দক্ষিণ জার্মানিতে প্রবল বন্যা, বাঁধ ভাঙলো, ত্রাণশিবিরে মানুষ
৩ জুন ২০২৪শনিবার ভোর ছয়টা থেকে ছুটছেন তোবিয়াস কুনজ। তিনি নর্ডেনডর্ফের মেয়র। দক্ষিণ জার্মানির এই ছোট শহরে দুই হাজার ছয়শ মানুষ থাকেন। সেই শহরে বন্যার জল ঢুকে গেছে। .আর মেয়র তিনশ স্বেচ্ছাসেবককে নিয়ে দিনরাত শহর বাঁচানোর জন্য লড়ে যাচ্ছেন।
ডিডাব্লিউকে তিনি বললেন, ''আমরা ৪০ হাজার বালির বস্তা দিয়ে ২৪০ মিটার বাঁধ বানাবার চেষ্টা করেছি। কিছু স্বেচ্ছাসেবক গত ৪০ ঘণ্টা ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। দুই চোখের পাতা এক করেননি। কিন্তু নদীর জল অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।"
স্বেচ্ছাসেবকরা একটার পর একটা বালির বস্তা ফেলছিলেন। তাদের কাজের দেখভাল করছিলেন মেয়র। তিনি ম্লান হেসে বললেন, স্কুল সোমবার বন্ধ থাকবে। কিন্তু তিনি হতাশার সঙ্গে বলছিলেন, ''নতুন খেলার মাঠের কাছে বাঁধ ভেঙে গেছে। আমদের লড়াই সেখানে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন করে সবকিছু ঠিক করতে প্রচুর অর্থ লাগবে। পুরো পরিকাঠামো ভেসে গেছে। স্কুল ও হস্টেলের নিকাশি ব্যবস্থা কাজ করছে না। পড়ুয়ারা টয়লেটে যেতে পারছে না।''
অন্য জায়গায় অবস্থা
নর্ডেনডর্ফের বাকি এলাকার অবস্থাও খারাপ। গোটা ১২ গ্রাম থেকে মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে। গোটা মাসে যা বৃষ্টিপাত হয়, তা একদিনে হয়েছে। ফলে নদীতে জলস্তর খুবই বেড়ে গেছে।
বাভারিয়া এবং বাডেন উইরটেমবার্গ সপ্তাহান্তের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত। একজন দমকলকর্মী মারা গেছেন। একজন নিখোঁজ।
অনেকেই এরকম বন্যার তাণ্ডবে রীতিমতো অবাক হয়ে গেছেন। চারজন যুবকও এই ভয়াবহ বন্যা দেখে অবাক। । তারা তাদের বাড়ির কয়েক কিলোমিটার আগে দ্বিধাগ্রস্তভাবে দাঁড়িয়ে। কী করবেন বুঝতে পারছেন না। সামনে যে পরিমাণ বন্যার জল আছে, তাতে তারা বাড়ি যেতে পারছেন না। তারা একদিন ধরে বাঁধে বালির বস্তা ফেলে তা সুরক্ষিত করার কাজে ব্যস্ত ছিল। এখন তাদের বাড়ি ফেরার পথ বন্ধ। পুরো এলাকার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তারা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''আগের দিন একটি বাড়ি থেকে দুইটি গাড়ি নিয়ে পাহাড়ের দিকে রেখে আসতে পেরেছি। কিন্তু এখন আর কিছু করা সম্ভব নয়। চারদিক থেকে জল আসছে।''
রেকর্ড সময়ে ত্রাণশিবির
যাদের উদ্ধার করা হচ্ছে, তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কাছে পাশের শহরের স্পোর্টস স্টেডিয়ামে। সেখানে রিসেপশন ও এক্সিবিশন হলে তিনশটি খাট পাতা হয়েছে। রেকর্ড সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করা হয়েছে।
শিবিরে থাকা ফিশার বলছিলেন, ''আমরা জানি না, বাড়িতে কতটা জল ঢুকেছে। আমরা ভাবতে পারিনি, পরিস্থিতি এতটা খারাপ হবে। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাই।''
অলিভার পাইপার/জিএইচ/ডিডাব্লিউ