দলগত এ নৃত্যটিতে গরু সেজে অংশ নিয়েছে হালসভিলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নৃত্যদল– ববক্যাট বেলস৷ ফেইসবুকে এ ভিডিওটি এ বছরেরই মার্চ মাসে ছাড়া হয়েছে, যার ভিউয়ার ইতিমধ্যে ১ কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে৷ আর এটি শেয়ার হয়েছে দুইলাখেরও বেশিবার৷ ইউটিউবেও ভিডিওটি দেখেছেন প্রায় ৭২ হাজার মানুষ৷
সোশাল মিডিয়ার এই সাড়ায় ববক্যাট বেলসের ‘গরু নাচিয়ে'রা তো বটেই, এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা নৃত্য পরিচালক ক্যাথরিন কালওয়ে পর্যন্ত বিস্মিত হয়েছেন৷
তিনি প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘গত গ্রীষ্মে আমি ও আমার সহকারী পরিচালক ভাবছিলাম নতুন কী করা যায়৷ প্রথমে আমরা ঠিক করেছিলাম গোলাবাড়িতে পশুপাখির রূপ ধরে চরিত্রগুলো নাচবে৷ পরে যখন আমরা গরু সংক্রান্ত গানগুলো শুনলাম, তখন ঠিক করলাম পুরো নাচটাই গরু নিয়ে করবো৷''
তৃতীয়বার এ নৃত্যে পারফর্ম করার সময় একজন দর্শক এটি ধারণ করে ফেইসবুকে ছেড়ে দেন বলে জানান ক্যাথরিন৷
এইচআই/এসিবি
প্রতি বছর জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে গরুর দৌড় হয়৷ সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গরুর দৌড় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে৷ কিন্তু লোকজন যেভাবে গরুর দৌড় নিয়ে উৎসাহিত তাতে কি এটা আদৌ বন্ধ করা যাবে?
ছবি: DW/S. Bandopadhyayপ্রতি বছর জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে গরুর দৌড় হয়৷ বর্ষার আগমন উদযাপন করতে চালু হয়েছিল এই প্রথা, যেহেতু বর্ষা কৃষিকাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayযদিও গ্রামের বয়স্করা বলেন, প্রখর গ্রীষ্মে শুকিয়ে যাওয়া জমির উপরিভাগ একটু ভেঙে নিলে বৃষ্টির জল ভিতরে ঢুকতে পারবে এবং পরে লাঙল দিতে সুবিধে হবে - সেই তাগিদ থেকেই শুরু হয়েছিল গরুর দৌড়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayকিন্তু এখন চাষের কাজে যন্ত্রচালিত লাঙলই ব্যবহার হয়৷ গরুর দৌড় তাই থেকে গিয়েছে একটা ক্রীড়া এবং বিনোদন হিসেবে৷ আর গবাদি পশুর মালিকদের কাছে এটা এখন একটা সম্মানের লড়াই৷ অন্যদিকে দৌড়বাজ গরুর উপর বাজি ধরেন সাধারণ দর্শক৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayকাজেই কিছু দর্শকের নিবিষ্ট চাহনি দেখেই বোঝা যায়, দৌড়ের কোনও অংশ তাদের নজর এড়িয়ে যায় না৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayগ্রামের কিশোর, তরুণরাও সকাল থেকে ভিড় জমায় রেসের মাঠে৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayগ্রামের কিশোরী, তরুণী এবং মহিলারা আর প্রবীণরা একটু নিরাপদ দূরত্বে থেকেই মজা দেখেন৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayএই নিরাপদ দূরত্ব রাখাটা জরুরি, কারণ গরুগুলো দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছোটে৷ সম্ভবত ওরা কোনও মাদকের প্রভাবে উত্তেজিত থাকে৷ মাদকের মধ্যে সবথেকে সহজলভ্য কোল্ড ড্রিঙ্ক আর ব্যথা কমানোর ওষুধের মিশ্রন৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayযে কারণে একেকটা দৌড় যেই শেষ হয়, রাখালেরা গিয়ে একেকজন একেকটা গরুকে সামলাবার দায়িত্ব নিয়ে নেয়৷ জোর করে ওদের নিয়ে যায় সামান্য গভীর জলে, যাতে গরুগুলো একটু ঠান্ডা হয়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayতবে পশু অধিকার সুরক্ষা সংগঠনগুলোর অভিযোগ পেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গরুর দৌড় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কারণ গরু দৌড়োবার উপযুক্ত প্রাণি নয় এবং তাদের নিয়ে প্রতিযোগিতার কারণে নানাভাবে তাদের কষ্ট দেওয়া হয়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayকিন্তু লোকে যেভাবে গরুর দৌড় নিয়ে উৎসাহিত, অদূর ভবিষ্যতে এই দৌড় বন্ধ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই, সে আদালত বা পশুপ্রেমীরা যা-ই বলুন না কেন!
ছবি: DW/S. Bandopadhyay