1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্ষকদের ফাঁসি

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩

দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের ৯ মাস পর চারজন অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনালেন দিল্লির ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্টের বিচারক খান্না৷ গত বছরের ১২ই ডিসেম্বর রাতে দিল্লির এক চলন্ত বাসে ৬ জন ২৩ বছরের এক তরুণীকে বিভৎসভাবে ধর্ষণ এবং খুন করে৷

Indian youth protest outside the Saket Court complex in New Delhi on September 10, 2013. An Indian court convicted four men of the gang rape and murder of a physiotherapy student on board a moving bus in a crime that sickened the nation. AFP PHOTO/ Prakash SINGH (Photo credit should read PRAKASH SINGH/AFP/Getty Images)
ছবি: AFP/Getty Images

অবশেষে শুক্রবার ১৩ই সেপ্টেম্বর দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের চারজন অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিলেন দিল্লির ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্টের বিচারক যোগেশ খান্না৷ বিচারক এই নৃশংস অপরাধকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম‘ বলে মন্তব্য করেন৷ চারজন অপরাধী – মুকেশ, অক্ষয়, বিনয় ও পবনের বয়স ১৯ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে৷ রায় শুনে একজন অপরাধী ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে, অন্য তিনজন চিৎকার করে প্রাণভিক্ষা চায়৷

বিচারকের মতে, নারী নিগ্রহ এবং ধর্ষণের ঘটনা যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে আদালত চোখ বুজে থাকতে পারেনা৷ শাস্তি ঘোষণার সময় আদালতের ভেতরে ও বাইরে দেশবিদেশের মিডিয়া থেকে মহিলা সংগঠনের সমর্থকরা, সমাজ কর্মীরা এবং আমজনতার ঠাসাঠাসি ভিড়৷ গত ১১ই সেপ্টেম্বর শেষ শুনানির সময় বিচারপতি কেন ফাঁসির সাজা দেয়া উচিত বা কেন অনুচিত, সে সম্পর্কে আসামিপক্ষের এবং বিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনেন৷ আসামী পক্ষের আইনজীবীর তরফে অপরাধীদের বয়স কম হওয়ার সুবাদে একবার শেষ সুযোগ দেবার আবেদন জানানো হয়৷

বিচারক এই নৃশংস অপরাধকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম‘ বলে মন্তব্য করেনছবি: Reuters

এই সাজা ঘোষণা নিয়ে সমাজের সর্বস্তরে বিতর্ক এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়৷ অধিকাংশের মত, ফাঁসি না হলে সমাজের কাছে ভুল বার্তা যেত৷ ধর্ষকদের সাহস বেড়ে যেত৷ এবার ঐ ধরনের অপরাধটা করতে অপরাধীকে অন্তত দুবার ভাবতে হবে৷ কাজেই ফাঁসির সাজাই উপযুক্ত এবং মৃত তরুণী ‘ নির্ভয়ার‘ আত্মার প্রতি ন্যায়বিচার৷ মৃত তরুণী যাঁকে কেউ নির্ভয়া, কেউ দামিনী সম্বোধন কোরে থাকেন, আদালতে উপস্থিত তাঁর মা-বাবা শুধু বলেন ‘‘আমার মেয়ে যখন ঐ পশুগুলোর কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিল, ওরা কি তা দিয়েছিল? তাহলে কেন ওদের প্রাণভিক্ষা দেয়ার কথা উঠছে? ওদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে, ফাঁসি কার্যকর হলে আমাদের মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে৷ উল্লেখ্য, ফাঁসির আদেশ দিল্লি হাইকোর্টের অনুমোদনসাপেক্ষ৷ আসামিপক্ষের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে আপীল করবেন৷

মুষ্টিমেয় কিছু অংশের মতে, মৃত্যুদণ্ড মানুষের মৌলিক অধিকারের খেলাপ৷ কেউ খুনি হয়ে জন্মায়না৷ পরিবেশ ও পরিস্থিতি তাকে তৈরি করে৷ মানুষ না বুঝে ভুল করে পরে অনুতপ্ত হয় এবং নিজেকে শুধরে নেয়, ভালো কাজে মন দেয়, এমন দৃষ্টান্তও আছে৷ ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ রচয়িতা বাল্মীকি একজীবনে দস্যু রত্নাকর ছিলেন৷

সমাজ বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদের প্রাক্তন সদস্যা বর্তমানে এক বিশিষ্ট নারী সক্রিয়বাদী তিস্তা বাগচি ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘ব্যক্তিগতভাবে আমি মৃত্যুদণ্ডের পক্ষপাতী নই৷ মৃত্যদণ্ড যদি ধর্ষণের প্রতিষেধক হতো, তাহলে ২০০৪ সালে কলকাতার ধনঞ্জয়ের ফাঁসির পর আর ধর্ষণ হতো না৷ তবে তার মানে এই নয় যে, অপরাধীরা শাস্তি পাবেনা৷ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া যেতে পারতো৷'' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশে তিনি দেখেছেন, ধর্ষণের পর প্রথমেই ধর্ষিতা দিকেই আঙুল তোলা হয়৷ তবে ধর্ষণের বিরুদ্ধ জনমতের সঙ্গে তাঁর দ্বিমত নেই৷ পূর্ণ সহানুভূতি আছে তাঁদের প্রতি, ডয়চে ভেলেকে বলেন নারীবাদী তিস্তা বাগচি৷

অন্য এক নারীবাদীর মতে, যাবজ্জীবন জেল হলে তাদের শাস্তি অনেক লঘু হতো৷ করদাতাদের পয়সায় জেলের ভাত খেয়ে, ঘুমিয়ে, টিভি দেখে দিব্যি জীবন কাটিয়ে দিত৷ সংশ্লিষ্ট আসামীরা গরিব বলে জেলের বাইরে থাকলে তাদের খেটে খেতে হতো৷ মৃত্যুদণ্ড উচিত শাস্তি৷ এরপর সমাজের মানসিকতা পরিবর্তন করার কিংবা ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ