দীর্ঘ সময় কাজ করায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে: ডাব্লিওএইচও
১৭ মে ২০২১
সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ৷ অতিরিক্ত কাজ করার কারণে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে কয়েক হাজার মানুষ৷ মহামারিতে আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা, ডাব্লিওএইচওর৷
বিজ্ঞাপন
এক গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় পরিশ্রম করা মানুষের সংখ্যা বর্তমানে শতকরা নয় ভাগ বেড়েছে৷ দীর্ঘ সময় কাজ এবং এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে করা গবেষণাটির ফলাফল বিশ্ব এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, ২০১৬ সালে অতিরিক্ত কাজ করার কারণে স্ট্রোক এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাত লাখ ৪৫ হাজার মানুষ৷ যা ২০০০ সালের তুলনায় শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ বেড়েছে৷
ডাব্লিওএইচওর পরিবেশ অধিদপ্তরের জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক মারিয়া নায়রা বলেন, ‘‘সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ৷ আমরা চাই গবেষণার এই তথ্যটির মধ্য দিয়ে কর্মীরা আরও বেশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা পাক৷’’
সংস্থাটির মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাধনম ঘেব্রেয়েসুস মনে করেন, করোনায় অনেক মানুষের কাজের পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তন এসেছে, বাড়ি এবং কাজের মধ্যে তেমন পার্থক্যও থাকছে না৷ এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘কোনো কাজই জীবনের চেয়ে বেশি মূল্যবান নয়, কর্মীদের স্বাস্থ্যরক্ষার ক্ষেত্রে নিয়োগদাতা, সরকার এবং কর্মীদের একমত হওয়া দরকার৷’’
ডাব্লিওএইচও এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) অনুমান করেছে যে, সপ্তাহে কমপক্ষে ৫৫ ঘন্টা কাজ করার ফলে ২০১৬ সালে তিন লাখ ৯৮ হাজার জন মানুষ স্ট্রোক এবং তিন লাখ ৪৭ হাজার জন হৃদরোগে মারা গেছেন৷ ২০০০ এবং ২০১৬ সালের মধ্যে দীর্ঘ সময় কাজ করার কারণে স্ট্রোকে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে শতকরা ৪২ ভাগ এবং হৃদরোগে মৃত্যু বেড়েছে শতকরা ১৯ ভাগ৷
সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০ ঘন্টা কাজ করার তুলনায় ৫৫ ঘন্টা বা তার বেশি কাজ করলে স্ট্রোকে মৃত্যুর ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ এবং হৃরোগে মারা যাওয়ার ঝুঁকি শতকরা ১৭ ভাগ বেশি থাকে৷
গবেষকরা বলেছেন, ২০১৬ সালে অতিরিক্ত সময় কাজের চাপের শিকার শতকরা ৭২ ভাগই ছিলেন পুরুষ এবং তাদের মধ্যে বেশিরভাগই মধ্যবয়সী বা তার বেশি৷ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে ছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষ৷
এনএস/কেএম(রয়টার্স, ডিপিএ)
স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমানোর সেরা কিছু কৌশল
যাঁরা প্রায়ই মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন তাঁদের ডিপ্রেশন, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো অসুখ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি৷ তাই শত ব্যস্তার মাঝেও নিজেকে কীভাবে এ সব অসুখের ঝুঁকি থেকে দূরে রাখা সম্ভব, তার সেরা টিপসগুলো জেনে নিন৷
ছবি: Colourbox
ব্যায়াম বা খেলাধুলা
হালকা ব্যায়াম বা খেলাধুলা মানসিক চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে৷ জগিং বা সাইকেল চালালে স্ট্রেস হরমোন কমে গিয়ে হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে৷ সমীক্ষায় দেখা গেছে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত মানুষকেও হালকা খেলাধুলা বা ব্যায়াম প্রফুল্ল রাখে৷ তবে অবশ্যই মানসিক চাপ আরো বেড়ে যাওয়ার মতো কোনো প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলা নয় কিন্তু!
ছবি: picture alliance/dpa/B. Pedersen
রিল্যাক্স করার কৌশল
পেশী রিল্যাক্স করার নতুন কৌশলগুলোর মধ্যে যোগব্যায়াম বা ইয়োগা এবং মেডিটেশনের কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ যার মাধ্যমে শারীরিক এবং মানসিক চাপ কমে শরীর ও মনকে করে হালকা ও ফুরফুরে৷ বিশেষজ্ঞের মতে, প্রচণ্ড চাপ থাকা সত্ত্বেও অনেকের ক্ষেত্রেই ইয়োগা বা মেডিটেশনের মতো রিল্যাক্স করার এই নতুন কৌশল বেশ সাহায্য করে৷
ছবি: Colourbox
সবুজ প্রকৃতি সুস্থ রাখে
নেদারল্যান্ডের গবেষকরা খুঁজে বের করেছেন যে, সবুজ রং মানুষের নার্ভকে একদিকে যেমন শান্ত রাখে তেমনি আনন্দিতও করে৷ কারণ সমীক্ষায় জানা যায়, যাঁরা শহরের কেন্দ্রস্থলে বসবাস করেন তাঁদের চেয়ে যাঁদের বাড়িতে বাগান আছে বা সবুজে ঘেরা বাগানের কাছাকাছি বসবাস করেন, তাঁরা মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন৷
ছবি: Colourbox
কাজের ফাঁকে বিশ্রাম
শরীর এবং মন দু’টোরই মাঝে মাঝে ভালোভাবে বিশ্রামের প্রয়োজন হয়৷ বিশেষ করে যাঁরা সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন, তাঁদের মানসিক চাপে রক্তে স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়৷ এক্ষেত্রে কাজের ফাঁকে খানিকক্ষণ মুক্ত বাতাসে হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করলে আবার বেশ তরতাজা বা ফ্রেশ হয়ে কর্মস্থলে ফেরা যায়৷
ছবি: Fotolia/Andreas Haertle
মনকে শান্ত করার বিশেষ জায়গা
কিছুক্ষণের নীরবতা মাঝে মাঝে শরীর ও মনকে এতটাই শান্ত করতে পারে যে মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের বিরুদ্ধে তা ঠিক যেন ওষুধের মতো কাজ করে৷ তাই বাড়ির কোথাও একটি খালি ঘরে দিনে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় কাটাতে পারেন৷ যারা বড় শহরে থাকেন, তারা চলে যান কোনো মিউজিয়ামে বা লাইব্রেরিতে৷ আর শরীর ও মনকে শান্ত করতে পারে মসজিদ, মন্দির বা গির্জার মতো ধর্মীয় স্থানগুলোও৷