1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দার্জিলিংয়ে ‌চাপে পড়েছেন গুরুং

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১৩ জুন ২০১৭

দার্জিলিংয়ে মমতা ব্যানার্জির কুশলী রাজনীতির চাপে পড়ে অনেকটাই কোণঠাসা বিমল গুরুং৷ কিন্তু এই বিরোধের জেরে দুর্ভোগ হচ্ছে পর্যটকদের৷

Indien Keventer's Restaurant
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

সোমবার থেকে দার্জিলিংয়ে শুরু হয়েছে এক বিচিত্র ‘বন্‌ধ'৷ একমাত্র সরকারি দপ্তর এবং গোর্খা স্বশাসিত পরিষদের দপ্তর রয়েছে এই বন্‌ধের আওতায়৷ বিভিন্ন ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখাগুলির প্রতি নির্দেশ, সপ্তাহে তিনদিন খোলা রাখার, বাকি তিনদিন বন্ধ থাকবে ব্যাঙ্ক৷ এর বাইরে, বাজার, দোকানপাট খোলা থাকবে, রাস্তাঘাটে যান চলাচল চালু থাকবে, পর্যটকদের যাতায়াতেও কোনও বাধা থাকবে না৷ এমন অদ্ভুত একটি বন্‌ধ চলবে, নাকি অনির্দিষ্ট কালের জন্য৷ বিব্রত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুং সাফাই দিয়েছেন, এ তাঁদের যুব মোর্চার ডাকা বন্‌ধ, যাতে তাঁরা নৈতিক সমর্থন দিচ্ছেন মাত্র৷ অর্থাৎ চাইলেই পাহাড়ে ফের সর্বাত্মক বন্‌ধ ডেকে দিতে পারে মোর্চা, কিন্তু দিচ্ছে না৷ কিন্তু সেটুকুও সফল করতে ব্যর্থ হলো মোর্চা৷ আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই সরকারি পূর্ত দপ্তরের একটি অফিসে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল মোর্চা কর্মীরা৷ তার পরেও সোমবার দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে হাজিরার হার ছিল ৯০ শতাংশের বেশি৷ সেনা পাহারায় অফিস গেছেন কর্মীরা এবং নির্বিবাদে কাজ করেছেন৷

রাজশ্রী মুখার্জি

This browser does not support the audio element.

 

আসলে বিমল গুরুংয়ের দায়সারা ঘোষণাতেই পরিস্কার হয়ে গেছে, দার্জিলিংয়ের পর্যটন ব্যবসার আর কোনও ক্ষতি হোক, সেই ঝুঁকি তাঁরা নিতে চাইছেন না৷ কারণ, এর আগে মোর্চার হঠকারী আন্দোলন এবং এই হঠাৎ হঠাৎ ডাকা বন্‌ধের কারণে অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে দার্জিলিংয়ের হোটেল মালিক এবং পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষের৷ ফলে এঁরা সবাই গোপনে অথবা প্রকাশ্যে মোর্চার বন্‌ধ রাজনীতির বিরোধিতা করতে শুরু করেছেন৷ কাজেই বিমল গুরুং মোটেই চাইছেন না, যে পাহাড়ের অর্থনীতির ক্ষতি করার দায়ে তাঁর পাশ থেকে এই মানুষগুলো চলে যাক৷

হঠাৎ বন্‌ধ ডাকলে কী ব্যাপক অসুবিধে হয় পর্যটকদের, তা গত কয়েকদিনে টের পাওয়া গেছে দার্জিলিংয়ে৷ যদিও মাত্র ১২ ঘণ্টার বন্‌ধের ডাক ছিল, কিন্তু তার আগের অশান্তি এবং পরের উত্তেজনা আর আতঙ্কের কারণে বেড়াতে আসা লোকজনের ছুটির আনন্দ বিরক্তি আর বিষাদে বদলে গেছে৷ বন্‌ধের দিন যাঁদের দার্জিলিং আসার কথা, বা দার্জিলিং থেকে সমতলে নেমে বাড়ি ফেরার ট্রেন, প্লেন, ইত্যাদি ধরার কথা, তাঁরা চরম সমস্যায় পড়েছিলেন৷ বাস কিছু ছেড়েছে রাতভোরে, যা ধরার জন্য মরিয়া পর্যটকরা আগের রাত থেকে বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে বসেছিলেন৷ এদিকে বন্‌ধের মেয়াদ ফুরোবার পরও দোকান-বাজার কিছুই খোলেনি৷ জানালেন, দার্জিলিংয়ের এক বাঙালি হোটেল ম্যানেজারের স্ত্রী কৃষ্ণা৷

কৃষ্ণা

This browser does not support the audio element.

তাঁর সঙ্গে ডয়চে ভেলের যখন কথা হয়, তখন রাত নয়টা৷ কৃষ্ণা জানাচ্ছেন, অত রাতেও বহু পর্যটক হোটেল থেকে চেক আউট করে যাচ্ছিলেন, দার্জিলিংয়ে যেটা খুব অস্বাভাবিক একটা ঘটনা৷ কিন্তু এঁরা কেউ ফের আটকে যাওয়ার ঝামেলায় পড়তে রাজি ছিলেন না৷ অন্যদিকে যাঁরা দার্জিলিংয়ের কাছাকাছি নানা জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন, তাদেরও সব ভন্ডুল হয়ে হোটেলবন্দী হয়ে থাকতে হয়েছে গত কয়েকদিন৷

 

কলকাতার রাজশ্রী মুখার্জি এই সময় ছিলেন দার্জিলিং জেলার আরেক হিল স্টেশন কার্শিয়াংয়ে৷ তিনি জানালেন, যদিও বন্‌ধের কারণে স্বাভাবিক জনজীবন থমকে ছিল গোটা পাহাড়েই, যান যাতায়াত বন্ধ ছিল, কিন্তু গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জঙ্গি আন্দোলন দার্জিলিং শহরের বাইরে বেরোয়নি৷ কার্শিয়াংয়ে বসে গত কয়েকদিনের হাঙ্গামা, উত্তেজনার কিছুই বোঝেননি রাজশ্রী৷ তাঁর মনে হয়েছে, বন্‌ধ ব্যাপারটা পাহাড়ের মানুষের এতটাই গা সওয়া হয়ে গেছে যে তাঁরা আর এসবকে খুব একটা পাত্তা দেন না৷ এবং বিমল গুরুং নিজেও লোকের এই নিরাসক্তি টের পাচ্ছেন৷ বিলক্ষণ বুঝছেন, যে যতই তিনি নিজেকে ‘‌পাহাড়ের মুখ্যমন্ত্রী'‌ হিসেবে ঘোষণা করুন, নতুন করে লোক খেপিয়ে তোলার কাজটা আর অত সহজ হবে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ