ্যাফেয়ার্স এজেন্সির চেয়ারম্যান রি সোন উওন৷ প্রতিনিধি দলের বৈঠকে লিডার্স সামিট বা সম্মেলনের বিষয় এবং কোথায় তা অনুষ্ঠিত হবে এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে৷ এপ্রিলের শেষ নাগাদ এ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে৷
যেসব দেশের কারণে টিকে আছে উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরও এমন কয়েকটি দেশ আছে যারা উত্তর কোরিয়া থেকে পণ্য বা অস্ত্র আমদানি করে৷ চলুন দেখে নিই কোন দেশগুলো আছে এই তালিকায়৷
ছবি: Gianluigi Guercia/AFPGetty Images
অ্যাঙ্গোলা
আফ্রিকার এই দেশটির প্রেসিডেন্সিয়াল নিরাপত্তারক্ষীদের মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ দেয় উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: Gianluigi Guercia/AFPGetty Images
চীন
চীন উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেশ৷ চীনের শিল্পকারখানায় উত্তর কোরিয়ার অনেক নাগরিক কাজ করে৷ চীনে উত্তর কোরিয়ান অনেক রেস্তোরাঁও রয়েছে, যেখান থেকে উত্তর কোরিয়া বিদেশি মুদ্রা অর্জন করে৷
ছবি: Getty Images/K. Frayer
কঙ্গো
কঙ্গোর সরকার উত্তর কোরিয়া থেকে স্বয়ংক্রিয় পিস্তল এবং অন্য ছোট অস্ত্র আমদানি করে, যা মধ্য আফ্রিকার এই দেশটির প্রেসিডেন্সিয়াল দেহরক্ষী এবং পুলিশ ব্যবহার করে৷
ছবি: Reuters/R. Carrubba
মিশর
অভিযোগ রয়েছে, উত্তর কোরিয়া মিশরকে ক্ষেপণাস্ত্রের উপকরণ পাঠিয়েছে৷ এ অভিযোগ সত্য কিনা সে ব্যাপারে তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: Reuters/Amr Abdallah Dalsh
ইরিত্রিয়া
ইরিত্রিয়া আফ্রিকার ছোট একটি দেশ৷ এই দেশটিরও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে৷ জানা গেছে, তারা উত্তর কোরিয়া থেকে সামরিক উপকরণ কিনে থাকে৷
ছবি: DW
কুয়েত
উত্তর কোরিয়ার অনেক শ্রমিক কুয়েতে নির্মাণ কাজে যুক্ত আছে৷ কুয়েতে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাসও আছে৷
ছবি: Imago/Xinhua
মোজাম্বিক
উত্তর কোরিয়া মোজাম্বিককে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সহযোগিতা করছে৷ এছাড়া ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণেও সহায়তা দিচ্ছে দেশটিকে৷
ছবি: Gianluigi Guercia/AFP/Getty Images
নামিবিয়া
দক্ষিণ পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশে সমরাস্ত্র উপকরণ তৈরি করার একটি কারখানা স্থাপনের জন্য উপকরণ এবং কর্মী পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: DW/B. Osterath
নাইজেরিয়া
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় উত্তর কোরিয়া থেকে অনেক চিকিৎসক যান৷ ২০১৩ সালে এক সন্ত্রাসী হামলায় উত্তর কোরিয়ার তিন চিকিৎসক নিহত হয়েছিলেন সেখানে৷
ছবি: picture alliance /AP Photo/L. Oyekanmi
ওমান
ওমানে নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে কাজ করার জন্য উত্তর কোরিয়া তাদের শ্রমিক পাঠিয়ে থাকে৷
ছবি: SR
কাতার
কাতারেও নির্মাণ প্রকল্পে উত্তর কোরিয়ার অনেক শ্রমিক কাজ করে৷ ২০২২ সালে দেশটিতে ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে৷ এজন্য সেখানে স্টেডিয়ামসহ বড় বড় স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Zumapress
সুদান
উত্তর কোরিয়া সুদানে যেসব সামরিক উপকরণ পাঠায়, তার মধ্যে রকেট কন্ট্রোল সেকশন এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Shazly
সিরিয়া
দীর্ঘ সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলা দেশটিও উত্তর কোরিয়ার উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম৷ জানা গেছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সরকার উত্তর কোরিয়া থেকে অনেক সমরাস্ত্র এবং উপকরণ কিনে থাকেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Press Service of the President
উগান্ডা
আফ্রিকার দেশ উগান্ডারও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে৷ উত্তর কোরিয়ার সেনারা উগান্ডায় বিমানবাহিনীর পাইলট এবং টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন৷
ছবি: AP
সংযুক্ত আরব আমিরাত
ইউএই-তে উত্তর কোরিয়ার অনেক রেস্তোরাঁ এবং নির্মাণ কোম্পানি রয়েছে, যেখানে কাজ করার জন্য সবসময়ই উত্তর কোরিয়া থেকে কর্মী পাঠানো হয়৷ এছাড়া উত্তর কোরিয়া থেকে স্কুড মিসাইল কিনে থাকে সংযুক্ত আরব আমিরাত৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/A. Widak
15 ছবি1 | 15
১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত দুই কোরিয়ার মধ্যে যে যুদ্ধ হয়েছিল, এরপর মাত্র দুই বার দুই দেশের নেতারা সাক্ষাৎ করেছিলেন৷প্রথমটি হয় ২০০০ সালে৷ সেই সময় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম দায়ে-জুং উত্তর কোরিয়ার তৎকালীন নেতা কিম জং ইলের সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ে বৈঠক করেন৷ এরপর ২০০৭ সালের অক্টোবরে কিম জং ইলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোহ মু-হিয়ুন৷
মার্চের শুরুর দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে এই বৈঠকের ব্যাপারে জানানো হয়৷ গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকের সময় বোন জংকে প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে পাঠিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা৷ এরপর থেকেই দু'দেশের মধ্যকার সম্পর্কে উন্নয়নের আভাস দেখা দিয়েছে৷
অন্যদিকে মে মাসের শেষের দিকে অন্য একটি সম্মেলনে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সাথে বৈঠকের কথা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের৷