1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দাবি আদায়ে ‘মহামিছিলে’ পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীরা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
৬ মে ২০২৩

অবস্থান আন্দোলনের ১০০ দিনে চার ঘণ্টার ‘মহামিছিলে’ সামিল হন পশ্চিমবঙ্গের কয়েক হাজার সরকারি কর্মচারী৷ কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার দাবি পূরণ না হলে লাগাতার ধর্মঘটের পরিকল্পনা তাদের৷

অবস্থান আন্দোলনের ১০০ দিনে চার ঘণ্টার ‘মহামিছিলে’ সামিল হন পশ্চিমবঙ্গের কয়েক হাজার সরকারি কর্মচারী৷ কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার দাবি পূরণ না হলে লাগাতার ধর্মঘটের পরিকল্পনা তাদের৷
শনিবারের মহামিছিলে সরকারি কর্মচারীদের প্রতীকী প্রতিবাদছবি: Payel Samanta/DW

কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ-র ফারাক ঘোচাতে আন্দোলনে নেমেছেন সরকারি কর্মীরা৷ শহিদ মিনার চত্বরে গত ১০০ দিন ধরে অবস্থান করছেন, অনশনও করছেন আন্দোলনকারীরা৷ শনিবার তারা রাজপথে ‘মহামিছিল' কর্মসূচি পালন করেন৷ এতে ৩৫ হাজারের বেশি সরকারি কর্মী অংশ নেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের৷ তবে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতির মধ্যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি৷

কেন ‘মহামিছিল'

বকেয়া প্রদান, স্বচ্ছ নিয়োগ, অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ-সহ চার দফা দাবিতে এই আন্দোলন করছেন কর্মচারীরা৷

রাজ্য সরকারি কর্মী, শিক্ষক, পুরসভার কর্মচারী-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরিরতদের একটা অংশ এই আন্দোলন করছেন৷ রাজ্য সরকার বর্ধিত হারে ডিএ দিতে অপারগ, এ কথা বার বার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিন শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হলেও তাতে সন্তুষ্ট নন কর্মীরা৷ নবান্নের সঙ্গে তাদের আলোচনায় সমাধান মেলেনি৷ ডিএ নিয়ে আইনি লড়াই পৌঁছেছে সর্বোচ্চ আদালতে৷ এমন অবস্থায় কর্মচারীদের অন্যতম সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতৃত্বে ‘মহামিছিল' এর ডাক দেয়া হয়৷

কাউকে চ্যালেঞ্জ করছি না: কিঙ্কর অধিকারী

This browser does not support the audio element.

মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে অন্যতম নেতা ভাস্কর ঘোষের দাবি, ‘‘৩৫-৪০ হাজার কর্মী সামিল হয়েছেন এ দিনের কর্মসূচিতে৷ এতো কর্মী পথে নামায় সরকারের উপর চাপ বাড়লো৷ আমরা লাগাতার ধর্মঘটের কথা ভাবছি৷''

শান্তিপূর্ণ জমায়েত

এই কর্মসূচি ঘিরে ছিল ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ পুলিশের বিপুল উপস্থিতি, মোড়ে মোড়ে ব্যারিকেড, তৈরি ছিল জলকামান৷ আদালতের নির্দেশে মিছিলের ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়৷

মিছিলের যাত্রাপথে দুইটি স্থান বেশি স্পর্শকাতর ছিল৷ প্রথমটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির এলাকা৷ কালীঘাট দমকল কেন্দ্রের আশপাশে তাই কঠোর নিরাপত্তা ছিল৷ হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে সাধারণ মানুষের যাতায়াতেও কড়া নজর ছিল পুলিশের৷

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি হরিশ মুখার্জি রোডে৷ এই বাড়ির সামনে দিয়েও যায় মিছিল৷ এ দিন বাড়িতে নয়, মুর্শিদাবাদে ছিলেন অভিষেক৷ ৭১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে দিয়েই শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল যায়৷ শুধু এ সব স্পর্শকাতর জায়গা নয়, মিছিলের কোনো অংশে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি৷

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে দুপুর একটা থেকে বিকেল চারটের মধ্যে মিছিল করার কথা ছিল৷ হাজরা মোড় থেকে বেলা একটা দশ মিনিট নাগাদ মিছিল শুরু হয়৷ আড়াই ঘণ্টা পর সেখানেই এসে মিছিল শেষ হয়৷

ভাতা ঘিরে চাপানউতোর

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছের এলাকা বা হরিশ মুখার্জি রোডের মতো কলকাতার যে সব এলাকায় বছরের পর বছর মিছিল বন্ধ, সেখানে আদালতের নির্দেশে হেঁটেছেন কর্মচারীরা৷ এটা কি মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ? আন্দোলনের নেতা, শিক্ষক কিঙ্কর অধিকারী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কাউকে চ্যালেঞ্জ করছি না৷ নিজেদের দাবি জোরালো ভাবে জানাচ্ছি৷ দাবি আদায় করাটাই চ্যালেঞ্জ বলতে পারেন৷''

আন্দোলন সরকারের কাছে স্বস্তির নয়: রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী

This browser does not support the audio element.

রাজ্য সরকার ও শাসক দল এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছে৷ তৃণমূল মুখপাত্র, সাংসদ সৌগত রায়ের মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছেন, রাজ্যের হাতে ডিএ মেটানোর টাকা নেই৷ কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না৷ তা সত্ত্বেও এই আন্দোলন চালানোর যুক্তি কী?''

এ দিনের মিছিল শেষে হাজরা মোড়েই সভা করেন সরকারি কর্মীরা৷ সেখানে বক্তৃতা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান, সাবেক তৃণমূল বিধায়ক সোনালি গুহ প্রমুখ৷ তারা আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানান৷

আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, মিছিলে বিপুল সংখ্যায় কর্মীদের সমাগম তাদের কর্মসূচিকে সার্থক করেছে৷ কিন্তু তাতে রাজ্যের মনোভাবে পরিবর্তন হবে কি? রাজনৈতিক বিশ্লেষক, অধ্যাপক রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘১০ লক্ষ কর্মচারীকে বাড়তি ডিএ দিতে যে খরচ হবে, সেই অর্থ লক্ষ্মীর ভান্ডারে বরাদ্দ করলে অনেক বেশি মানুষকে সুবিধা দেয়া যাবে৷ রাজ্য সরকার এটা জানে৷ তাই কর্মীদের দাবি মানছে না৷ তবে এতো দিন ধরে কর্মীরা আন্দোলন করলে সেটা সরকারের কাছে স্বস্তির নয়৷''

সবার নজর এখন সুপ্রিম কোর্টে৷ সেখানে ডিএ মামলার পরের শুনানি জুলাই মাসে৷

গত ফেব্রুয়ারির ছবিঘর দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ