পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় চলতি বছর রেকর্ড সংখ্যক দমকলকর্মী মোতায়েন করবে গ্রিস৷ দেশটির ক্লাইমেট ক্রাইসিস মন্ত্রী বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানান৷
গত বছরের গ্রিসের ১০ হাজার হেক্টর জমি দাবানলে পুড়ে গিয়েছিল৷ ফাইল ফটোছবি: Vassilis Psomas/REUTERS
বিজ্ঞাপন
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বজুড়েই মারাত্মক রুক্ষ হয়ে উঠেছে আবহাওয়া৷ ওয়ার্ল্ড মেটেরিওলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের তথ্য মতে, ২০২৪ সাল ছিল বিশ্বের উষ্ণতম বছরের রেকর্ড৷
ইউরোপের দেশ গ্রিসেও এর প্রভাব স্পষ্ট৷ ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত শত শত দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত এই রাষ্ট্রটির আবহাওয়া ক্রমেই উষ্ণ এবং শুষ্ক হয়ে উঠছে৷ বাতাসের গতি পরিবতনের ফলে দেশটিতে বাড়ছে দাবানলের ঘটনা যা নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে উঠছে৷
এই পরিস্থিতিতে আগাম পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে গ্রিস৷ দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিসের সাথে বৈঠক করেন সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড ক্লাইমেট ক্রাইসিসি মন্ত্রী গিয়ানিস কেফালোগিয়ানিস৷ সাগরতীরের দেশ গ্রিসে ১ মে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দাবানলের মরসুম শুরু হয়৷
গিয়ানিস কেফালোগিয়ানিস জানান, চলতি বছর দেশটির দমকলবাহিনীর ১৮ হাজার কর্মী প্রস্তুত রাখা হবে৷ দমকলকর্মী মোতায়েনের এই সংখ্যা এখন পর্যন্ত দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ৷ তাছাড়া হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবীও প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন গিয়ানিস কেফালোগিয়ানিস৷
তিনি বলেন, ‘‘চলতি বছরের আবহাওয়া অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা ভালো থাকবে এমন কোনো কথায় আমরা কান দেব না৷ খারাপ সময়গুলো আগামীর দিনগুলোতে লুকিয়ে থাকে৷''
উল্লেখ্য দুর্যোগ মোকাবিলায় এরইমধ্যে নতুন এয়ার ক্রাফট কেনা, আবহাওয়া অফিস স্থাপস, ড্রোন কেনা ইত্যাদি বাবদ দুই বিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ দিয়েছে সরকার৷ চলতি বছর থারমাল ক্যামেরার ৮০টি ড্রোন মোতায়েন থাকবে বলেও জানানো হয়৷
আরআর/এসিবি (রয়টার্স)
গ্রিসে দাবানলে প্রথম মৃত্যু
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানলে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তা চেয়েছে দেশটি৷
ছবি: Alexandros Avramidis/REUTERS
প্রথম মৃত্যু
গ্রিসের রাজধানীর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দাবানল অব্যাহত রয়েছে৷ ফলে সেখানকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন৷ মঙ্গলবার সকালে দমকল কর্মীরা পুড়ে যাওয়া একটি কারখানা থেকে এক নারীর অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন৷ সাম্প্রতিক দাবানলে এখন অবধি এটাই একমাত্র মৃত্যু৷
ছবি: Stelios Misinas/REUTERS
একসঙ্গে বাঁচার লড়াই
এথেন্সের উত্তরে ভ্রিলিসিয়ায় স্বেচ্ছাসেবীরা আগুন নেভাতে জরুরি সেবা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছেন৷ বিভিন্ন স্থানে অঙ্গার থেকে আবার আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ পাশাপাশি গতরাতে বাতাস কমে এলেও তা আবার বাড়লে আগুন ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে৷
ছবি: Alexandros Avramidis/REUTERS
ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি
এথেন্সের শহরতলী হালান্দ্রির একটি বাড়ির টয়লেটে গলে যাওয়া টেপ দাবানলের তীব্রতা সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছে৷ অনেক কাঠের বিদ্যুতের খুঁটি জ্বলে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে৷
ছবি: Stelios Misinas/REUTERS
শ্বাস নেয়া কঠিন
ভ্রিলিসিয়ায় অনেক মানুষ পরিস্থিতি বুঝতে বাড়ির ছাদে উঠে গেছেন৷ কেউ কেউ শ্বাস নিতে সুবিধার জন্য মাস্ক ব্যবহার করছেন৷ বায়ু দূষণ বিষাক্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ৷
ছবি: Alexandros Avramidis/REUTERS
আন্তর্জাতিক সহায়তা
আগুনের লেলিহান শিখা গাছের উপরে উঠে গেছে৷ কিছু এলাকা এখন পুরোপুরি অগ্নিনির্বাপন কর্মী এবং পুলিশ পর্যবেক্ষণ করছেন৷ আন্তর্জাতিক সহায়তাও পৌঁছাচ্ছে৷ গ্রিসের আহ্বানের পর চেক প্রজাতন্ত্র, ফ্রান্স, ইটালি, সার্বিয়া, রোমানিয়া এবং তুরস্ক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷
ছবি: Elias Marcou/REUTERS
অসহায়ত্ব
ভ্রিলিসিয়া গ্রামে আগুন ক্রমশ মানুষের ঘর-বাড়ির কাছে পৌঁছে যাচ্ছে৷ আবহাওয়াবিদ এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তারা সপ্তাহান্তে সতর্ক করে বলেছিলেন যে, আজিয়ান সাগরের আশেপাশে তীব্র খরা এবং শক্তিশালী বাতাসের কারণে ছোট্ট আগুনও দাবানলে রূপ নিতে পারে৷
ছবি: Hilary Swift/REUTERS
আগুন নেভানোর নিরলস চেষ্টা
সরকারের মুখপাত্র ভ্যাসিলিওস ভাথ্রাকোজিয়ানিস জানিয়েছেন যে, অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা সারারাত আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছেন৷ তা সত্ত্বেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে৷ মানুষের জীবন বাঁচাতে বেশ কয়েকটি গ্রাম জনশূন্য করেছে এথেন্স কর্তৃপক্ষ৷