জিপিএস ন্যাভিগেশন ব্যবস্থার কল্যাণে অতি সাধারণ স্মার্টফোনের পর্দায়ও আজকের নিজের অবস্থান দেখা যায়৷ এ ক্ষেত্রে অ্যামেরিকার একচেটিয়া আধিপত্য ভাঙতে আসরে নামছে ইউরোপের গ্যালিলিও৷
বিজ্ঞাপন
মহাকাশ থেকে পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে নিখুঁত অবস্থানের কল্যাণে আজ জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে নিরাপদে পথ চেনা কত সহজ হয়ে পড়েছে৷ ন্যাভিগেশন সিস্টেম আজ সব জায়গায় কাজে লাগছে৷ মার্কিন ‘গ্লোবাল পোজিশনিং সিস্টেম’ বা জিপিএস স্যাটেলাইটগুলি থেকে অবস্থান সংক্রান্ত তথ্যগুলি আসে৷
এই একচেটিয়া আধিপত্য ভাঙতে ইউরোপ ‘গ্যালিলিও’ নামের নিজস্ব ন্যাভিগেশন সিস্টেম গড়ে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে৷ জিপিএস-এর তুলনায় এই স্যাটেলাইটগুলির সিগনাল আরও শক্তিশালী৷ তাছাড়া আরও বেশি ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহার করা হচ্ছে৷ ফলে গোটা বিশ্বে আরও নিখুঁত ও নির্ভরযোগ্যভাবে অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব৷
সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতি এখন ‘অতি’ কাছে
বৃহস্পতি এখন রাতের আকাশে জ্বলজ্বল করছে৷ গ্রহটি আপাতত পৃথিবী থেকে ‘মাত্র’ ৬৬ কোটি ৬০ লাখ কিলোমিটার দূরে৷ কাজেই এখন সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ দেখার সেরা সময়৷
ছবি: NASA
দৈত্যের সঙ্গে বামন
এই হলো বৃহস্পতি, সাথে তার ছোট ছোট ‘চন্দ্র’৷ বৃহস্পতি আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় এবং ওজনদার গ্রহ৷ তার সুবিশাল দেহে ১,৩০০-র বেশি ভূ-গোলকের স্থান হয়ে যাবে৷
ছবি: NASA/ESA/E. Karkoschka/Handout via Reuters
সবচেয়ে মোটা আর সবচেয়ে ভারি
আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলো এইভাবে সাজানো রয়েছে৷ এভাবেই তারা সূর্যের চারপাশে ঘোরে৷ বৃহস্পতি সূর্য থেকে এতটা দূরে যে, একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে তার ১২ বছর সময় লাগে, যে কাজের জন্য পৃথিবীর লাগে মাত্র এক বছর৷
৬৭টি চাঁদ!
একটা চাঁদে নিয়েই আমাদের কত আহ্লাদ৷ সেখানে বৃহস্পতির আছে ৬৭টি চাঁদ - তাদের আবার সব গালভরা নাম: আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড, ক্যালিস্টো...৷
ছবি: NASA/JPL/DLR
সুবিশাল ঘূর্ণিঝড়
বৃহস্পতি গ্রহ তার ‘গ্রেট রেড স্পট’-এর জন্য বিখ্যাত৷ এই স্থানটিতে বিভিন্ন গ্যাস ঘণ্টায় ৫০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ঘুরপাক খাচ্ছে, যা পৃথিবীর সাধারণ ঘূর্ণিঝড়গুলির তুলনায় দ্বিগুণ৷
ছবি: picture alliance/Mary Evans Picture Library
একটানা নজরদারি
৪০ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা বৃহস্পতি গ্রহে ‘প্রোব’ পাঠাচ্ছি৷ ইতিমধ্যে তারা বৃহস্পতির উপরিভাগের আশ্চর্যরকম স্পষ্ট ও বিশদ ছবি পাঠাচ্ছে৷ এই ছবিটি পাঠিয়েছে নাসা-র ‘জুনো’ প্রোব৷ ‘জুনো’ ২০১১ সালের ৫ই আগস্ট পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করে ২০১৬ সালের ৪ঠা জুলাই বৃহস্পতি পৌঁছায়৷ ‘জুনো’-র কাজ হলো এক বছর ধরে বৃহস্পতির ছবি তোলা ও তথ্য সংগ্রহ করা৷
ছবি: NASA
গ্যাসের গ্রহ, পাথরের নয়
এই ছবিটাও নাসা-র ‘জুনো’ প্রোব-এর তোলা৷ ছবিতে যে দু’টি গ্যাসের ঘূর্ণি দেখা যাচ্ছে, তা থেকেই বৃহস্পতি গ্রহের প্রকৃতি স্পষ্ট হয়ে যায়৷ বুধ, শুক্র, পৃথিবী অথবা মঙ্গলগ্রহ পাথরের তৈরি হলেও, বৃহস্পতি ও শনি, আমাদের সৌরজগতের এই সুবিশাল দু’টি গ্রহ পুরোপুরি গ্যাসের তৈরি৷
ছবি: NASA
পায়ের তলায় মাটি থাকবে না...
বৃহস্পতি গ্রহ সূর্যের মতোই প্রধানত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম দিয়ে তৈরি৷ বৃহস্পতির উপরিভাগ শক্ত জমির মতো নয়, তার উপর সহজে চলাফেরা করা যাবে না, কোনো মহাকাশযানও সেখানে নামতে পারবে না৷
ছবি: NASA
গ্যালিলিও-র আবিষ্কারের পিছনে ছিল বৃহস্পতির চাঁদ
১৬১০ সালে গ্যালিলিও গ্যালিলেই তাঁর দূরবীণ দিয়ে বৃহস্পতির তিনটি চাঁদ আবিষ্কার করেন, যেগুলি গ্রহটির চারপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে৷ গ্যালিলিও ধারণা করেন যে, কোপার্নিকাস ঠিকই বলেছিলেন, ব্রহ্মাণ্ডের সব কিছু পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে না৷ বিজ্ঞানের জয়ে ক্যাথলিক গির্জা খুশি হতে পারেনি, গ্যালিলিও-কে উৎপথগামিতার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/UPI
8 ছবি1 | 8
জার্মানিতে গ্যালিলিও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে অভিজ্ঞ প্রযুক্তিবিদদের এক টিম গোটা ব্যবস্থার উপর নজর রাখছে৷ এয়ারোস্পেস প্রযুক্তিবিদ ক্রিস্টিয়ান আরবিঙার বলেন, ‘‘২০১১ সালের অক্টোবর মাস থেকে প্রথম দু'টি স্যাটেলাইট ওড়াচ্ছি এবং এখানে আমাদের টিম সেগুলিকে সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে৷’’
আগামী ২ বছরে এই কনট্রোল সেন্টার ১৮টি গ্যালিলিও স্যাটেলাইট নির্দিষ্ট কক্ষপথে বসিয়ে সেগুলি চালু করবে৷ বিশাল এই প্রকল্পের প্রস্তুতির জন্য প্রায় ১০০ ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞানীর এক দল কাজ করছে৷ ক্রিস্টিয়ান আরবিঙার বলেন, ‘‘স্যাটেলাইটগুলি নিরাপদে ওড়ানো আমাদের মূল কাজের মধ্যে পড়ে৷ উৎক্ষেপণের পর আমরা স্যাটেলাইটের দায়িত্ব নিয়ে যত্ন করে সিস্টেম পরীক্ষা করি৷ পরীক্ষা সফল হলে স্যাটেলাইটগুলিকে রুটিন কাজে লাগাই৷ তারা তখন গ্যালিলিও সিস্টেমের জন্য ন্যাভিগেশন তথ্য সৃষ্টি করে৷’’
প্রাথমিক যান্ত্রিক সমস্যার পর সবকিছু প্রায় নিখুঁতভাবে শুরু হয়েছে৷ রাশিয়ার এক রকেট ২০১১ সালে প্রথম গ্যালিলিও স্যাটেলাইটগুলি মহাকাশে পাঠিয়েছে৷ ২০,০০০ কিলোমিটার উচ্চতায় নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছালে একটি স্যাটেলাইট বাকিগুলির সঙ্গে এক নেটওয়ার্কে যোগ দেয়৷ পৃথিবীর বুকে এক সেন্টিমিটারও তাদের নজর এড়ায় না৷
২০২০ সালের মধ্যে মোট ৩০টি গ্যালিলিও স্যাটেলাইট মিলে পৃথিবীর বুকে বিনামূল্যে দিকনির্ণয় সম্ভব করবে৷ ততদিন পর্যন্ত এই বিশাল কর্মসূচির জন্য ৫০০ কোটি ইউরোর বেশি ব্যয় হবে৷ কিন্তু তার বদলে এক নিখুঁত ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা পাওয়া যাবে৷
আনুশেহ আনসারি: এক মহিয়সী মুসলিম নারী
১০ বছর আগে বিশ্বের প্রথম নারী মহাকাশ পর্যটক হয়ে সারা বিশ্বে শীর্ষ শিরোনাম হয়েছিলেন আনুশেহ আনসারি৷ প্রতি বছরের মতো আবারও শিরোনামে আসার সময় হয়েছে তাঁর৷ ২০০৬ সালে যে সেপ্টেম্বরেই মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছিলেন আনুশেহ!
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Frei
৪০তম জন্মদিনের পর
আনুশেহ আনসারির জন্ম ইরানের মাশাদ শহরে, ১৯৬৬ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর৷ ২০০৬ সালে তাঁর ৪০তম জন্মদিনের মাত্র পাঁচদিন পরই বিশ্বের প্রথম নারী পর্যটক হিসেবে মহাকাশ যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Marmur
নিজের টাকায় মহাকাশযাত্রা
১২ই সেপ্টেম্বর প্রায় দুই কোটি ডলার খরচ করে মহাকাশযানের যাত্রী হয়েছিলেন তিনি৷ খরচটা নিজেই দিয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Frei
সেই নভোযান
কাজাখস্তানের বাইকোনুর স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করে নভোযান৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Y. Kochetkov
‘মাই ড্রিমস অফ স্টার্স’
১২ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর- এই ১২ দিনের মহাকাশ যাত্রা নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে৷ গ্রন্থটির নাম, ‘মাই ড্রিমস অফ স্টার্স’৷
ছবি: Getty Images/A. Rentz
ইরান থেকে যুক্তরাষ্টে
ইরানে জন্ম নিলেও নিজের পরিবারের সঙ্গে ১৯৮৪ সালেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান আনুশেহ৷ তখন তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Marmur
প্রকৌশলী আনুশেহ
যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তড়িৎ প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন আনুশেহ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Y. Kochetkov
সহযাত্রীদের সঙ্গে
আরো দুই মহাকাশযাত্রীর সঙ্গে আনুশেহ আনসারি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Ilnitsky
স্বামীর সঙ্গে
স্বামীর সঙ্গে আনুশেহ৷ মহাকাশযান কাজাখস্তানে ফিরে আসার পরই তোলা হয়েছিল ছবিটি৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Beck
পঞ্চাশ বছর পূর্তি
এ বছর ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে আনুশেহ আনসারির৷ জীবনের অর্ধশত পূর্তির আগে অনেক পুরস্কার এবং স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি৷ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবসায়ী হিসেবে তাঁর সাফল্য ঈর্ষনীয়৷