কেলেঙ্কারির দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করলেন ফল্কসভাগেন (বাংলাদেশে ‘ভক্স ওয়াগেন' নামে পরিচিত) এর প্রধান নির্বাহী মার্টিন ভিন্টারকর্ন৷ যুক্তরাষ্ট্রের দূষণ পরীক্ষায় প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিল কোম্পানিটি৷ অবশেষে ধরা পড়ে যায়৷
বিজ্ঞাপন
ফল্কসভাগেন (বানানভেদে ফোক্সভাগেন) তাদের কয়েকটি মডেলের ডিজেল গাড়ির কম্পিউটারে একটি সফটওয়্যার ঢুকিয়ে দেয়ায় দূষণ পরীক্ষার সময় গাড়িটি কম হারে বিষাক্ত গ্যাস ছাড়ত৷ অর্থাৎ গাড়িটি যে পরিবেশের জন্য ভালো সেরকম একটি ধারণা দিত – যা আসলে ঠিক নয়৷ পরীক্ষা শেষে গাড়িটি যখন কোনো ব্যবহারকারী রাস্তায় নামাতো, তখন দেখা যেত গাড়িটি এমন হারে গ্যাস ছাড়ছে যেটা নির্দিষ্ট সীমার চেয়ে প্রায় ৪০ গুণ বেশি! মার্কিন ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সি' বা ইপিএ সম্প্রতি ফল্কসভাগেনের এই প্রতারণা ধরে ফেলে৷ ইপিএ-র হিসেবে, ফল্কসভাগেন ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচটি মডেলের প্রায় চার লক্ষ ৮২ হাজার গাড়ি বিক্রি করা হয়েছে, যেগুলো প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিক্রির জন্য ছাড়পত্র পেয়েছিল৷
বার্তা সংস্থা এএফপি-র এই টুইটে প্রতারণার বিষয়টি ভালো করে উপস্থাপন করা হয়েছে৷ এতে বলা হয়েছে, গাড়ি থেকে যে পরিমাণ নাইট্রোজেন অক্সাইড বের হয় সেটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকারক হতে পারে৷
ফল্কসভাগেন কর্তৃপক্ষ মার্কিন সংস্থা ইপিএ-র অভিযোগ স্বীকার করেছে৷ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী এ জন্য ক্রেতাদের কাছে দুঃখও প্রকাশ করেছে৷
এদিকে, ফল্কসভাগেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়৷
জার্মানি বলেছে, তারা তদন্ত করে দেখছে ফল্কসভাগেন কি শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই এমন প্রতারণা করেছে, নাকি জার্মানি সহ ইউরোপেও করেছে? শুধু ফল্কসভাগেন নয়, অন্য গাড়ি নির্মাতাদের বিষয়টিও তদন্ত করছে জার্মানি৷
ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী মনে করেন, ইউরোপ জুড়ে যত গাড়ি নির্মাতা আছে তাদের বিষয়েও তদন্ত করা উচিত৷
জার্মানির এক কোম্পানি এমন করায় ‘মেড ইন জার্মানি' ব্র্যান্ড নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ৷
অবশ্য জার্মানির অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল মনে করেন, ফল্কসভাগেনের ঘটনায় জার্মান প্রযুক্তির খ্যাতি ম্লান হবে না৷
ফল্কসভাগেন ইতিমধ্যে এই প্রতারণার মূল্য দেয়া শুরু করেছে৷
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন
চালকের প্রয়োজন কমছে, গাড়িই হয়ে উঠছে কর্তা
জার্মানির ফ্রাংকফুর্ট শহরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক গাড়ি প্রদর্শনী আইএএ প্রতি বছর গাড়ি-ভক্তদের জন্য অনেক নতুন চমক নিয়ে আসে৷ এবার স্বয়ংক্রিয় পার্কিং ও চালকবিহীন গাড়ির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Meyer
সৌন্দর্যের প্রতীক
ইটালির হাল ফ্যাশনের লাম্বোরগিনি হুরাকান মডেল শুধু চার চাকার যান নয়, রীতিমতো ফ্যাশনদূরস্ত ডিজাইনই হলো এই কোম্পানির গাড়ির মূলমন্ত্র৷ গাড়ির ভিতরে-বাইরে প্রতিটি কোণেই পাওয়া যায় আভিজাত্যের ছাপ৷ মানুষের ‘ইনস্টিংক্ট’ বা সহজাত প্রবৃত্তি অনুযায়ী এই মডেল ডিজাইন করা হয়েছে বলে দাবি করছে লাম্বোরগিনি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Meyer
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ম্যার্কেল
শরণার্থী সংকট থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে ব্যস্ত জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল শুধু প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থাকেননি, প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ঘুরে দেখেছেন৷ কিছু গাড়ির স্বয়ংক্রিয় পার্কিং-এর ক্ষমতা দেখে তিনি খুব খুশি৷ বলেছেন, একমাত্র নারীরাই স্বীকার করে যে, তাঁদের পার্কিং করতে অসুবিধা হয়৷ পুরুষরাও এই সুবিধা উপভোগ করে৷
ছবি: Reuters/K. Pfaffenbach
ডিজাইন মানেই চমক
পর্শে কোম্পানির ‘মিশন ই-কনসেপ্ট’ গাড়ি রূপে-গুণে চমকপ্রদ৷ সামনের ও পেছনের দরজা নিজস্ব ভঙ্গিতে খুলে যায়৷ ব্যাটারিচালিত এই গাড়ি চার্জ করতে নাকি মাত্র ১৫ মিনিট লাগে৷ ফলে অ্যামেরিকার ‘টেসলা’ কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতা হবে এই মডেলের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Rumpenhorst
মঞ্চে অঘটন
বিএমডাব্লিউ কোম্পানির প্রধান হারাল্ড ক্র্যুগার সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলতে বলতে হঠাৎ সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন৷ শীর্ষ কর্তাদের কতটা স্ট্রেস বা মানসিক চাপ সহ্য করতে হয়, এই ঘটনাকে তারই উদাহরণ হিসেবে দেখছেন অনেকে৷ শরীর খারাপ হওয়া সত্ত্বেও ক্র্যুগার তাঁর দায়িত্ব পালন করতে এগিয়ে এসেছিলেন৷
ছবি: Reuters/K. Pfaffenbach
চালকবিহীন গাড়ি
এবারের গাড়ি প্রদর্শনীতে চালকবিহীন গাড়ি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে৷ জার্মানির ডাইমলার গ্রুপ এমনই একটি প্রোটোটাইপের মডেল পেশ করেছে৷ গুগল সহ বিভিন্ন কোম্পানি ভবিষ্যতে এমন গাড়ি বাজারে আনতে চায়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Probst
স্বচ্ছ ডিজাইন
মার্সিডিস কোম্পানির ভবিষ্যতের এই গাড়ির মডেলে বসে চালক ও সহযাত্রীরা কার্যত বিনা বাধায় উপর-নীচ ও আশেপাশের দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন৷ এখনো পর্যন্ত শুধু এর প্রোটোটাইপ তৈরি করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/D. Roland
গাড়ি মানেই দূষণ?
পথে যত গাড়ি, ততই যানজট ও দূষণ৷ জার্মানির পরিবেশবাদী সংগঠন প্রদর্শনীর বাইরে তাই এই নেতিবাচক দিকগুলির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে প্রতিবাদ দেখিয়েছে৷ কার্বন নির্গমন কমাতে গাড়ি-নির্মাতাদের অনীহা তাদের রোষের কারণ৷ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও অটোমোবাইল ও পেট্রোলিয়াম কোম্পানির চাপে বিকল্প জ্বালানির গাড়ির বিকাশ থেমে রয়েছে বলে তাদের অভিযোগ৷