1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দিল্লির ভোটে অশান্তি নেই, উৎসবের মেজাজ আছে

২৫ মে ২০২৪

ভোটকেন্দ্রটা ছিল একটি প্রাথমিক স্কুলে। তার সামনে বসে আছেন পুলিশ কর্মীরা। একটাই প্রশ্ন, মোবাইল নেই তো?

দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে একটি ভোটকেন্দ্রে মানুষ ভোট দিতে যাচ্ছেন। যাদের ভোট দেয়া হয়ে গেছে তারা বেরিয়ে আসছেন।
দিল্লিতে একটি ভোটকেন্দ্রের ছবি। উত্তেজনা নেই। সপরিবারে মানুষ ভোট দিতে গেছেন। ছবি: Rauoof Ganie/DW

এরপর ঢুকে পড়া গেলো স্কুলের ভিতরে। যাদের ভোট দেয়া হয়ে গেছে, তারা ফিরছেন। তাদের পাশ দিয়ে সপরিবারে মানুষ ঢুকছেন ভোট দিতে। চেনা-পরিচিতদের দেখে হাসি বা গল্পও চলছে।

কোনো উত্তেজনা নেই। কোনো ঝগড়া নেই। অভিযোগও নেই। যারা গাড়ি করে ভোট দিতে আসছেন তারা গেটের পাশেই গাড়ি পার্ক করছেন। সঙ্গে বয়স্ক মানুষ থাকলে একেবারে গেটের সামনে গাড়ি রেখে তাকে নামিয়ে পাশে পার্ক করতে হচ্ছে।

পুলিশও হাসিমুখে সবকিছু সামলাচ্ছে। তাদেরও উত্তেজিত হওয়ার দরকার পড়ছে না।

কিছু বুথে লম্বা লাইন, কিছু বুথ ফাঁকা। সেরকমই একটি ফাঁকা বুথে ভোট দেয়ার কাজ শেষ করে বাইরে আসতে দেখা অনুপ ঠাকুরের সঙ্গে। অনুপ চিত্তরঞ্জন পার্কের আপ নেতা। বললেন, ''দিল্লিতে ভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা আছে, কিন্তু কোনো লড়াই-ঝগড়া নেই।  এই তো আপ ও বিজেপি-র ক্যাম্প অফিস পাশাপাশি। ওদের খাবার আসতে দেরি হচ্ছিল বলে ব্রেড পকোরা দিয়ে এলাম। এরকমই আমাদের সম্পর্ক।''

ভোটকেন্দ্রের বাইরে পুলিশ ছিল। তারা ভোটদাতাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ছবি: Rauoof Ganie/DW

অনুপ বললেন, ''এবার দিল্লিতে একটা মজার ঘটনা ঘটছে। আপ-কংগ্রেসের জোট হওয়ার পর সোনিয়া, রাহুলদের আপকে ভোট দিতে হচ্ছে। আর কেজরিওয়াল ভোট দিচ্ছেন কংগ্রেসকে। কারণ, সোনিয়াদের  নিউদিল্লি লোকসভা আসনে আপ লড়ছে, আর কেজরিওয়াল যেখানে ভোট দেন, সেখানে প্রার্থী কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমার।''

দিল্লির মানুষের কাছে ভোটটা অনেকটা উৎসব পালনের মতো।  প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত রায়চৌধুরী যেমন বলছিলেন, ''এখানে সবাই পরিবারের সঙ্গে ভোট দিতে আসেন। আনন্দ করে ভোট দেন। দিল্লি যেহেতু নির্দিষ্ট কারো শহর নয়, ভারতের সব প্রদেশের মানুষ এখানে কমবেশি আছেন এবং উত্তেজনাহীন ভোট দেয়ার একটা রীতি আছে, তাই রাজধানীর ভোট সবসময়ই শান্তিপূর্ণ।''

একগাল হাসতে হাসতে ভোট দিয়ে বেরোচ্ছিল সায়নী। এই প্রথমবার ভোট দিলেন তিনি। ভোট দিতে পেরে খুবই আনন্দ পেয়েছেন। ভিতরে অনেক পরিচিত মানুষের সঙ্গেও দেখা হয়েছে। দিল্লির ৪৫-৪৬ ডিগ্রি গরমে একটু গল্পও করে নিয়েছেন। এটা সকলের ক্ষেত্রেই সত্যি। অনেক মানুষের সঙ্গে দেখা হয়ে যায় ভোটকেন্দ্রে, যেহেতু দিল্লির ভোটের আবহাওয়া শান্ত, তাই সেখানে একটু গল্প করার সুয়োগ আছে।

গরম উপেক্ষা করে দিল্লিতে ভোট দিয়েছেন ভোটদাতারা। ছবি: Rauoof Ganie/DW

চিত্তরঞ্জন পার্কের বি ব্লকের একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে গাড়ি থেকে নামলেন এক বয়স্কা নারী। চলতে কষ্ট হয়। তাকে দেখেই প্রায় দৌড়ে এলেন এক পুলিশকর্মী। বললেন, একটু দাঁড়ান। মিনিট দুয়েকের মধ্যে তিনি হুইল চেয়ার নিয়ে এলেন। বয়স্কা নারী সেখানে বসলেন। সেই নারী যাতে পা-টা ঠিকভাবে রাখতে পারেন, তার জন্য আরেকজন পুলিশ কর্মী ঝুঁকে পড়ে তার ব্যবস্থা করলেন। তারপর একজন সেই হুইল চেয়ার নিয়ে ঢুকলেন বুথের ভিতরে।

এটাও কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভোটকেন্দ্রের সামনে তিনটি করে হুইল চেয়ার রাখা ছিল। বয়স্ক মানুষ দেখলে তাদের পুলিশই বলছিল হুইল চেয়ার নিয়ে নিন। ভোটকেন্দ্রের সামনে রাখা ছিল ব্যাটারিচালিত গাড়ি। খুব বেশি বয়সি কোনো ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া ও বাড়ি পৌঁছে দেয়ার জন্য।

এ সব দেখে মনে হওয়া স্বাভাবিক, দিল্লিতে ভোট দেয়া মানে সত্যিকারের উৎসব। 

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ