তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়তে ফিলিপাইন্সের দক্ষিণে সামরিক আইন জারি করা হয়েছে৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট৷
বিজ্ঞাপন
এদিকে, এই ঘোষণার পর মাউতে নামের একটি জঙ্গি গোষ্ঠী ঐ এলাকার একটি গির্জায় ঢুকে পুরোহিতসহ কয়েকজনকে জিম্মি করেছে৷
জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়তে সরকার যে নিরাপত্তা বাহিনী পাঠিয়েছে তাদের ফিরিয়ে না নিলে জিম্মিদের হত্যা করার হুমকি দেয়া হয়েছে৷
মঙ্গলবার বিকেলে দক্ষিণ ফিলিপাইন্সের মারাউয়ি শহরে জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের পর সামরিক আইন জারি করা হয়৷ আবু সায়াফ জঙ্গি গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা ইসনিলন হাপিলনকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছিল৷ হাপিলন ফিলিপাইন্সে আইএস-এর প্রধান৷ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকে ধরার জন্য অর্ধকোটি ডলারের পুরস্কার ঘোষণা করেছে৷
দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, আবু সায়াফ ও মাউতে ছাড়াও বেশ কিছু জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-এর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেছে৷ এদের মধ্যে বিদেশিদের জিম্মি করে অর্থ আদায়ের জন্য পরিচিত আবু সায়াফ৷ তাছাড়া দেশটিতে চালানো কয়েকটি বড় হামলার জন্যও তাদের দায়ী করা হয়৷ ২০০৪ সালে একটি ফেরিতে হামলা চালিয়ে একশ' জনের বেশি মানুষকে হত্যা করে আবু সায়াফ৷
ফিলিপাইন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়তে সামরিক আইন জারির কথা অতীতে কয়েকবার বলেছিলেন৷ দেশটির নিরাপত্তা বিষয়ক অন্যতম চিন্তার কারণ আইএস বলেও জানিয়েছিলেন তিনি৷
দেশটির প্রতিরক্ষা সচিব ডেলফিন লরেঞ্জানা বলেছেন, সামরিক আইন জারির কারণে নিরাপত্তা বাহিনী সন্দেহভাজন জঙ্গিদের অভিযোগ ছাড়াই তিনদিন পর্যন্ত ধরে রাখতে পারবে৷
মানবাধিকার কর্মীরা অবশ্য এই আইনের অপব্যবহারের আশংকা করছেন৷ এক্ষেত্রে তাঁরা স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসের আমলের উদাহরণ দিয়েছেন৷ সেই সময় স্বৈর শাসকের সমালোচকদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছিল৷ তাদের ধরে নিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছিল৷
বর্তমান প্রেসিডেন্ট দুতার্তে জানিয়েছেন, তাঁর ঘোষণা করা সামরিক আইন ‘নিষ্ঠুর’ হবে এবং মার্কোসের মতোই হবে৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি)
কারাগারের জীবন এমন ভয়ংকর!
ফিলিপাইন্সের কেসন শহরের কারাগার, যেটির অবস্থান রাজধানী ম্যানিলার খুব কাছে৷ সেখানকার বন্দিদের জীবনযাপনের ভয়াবহ চিত্র দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
খোলা জায়গায় থাকা
গারদে যাদের জায়গা হয় না, তাদের খোলা জায়গায় রাত কাটাতে হয়, যেখানে কোনো ছাদ নেই৷ এখন ফিলিপাইন্সে বর্ষাকাল৷ প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে, আর এ সময় এমন খোলা জায়গায় রাত কাটানো কতটা কষ্টকর তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
গারদে কয়েক ধাপ
একটি গারদে অনেকগুলো হ্যামক ঝোলানো আছে৷ একটি হ্যামকেও যদি জায়গা পাওয়া যায়, তাহলে তার ভাগ্য ভালো৷ ৬০ বছর আগে কারাগারটি নির্মিত হয়েছে, যেখানে থাকতে পারে ৮০০ বন্দি৷ অথচ বর্তমানে সেখানে আছে ৩,৮০০ বন্দি৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
শান্তিতে শ্বাস নেয়ার জায়গার অভাব
কারাগারের প্রতিটি ইঞ্চি পরিপূর্ণ-এক ফোটাও জায়গা যে নেই ছবি দেখলেই তা বোঝা যায়৷ বন্দিদের বেশিরভাগই পাতলা কাপড়ের উপর বা কেবল খালি মেঝেতে ঘুমিয়ে থাকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
স্বাস্থ্যের দিকে নজর
ব্যায়ামাগারে এক বন্দি শরীর চর্চা করছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
কঠিন নিয়ম
পেছনের সাইনবোর্ডে বন্দিদের কিছু নির্দেশনা দেয়া আছে কারাগারের নিয়ম সম্পর্কে৷ এখানে কয়েকজন বন্দিকে দেখা যাচ্ছে হাতকড়া পড়া অবস্থায়, যারা বিচারের অপেক্ষায় আছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
পরিচ্ছন্নতা কাজ
অন্যরা যখন এমনি বসে সময় নষ্ট করছে, তখন একজন বন্দি কারাগারের টয়লেট পরিষ্কার করছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
কাপড় ধোয়া এবং গোসল
কখনো কখনো বন্দিরা নিজেদের পরিষ্কার করার এবং কাপড় ধোয়ার সুযোগ পায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
রাতের বন্দিশালা
সন্ধ্যায় কারাগারের বাইরে তালা ঝুলিয়ে দিচ্ছে এক নিরাপত্তারক্ষী, যেখানে কয়েদিরা আর একটি দুঃসহ রাত পার করার চেষ্টা চালাচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
ভয়াবহ পরিস্থিতি
কারাগারের এই অমানবিক পরিস্থিতির জন্য নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডুতের্তেকে দায়ী করছেন অনেকে৷ মাদকের বিরুদ্ধে তার প্রচারণা এতটাই কড়া যে, কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হয় না৷ তিনি মাদকাসক্তদের মেরে ফেলার জন্য মানুষকে আহ্বান জানিয়েছিলেন, যা ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল৷ এ পর্যন্ত ৬ লাখ মাদক পাচারকারী ও মাদকাসক্তের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে৷