1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দালালদের প্রতারণায় বাংলাদেশি শ্রমিক

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৮ অক্টোবর ২০১৯

সৌদি আরব থেকে প্রায় প্রতিদিনই বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফেরত পাঠানো হচেছ৷ কাজের অনুমতি (আকামা) আছে এমন শ্রমিকদেরও ফেরত পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে৷ তবে তাদের অধিকাংশই অবৈধ বলে দাবি করেছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত৷

Symbolbild: Illegale Arbeiter in Saudi Arabien
ছবি: picture-alliance/AP/E. Asmare

শুক্র ও শনিবার ২৪ ঘন্টায় সৌদি আরব থেকে ফেরত এসেছেন ৩৭৩ জন শ্রমিক৷ সৌদি পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর দূতাবাসের মাধ্যমে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷ তাদের কেউ কেউ দেশে ফেরত আসার আগে কারাগারেও ছিলেন৷ তেমনই একজন ভোলার লালমোহন উপজেলার ফুয়াদ হোসেন৷ তিনি ২০১৭ সালে ১২ মাসের আকামায় সৌদি আরব গিয়েছিলেন৷ কিন্তু সে অনুযায়ী কাজ পাননি৷

রিয়াদে একটি পেট্রোল পাম্পে তিন মাস চাকুরি করার পর আরো নানা জায়গায় কাজ করেন ফুয়াদ৷ আকামার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও থেকে যান৷ নতুন করে আকামা বা কাজের অনুমতি নিতে অনেক টাকা লাগে বলে তাও নেননি৷ আট দিন আগে তিনি দেশে ফেরেন৷ তার আগে সৌদি পুলিশের হাতে আটক হয়ে সেখানকার কারাগারে ছিলেন৷ তিনি জানান, ‘‘এখন সৌদি পুলিশ ধরে ধরে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে৷ যাদের আকামা আছে তাদেরও৷ পুলিশ কোনো কথাই শুনতে চায় না৷'' তিনি ছয় লাখ টাকা খরচ করে গিয়েছিলেন৷ দেশে পাঠাতে পেরেছেন মাত্র দুই লাখ টাকা৷

ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান ডয়চে ভেলেকে জানান, চলতি বছর এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার প্রবাসী বিদেশ থেকে ফেরত এসেছেন৷ তাদের মধ্যে ২৫ হাজারই এসেছেন মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ থেকে৷ সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে ১৮ হাজারের মত৷ প্রতিমাসেই গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার শ্রমিক দেশটি থেকে ফিরে আসছে৷

শরিফুল হাসান

This browser does not support the audio element.

তিনি জানান, ‘‘সৌদি আরবে বৈধভাবে কাজ করার অনুমতি থাকার পরও ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে তারা আমাদের জানাচ্ছেন৷ পুলিশ তাদের আটক করে কারাগারে পাঠাচ্ছে৷ আমরা যেটা জানতে পেরেছি তাদের বড় একটি অংশ গেছেন ফ্রি ভিসায়৷ বলা হচ্ছে তারা যেকোনো জায়গায় কাজ করতে পারবেন৷ কিন্তু সৌদি আইনে যে প্রতিষ্ঠানে কাজের অনুমতি আছে তার বাইরে কাজের কোনো সুযোগ নেই৷ আরেকটি কারণ হলো যারা অনেক টাকা খরচ করে যান তারা নির্ধারিত সময়ে তাদের টাকা তুলতে পারেন না৷ তাই তারা আরো অনেক জায়গায় কাজ করেন, কোম্পানি পরিবর্তন করেন৷ মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও থেকে যান৷''

ফুয়াদ হোসেন অভিযোগ করেন, ‘‘বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবে আকামা বিক্রির চক্র আছে৷ তারা নানাভাবে বুঝিয়ে দুই-তিন লাখ টাকায় আকামা বিক্রি করে৷ আরো অনেক খরচ আছে৷ আকামার মেয়াদও কম থাকে৷ নেয়া হয় ফ্রি ভিসায়৷ বলা হয় কাজে কোনো সমস্যা হবে না৷ তাদের কারণেই সৌদি আরবে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা৷''

গোলাম মসিহ

This browser does not support the audio element.

সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ এই পরিস্থিতির জন্য জনশক্তি রপ্তানিকারকদেরই দায়ী করেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সৌদি আরব যাদের ফেরত পাঠাচ্ছে আমরা তা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি৷ শতকরা ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রেই তারা সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন৷ কারণ যারা আটক হচ্ছেন তারা আকামার শর্ত লঙ্ঘন করছেন৷ কারণ সৌদি আইনে যেখানে কাজের অনুমতি সেখানেই কাজ করতে হবে, সেখানেই থাকতে হবে৷ কিন্তু যারা লোক পাঠায় তারা শ্রমিকদের ভুল বুঝায়৷ নির্দিষ্ট কোম্পানিতে কাজের পরে অন্য কোম্পানিতে কাজের জন্য উৎসাহিত করে৷ আকামা বিক্রির সময়ও তারা এখানে অনেক বেশি রোজগারের লোভ দেখায়৷ আর তার পরিণতি ভোগ করতে হয় নিরীহ শ্রমিকদের৷ তারা নিজেরাও আইন ঠিকমত জানে না৷ ডিপোর্টেশন সেন্টার থেকে আউটপাস দেয়ার আগে আমরা শ্রমিকদের সাথে কথা বলছি৷ তারা প্রত্যেকেই এখানে বেআইনিভাবে কাজ করছিল৷''

 তিনি বলেন, ‘‘এই কারণে আমাদের দেশ সম্পর্কে এখানে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচেছ৷ তারা মনে করে আমাদের দেশের লোকজন এখানে অবৈধভাবে কাজ করে৷ তবে এ কারণে সৌদি শ্রমবাজারে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে হয় না৷''

 তিনি এজন্য ঢাকার শ্রমশক্তি রপ্তানিকারক এজেন্টদের কঠোর ব্যবস্থার আওতায় আনার কথা বলেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ