প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাকব জুমা৷ পদত্যাগ না করলে বৃহস্পতিবার সংসদে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তাঁকে সরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিল তাঁর দল এএনসি৷
বিজ্ঞাপন
২০০৯ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন জুমা৷ এরপর গত নয় বছরে তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে৷ এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ‘আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস’ এএনসির নির্বাহী কমিটির বৈঠকে জুমাকে পদত্যাগের অনুরোধ জানানো হয়৷ কিন্তু তিনি তা করবেন না বলে জানালে তাঁকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে সংসদে ভোটের মাধ্যমে সরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিল এএনসি৷ উল্লেখ্য, সংসদে এএনসির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার কারণে জুমার বিরুদ্ধে ‘নো-কনফিডেন্স’ ভোট পাস করানো দলটির জন্য সহজ ছিল৷
নিজ দলের কাছ থেকে এই হুমকি পাওয়ার পর বুধবার দিনের শেষে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন জুমা৷
তবে টেলিভিশনে দেয়া প্রায় আধ ঘণ্টার এক বক্তব্যে দলের সিদ্ধান্তের প্রতি তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ দলের কাছ থেকে তিনি ‘খুব অন্যায়’ আচরণ পেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন জুমা৷ ‘‘আমি খারাপ কিছু করেছি কিনা সে ব্যাপারে কোনো প্রমাণ নেই,’’ দাবি তাঁর৷
এদিকে, জুমা পদত্যাগ করায় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন এএনসির সভাপতি সিরিল রামাফোসা৷ গত ডিসেম্বরে তিনি জুমাকে হারিয়ে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন৷
বৃহস্পতিবার সংসদে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হিসেবে রামাফোসার পুরো দায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ আগামী বছর দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা৷
জুমার বিরুদ্ধে অভিযোগ
একটি অভিযোগ বলছে, ক্ষমতায় যাওয়ার আগে জুমা ৭৮৩টি ‘পেমেন্ট’ গ্রহণ করেছেন, যেগুলো একটি অস্ত্র চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত৷
জুমার বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত ভারতে জন্মগ্রহণকারী গুপ্তা পরিবার৷ জুমার সঙ্গে সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে এই পরিবার অন্যায়ভাবে সরকারের অনেক লাভজনক ব্যবসা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ আছে৷
বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ এই পরিবারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায়৷ এই সময় গুপ্তা পরিবারের এক সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা গেছে৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)
কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানের সরকারি বাসভবন
রাশিয়ার ক্রেমলিন আর যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসের কথা আমরা কম-বেশি সবাই জানি৷ এর বাইরে আরও কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সরকারি বাসভবন সম্পর্কে জানা যাবে এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Kay Nietfeld
এক হাজার ঘর!
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের নতুন দপ্তর এটি৷ নাম ‘হোয়াইট প্যালেস’৷ অক্টোবর ২৯, ২০১৪ সালে এটি উদ্বোধন করেন এর্দোয়ান৷ প্রায় সাড়ে তিনশো মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই প্রেসিডেন্ট প্যালেসে ঘর রয়েছে এক হাজারটি৷
ছবি: picture alliance/AA/M.Ali Ozcan
রাতের বেলায় আলোর নাচন
দেখছেন প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর কাজাখস্থানের প্রেসিডেন্ট ভবন৷ যুক্তরাষ্ট্রের ‘হোয়াইট হাউস’-এর মতো মনে হচ্ছে কি? রাতের বেলায় এই ভবনে আলোর নাচন দেখা যায়৷
ছবি: picture alliance/dpa
তুর্কমেনিস্তানের প্রাসাদ
সাবেক সোভিয়েত সদস্য তুর্কমেনিস্তানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি ব্যার্দিমুহামেদু থাকেন এই প্রাসাদে৷ তিনি ছিলেন জাতির জনক সাপারমুরাত নিয়াজোভ-এর ব্যক্তিগত চিকিৎসক৷ সেই সূত্রে একে একে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন শেষে এখন তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট৷ থাকেন গম্বুজ বিশিষ্ট এই বিশাল ভবনে৷
ছবি: picture alliance/dpa
বিতর্কিত ভবন ‘মিয়াজেহেরিয়া’
একসময় ছিল ইউক্রেনের সরকারি অতিথি ভবন৷ ২০১০ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ এটাকে তাঁর বাসভবন হিসেবে বেছে নেন৷ তারও একবছর আগে তিনি এই বাড়িটি কিনেছেন বলে দাবি করেছিলেন৷ যদিও কত দামে সেটা কিনেছিলেন তা বলেননি৷ ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইয়ানুকোভিচ পদত্যাগে বাধ্য হলে ‘মিয়াজেহেরিয়া’ ছেড়ে পালিয়ে যান৷
ছবি: AFP/Getty Images/Genya Savilov
‘মিয়াজেহেরিয়া’-র ভেতরে
দেখেই বোঝা যাচ্ছে কেমন বিলাসী জীবনযাপন করতেন ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ৷ বিক্ষোভের মুখে তিনি পালিয়ে গেলে সাধারণ জনগণ এই বাড়িতে ঢুকে পড়ে৷
ছবি: AFP/Getty Images/Yuriy Dyachyshyn
তিন হাজার ঘরের প্রাসাদ!
রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে বিশাল এই প্রাসাদটি নির্মাণ করেছিলেন সে দেশের কমিউনিস্ট নেতা নিকোলাই চসেস্কু৷ ১৯৮৪ সালে উত্তর কোরিয়া ভ্রমণের পর তাঁর এ ধরনের ভবন নির্মাণের সাধ জাগে৷ ৮৪ মিটার উঁচু এবং ২৬৫,০০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে থাকা এই প্রাসাদে রুমের সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি!
ছবি: tony4urban/Fotolia.com
এলিসি প্রাসাদ
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বসেন এই টেবিলে৷ এ থেকে দেশটির প্রেসিডেন্টদের জন্য বরাদ্দ সরকারি বাসভবন এলিসি প্রাসাদ সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Giancarlo Gorassini
সাদ্দাম হুসেনের বাসভবন
২০০৩ সালে তোলা এই ছবিতে ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেনের বাসভবন দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইরানের প্রেসিডেন্ট ভবন
ছবিটি ‘সা’দাবাদ প্যালেস’-এর৷ ১৯২০-এর দশকে রেজা শাহ পাহলভি প্রাসাদের সংস্কার করে এর আকার বড় করেন৷ বর্তমানে প্যালেসে ১৮টি ক্যাসেল বা ভবন রয়েছে৷ সা’দাবাদ প্যালেসের কাছেই ইরানের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনটি রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Orand-Viala
ঘানার প্রেসিডেন্ট ভবন
আফ্রিকার একটি উন্নত অর্থনীতির দেশ ঘানা৷ কোকো ও সোনা রপ্তানি করে দেশটি অনেক অর্থ আয় করে৷ ছবিটি সে দেশের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/UPPA/Photoshot
রাজপুত্রের বাড়ি এখন প্রেসিডেন্ট ভবন
১৯৯৪ সাল থেকে জার্মানির প্রেসিডেন্টদের সরকারি বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে ‘বেলভ্যু প্যালেস’৷ বার্লিনের স্প্রি নদীর ধারে অবস্থিত এই ভবনটি ১৭৮৬ সালে নির্মিত হয়৷ তখন থেকে প্রাশিয়ার রাজকুমার ফার্ডিনান্ড-এর গ্রীষ্মকালীন বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এটি৷