1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দাম বাড়াতে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করবে বাংলাদেশ

শহীদুল ইসলাম ডয়চে ভেলে
১৩ আগস্ট ২০১৯

দাম পড়ে যাওয়ায় কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার৷ ঈদের ছুটির পর বুধবার প্রথম কর্মদিবসে এই অনুমতি দেওয়া হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন৷

Hazaribagh eine Gerberei in Bangladesch
ছবি: DW

মঙ্গলবার ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, কাঁচা চামড়া রপ্তানির পথ খুলে দিলে চামড়ার দাম কিছুটা বাড়বে৷

মফিজুল বলেন, ‘‘আমরা চিন্তাভাবনা করছি কাঁচা চামড়া রপ্তানি করার অনুমতি দেবো৷ এটা হলে আশা করছি দামটা আরেকটু বাড়বে৷ পাশাপাশি দেশীয় শিল্প যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকেও আমরা লক্ষ্য রাখছি৷''

কবে সেই অনুমতি দেওয়া হবে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘‘উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করেছি, আমরা হয়ত রপ্তানির অনুমোদন দেব, কালকে (বুধবার) অফিস খুললে চামড়াখাতের সঙ্গে জড়িতদের নিয়ে বৈঠক করে কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতির ঘোষণা দেওয়া হবে৷''

রপ্তানি নীতি আদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে কাঁচা চামড়া রপ্তানি নিষিদ্ধ৷

এবার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়া ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং খাসির কাঁচা চামড়া সারাদেশে ১৮ থেকে ২০ এবং বকরির চামড়ার দাম ১৩ থেকে ১৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার৷ তবে ওই দামে কোথাও চামড়া বিক্রি হয়নি৷

কাঁচা চামড়া রপ্তানির হলে চামড়ার দাম কিছুটা বাড়বে: মো. মফিজুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

এদিকে ক্ষমতাসীন দলের ‘সিন্ডিকেটের কারসাজিতে' কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার দাম কমিয়ে ‘পাশের দেশে পাচার' করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি৷ চামড়ার দাম পড়ে যাওয়ার জন্য ‘সিন্ডিকেটের কারসাজির' অভিযোগ করেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা৷

কেন এত কম দামে কাঁচা চামড়া বিক্রি হয়েছে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব মফিজুল ইসলাম বলেন,‘‘যদি ডিমান্ড থাকে তাহলে দাম বাড়বে৷ আমার কাছে মনে হচ্ছে সাপ্লাই আছে, কিন্তু ডিমান্ড নেই৷ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বসে আমরা দাম নির্ধারণ করি৷ তারা বলছে, গতবছরের চামড়াই তাদের কাছে রয়ে গেছে৷ তারা নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনছে না বলে তথ্য পাচ্ছি৷ যদিও আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি যাতে চামড়া বিক্রির টাকাটা এতিমখানা, মাদ্রাসা বা গরিব মানুষের কাছে যায়৷ কিন্তু বাস্তবতাটা হলো ট্যানারি মালিকরা চামড়া না কেনার ফলে দামটা তারা পাচ্ছে না৷''

সেই পুরানো দোষারোপ

সরকার নির্ধারিত দামের থেকে অনেক কম দামে এবার চামড়া বিক্রি হয়েছে৷ তবে এবারই নতুন নয়, গত কয়েক বছর ধরেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে৷ কম দামে চামড়া বিক্রির জন্য বরাবরের মতো এবারো ট্যানারি মালিক এবং চামড়া ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দোষারোপ করেছেন৷

ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ জানান, আরো ১০ দিন পর থেকে চামড়া কেনা শুরু করবেন তারা৷ বুধবার ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘কিছু মধ্যসত্বভোগী সস্তায় চামড়া কিনছে৷ ঈদের সময় কয়েক দিন এদের দৌরাত্ম থাকে, তবে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই এরা আমাদের কাছে চামড়া বিক্রি করে, মাঝেমধ্যে একটু বেশি দামও দিতে হয়৷''

মধ্যসত্বভোগীরা সুযোগ নেয়: শাহীন আহমেদ

This browser does not support the audio element.

‘‘ট্যানারি মালিকরা চামড়া কেনা শুরু না করা পর্যন্ত এই অস্থিতিশীলতা থাকে৷ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এক-দুই দিনের মধ্যে তাদের পুঁজি নিয়ে বের হয়ে যেতে চান, আর তখনই মধ্যসত্বভোগীরা সুযোগ নেয়৷''

এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক করার তাগিদ দিয়ে শাহীন বলেন,‘‘যুগ যুগ ধরে চলা চামড়া সংগ্রহ প্রক্রিয়া উন্নত করতে হবে৷ বিভাগীয় শহর ও বড় বড় শহরে কোল্ডস্টোরেজ স্থাপন এবং চামড়া সংক্ষরণের ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে৷ দেশ এগোলেও চামড়া সংগ্রহের প্রক্রিয়া এখনো প্রাচীনযুগের মতো রয়ে গেছে, এটাকে ডেভেলপ করলে এই যে ব্লেইম গেইম- ট্যানারি মালিকরা চামড়া কিনছেন না, দামও দিচ্ছে না, এগুলো আসত না৷ এসব নিয়ে আমরা শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দিয়েছি৷''

ট্যানারি মালিক শাহীনের ভাষ্য, সাভারের ট্যানারি পল্লীর ৬০ শতাংশ ট্যানারি উৎপাদনে গেলেও এখনো ওইভাবে উৎপাদন করতে পারছে না এবং বিশ্বে চামড়ার চাহিদা পড়ে যাওয়ার একটা প্রভাব এবারের চামড়ার বাজারে পড়েছে৷

অন্যদিকে চামড়ার আড়তদারদের সংগঠন হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের অভিযোগ ৯০ শতাংশ ট্যানারি মালিক তাদের কোনো টাকা না দেওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷

ট্যানারির মালিকরা ঠিকমতো টাকা পরিশোধ করে না: দেলোয়ার হোসেন

This browser does not support the audio element.

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ীদের ট্যানারি মালিকরা ঠিকমতো পেমেন্টই দেয়নি৷ সারা দেশে ট্যানারি মালিকদের কাছে আমরা ৩০০ কোটি টাকা পাবো৷ ৯০ ভাগ ট্যানারি মালিক কোনো টাকাই দেয়নি৷ যে ১০ শতাংশ পরিশোধ করেছেন, তাদের মধ্যে মাত্র ২/৩ জন শতভাগ টাকা দিয়েছেন, অন্যরা ৫ থেকে ৫০ শতাংশ টাকা দিয়েছেন৷''

‘‘আমার কাছে টাকা না থাকলে প্রতিযোগিতা থাকবে কীভাবে? আমরা তো প্রতিযোগিতা করে এবার চামড়া কিনতে পারিনি৷ অনেক ব্যবসায়ী এবার চামড়া কেনেননি৷ বাজারে প্রতিযোগিতা না থাকায় কম দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে৷ সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি কাঁচা চামড়া রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হোক৷ ''

বাণিজ্য সচিব জানান, বিভাগীয় শহরগুলোতে যাতে চামড়া সংরক্ষণ করা যায় সে বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নেবে৷

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ