দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলে আছড়ে পড়লো টাইফুন হিন্নামনর। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সমুদ্র উত্তাল হয়েছে। প্রবল ঝড় ও বৃষ্টি হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরকম শক্তিশালী ঝড় গত কয়েক দশকে সেখানে আসেনি। কয়েক সপ্তাহ আগেই সিওল-সহ অন্য এলাকায় প্রবল বৃষ্টি ও বন্যার ফলে অন্ততপক্ষে ১৪ মারা গেছেন।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাতটা নাগাদ এই ঘূর্ণিঝড়আছড়ে পড়ে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে, তীব্র গতিতে ঝড় হচ্ছে, সমুদ্রে বিশাল বিশাল ঢেউ উঠেছে।
ঝড়ের তাণ্ডবে প্রচুর গাছ পড়ে গেছে। ২০ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন। তিন হাজার ৪৬৩ জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একজন নিখোঁজ।
ছয়শর বেশি স্কুল বন্ধ রাখাহয়েছে। ২৫০টিরও বেশি বিমান বাতিল করা হয়েছে। ৭০টি ফেরি সার্ভিস বন্ধ। ৬৬ হাজার মাছ ধরার নৌকা নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার অবস্থা
উত্তর কোরিয়াও ক্ষতি এড়াতে ব্যবস্থা নিয়েছে। দুই দিন ধরে সেখানে বৈঠক হয়েছে। তাতে কিম জং উন উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, বাঁধ থেকে জল ছাড়া হবে।
তবে দক্ষিণ কোরিয়া বারবার অনুরোধ করেছিল জল ছাড়ার আগে তাদের আগে থেকে জানানোর জন্য। কিন্তু উত্তর কোরিয়াসেই অনুরোধের কোনো জবাব দেয়নি।
ঘূর্ণিঝড় উত্তরপূর্বে যাচ্ছে এবং মাঝরাতে তা জাপানে আছড়ে পড়তে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ৮০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত
দক্ষিণ কোরিয়ার সৌল ও আশেপাশের এলাকায় গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকা ডুবে গেছে৷ এখন পর্যন্ত নয়জন মারা গেছেন৷ বার্তা সংস্থা ইয়নহাপ বলছে, দেশটিতে গত ৮০ বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে৷
ছবি: Kyodo News/IMAGO
৮০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত
আবহাওয়া অফিস বলছে, সৌলে সোমবার থেকে বুধবার সকাল সাতটা পর্যন্ত ৫২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে৷ আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে৷ বার্তা সংস্থা ইয়নহাপ বলছে, দেশটিতে গত ৮০ বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে৷
ছবি: Yonhap/REUTERS
নিহত ৯
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত সৌলে কমপক্ষে পাঁচজনসহ মোট নয়জন প্রাণ হারিয়েছেন৷ এছাড়া কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়েছেন৷ এখনও নিখোঁজ আছেন সাতজন৷
ছবি: Kyodo News/IMAGO
গ্যাংনাম এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত
২০১২ সালে ইউটিউবে ঝড় তোলা ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ গানের কথা মনে আছে? সৌলের অভিজাত এলাকা হচ্ছে গ্যাংনাম৷ সোমবার সেখানে ৩২৬.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়৷ ছবিতে গ্যাংনাম এলাকা দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Hwang Kwang-mo/Yonhap/AP/picture alliance
জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী
প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইয়ল রেকর্ড বৃষ্টিপাতের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন৷ তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর অঙ্গীকার করেছেন৷
ছবি: Yonhap/REUTERS
ক্ষতিগ্রস্ত ভবন
এখন পর্যন্ত বন্যায় কমপক্ষে ২,৮০০ সরকারি ও বেসরকারি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ ১,১০০-র বেশি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছেন৷
ছবি: Yonhap/YNA/picture alliance
সাবওয়ে, হাইওয়েতে পানি
বন্যার কারণে সৌলের অনেক সাবওয়ে ও হাইওয়েতে পানি উঠে গিয়েছিল৷ বুধবার তাদের অনেকগুলো থেকে পানি নেমে গেছে৷
ছবি: Yonhap/REUTERS
নিমজ্জিত পার্ক
সৌলের হান নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে গিয়ে তীরের পার্ক ডুবে গেছে৷