দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ প্রায় শেষের দিকে৷ আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্টের নাম জানা যাবে৷ মে মাসে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন৷
বিজ্ঞাপন
শাসক দল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হয়েছেন লি জে-মিয়ুং৷ আর বিরোধী রক্ষণশীল দল পিপল পাওয়ার পার্টির প্রার্থীর নাম ইয়ুন সুক ইওল৷
দুজনেরই জনপ্রিয়তা এত কম যে স্থানীয় গণমাধ্যমে এবারের নির্বাচনকে ‘দুই অজনপ্রিয় প্রার্থীর' মধ্যে নির্বাচন বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে৷
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় ৯০ শতাংশ ভোটার একটি নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করেন৷ ফলে বাকি ১০ শতাংশ তরুণ ভোটাররা যাকে ভোট দেবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট হবেন বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন৷
তরুণ ভোটারেরা রাজধানী সৌলের বাসা ভাড়ার ঊর্ধ্বগতি, সামাজিক বৈষম্য ও বেকারত্ব নিয়ে চিন্তিত৷ তাই দুই প্রার্থী নির্বাচনি ইশতাহারে তাদের মতো করে এসব বিষয় সমাধানের অঙ্গীকার করেছেন৷ কিন্তু এ পর্যন্তই৷ নির্বাচনি প্রচারণার সময় কেউই এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেননি৷ বরং তারা একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন৷ প্রার্থীদের ‘পশু', ‘পরজীবী' ইত্যাদি নামে ডাকা হয়েছে৷
চুংনাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হিয়োবিন লি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নীতি নিয়ে আলোচনা হয়নি৷ প্রার্থীরা শুধুমাত্র একে অপরের সমালোচনা করেছেন৷ যেমন তারা একজনের স্ত্রী বা তার সন্তানের বাজে আচরণ নিয়ে কথা বলেছেন৷'' তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি সমাজে বৈষম্য নিয়ে উদ্বিগ্ন, বেকারত্ব, সম্পদের পুনর্বণ্টন ইত্যাদি নিয়ে চিন্তিতি৷ কিন্তু প্রার্থীরা এসব বিষয়ে তেমন মনোযোগ দেননি৷''
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নেতৃত্বে যে নারীরা
বিশ্বের কয়েকজন নারী নিজেদের অবস্থান থেকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS/W. Berrazeg
আঙ্গেলা ম্যার্কেল
‘জার্মানির ৬০ ভাগ নাগরিক করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন’ সরাসরি এমন মন্তব্য করে প্রথমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনামে এসেছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর৷ তারপর করোনা সংকটকে জার্মানির জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে বর্ণনা করে দেশবাসীকে সতর্ক করে দেন ম্যার্কেল৷সংকট মোকাবেলায় তার সব পদক্ষেপের প্রশংসা হচ্ছে৷ করোনায় কম মৃত্যুহারের জন্য জার্মানির প্রশংসার সময়ও আসছে তার নাম৷
ছবি: Reuters/M. Schreiber
মারলিন আড্ডো
জার্মানির হামবুর্গ-এপেনডর্ফ মেডিকেল সেন্টারে নিজের দলের সঙ্গে কোভিড ১৯ ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টায় ব্যস্ত এখন মারলিন আড্ডো৷ ভায়রোলজিস্ট মারলিন এর আগে ইবোলা ভাইরাস এবং মার্স করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন৷
ছবি: Privat
জাসিন্ডা আর্দার্ন
প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দার নেতৃত্বে করোনাভাইরাসকে এখনো হুমকি হতে দেয়নি নিউজিল্যান্ড৷ প্রথমে সীমান্ত বন্ধ করে দেন তিনি৷ বিদেশ থেকে আসা প্রায় বন্ধ করে ঘোষণা দেন, কেউ এলে তাকে সেল্ফ কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে দুই সপ্তাহ৷ মাত্র ৬ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ার পরই সারাদেশে ঘোষণা করেন লকডাউন৷ ফলাফল এখনো মাত্র১০২ জনের দেহে সংক্রমণ এবং একজনেরও মৃত্যু না হওয়া৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/N. Perry
জুং ইউন কিয়ং
দক্ষিণ কোরিয়ার সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরিচালক তিনি৷ তবে এই পরিচয় ছাপিয়ে এখন সবাই তাকে'জাতীয় বীর' হিসেবে চেনে৷ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর রাতের ঘুম ভুলে গিয়েছিলেন, সহকর্মীদের অনুরোধেও অফিস ছাড়তে চাইতন না৷ সবার জন্য করোনা-পরীক্ষা নিশ্চিত করায় আন্তরিক পদক্ষেপ নিয়ে সংকট নিয়ন্ত্রণে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই নারী৷
ছবি: picture-alliance/Yonhapnews Agency
মেটে ফ্রেদেরিকসেন
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী নিজের দেশে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি অবলম্বন করে আসলে ইউরোপকেও পথ দেখিয়েছেন৷ মার্চের মাঝামাঝি থেকেই করোনা সংক্রমণ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি৷
ছবি: Reuters/Ritzau Scanpix
সাই ইং-ওয়েন
তার দেশ তাইওয়ানে করোনাভাইরাস ভয়াবহ সংকটের জন্ম দেবে বলে আশঙ্কা ছিল বিশেষজ্ঞদের৷ কিন্তু চীনে সংক্রমণ বাড়া শুরু হতেই চীন, হংকং এবং ম্যাকাও থেকে কারো তাইওয়ানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে তার সরকার৷ তারপর পর্যায়ক্রমে নেয়া হয় কর্নার সংক্রমণ রোধের আরো কিছু কঠোর পদক্ষেপ৷ তার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে তাইওয়ানে করোনাভাইরাস এখনো বড় আতঙ্ক হয়ে ওঠেনি৷
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS/W. Berrazeg
6 ছবি1 | 6
সৌল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক পার্ক সাইং-ইনও নীতি ও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে পর্যাপ্ত আলোচনা না হওয়ায় হতাশ৷ ‘‘এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় যে এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, একজন ভোটার কোন প্রার্থীকে একটু কম অপছন্দ করেন,'' বলেন তিনি৷ পার্ক সাইং-ইন বলেন, ‘‘আমার কাছে এটা বিপজ্জনক মনে হয় যখন ভোটাররা গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ কিংবা সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত স্ক্যান্ডালের ভিত্তিতে ভোট দেন৷''
শাসক দল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী লি জে-মিয়ুং উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বর্তমান প্রেসিডেন্টের নেয়া উদ্যোগের ধারাবাহিকতা রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন৷ তিনি বেইজিং ও ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে চান৷
অন্য প্রার্থী ইয়ুন সুক ইওল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করতে চান৷ আর উত্তর কোরিয়ার ব্যাপারে ‘শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যে শান্তি' স্থাপনের পক্ষে তিনি৷