1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুঃসময়ে গণজাগরণ মঞ্চ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৮ এপ্রিল ২০১৪

বহুল আলোচিত গণজাগরণ মঞ্চে এখন ভাঙনের সুর৷ ছাত্রলীগসহ ৫টি সংগঠন এর জন্য মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারকে দায়ী করেছেন৷ ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, মঞ্চে কোনো ভাঙন দেখা দেয়নি৷ সরকার গণজাগরণ মঞ্চের ব্যাপারে অবস্থান পরিবর্তন করেছে৷

Bangladesch Protest gegen Pakistan 19.12.2013
ছবি: DW

গত বছরের ৫ই ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলে এর প্রতিবাদে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ৷ ঐ দিন রাত থেকে শাহবাগে টানা অবস্থান আর হাজারো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়৷ এই আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত সরকার ট্রাইব্যুনাল আইনে পরিবর্তন এনে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের সুযোগ দেয়৷ আর সেই আপিলে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় হয়৷ তা কার্যকর হয় গত ডিসেম্বরে৷ গণজাগরণ মঞ্চের দাবিতেই আইনে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনেরও বিচারের বিধান করা হয়৷ সেই আইনের কারণে এখন জামায়াতে ইসলামীও যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে৷

সেই গণজাগরণ মঞ্চ এখন দুঃসময়ের মুখোমুখি৷ ডিসেম্বরে ঢাকার পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাও করতে গিয়ে পুলিশের হামলার শিকার হন মঞ্চের কর্মীরা৷ তখন ঠিক আঁচ করা যায়নি৷ তবে গত এক সপ্তাহে দুঃসময় স্পষ্ট হয়েছে৷ আর এখন চলছে পালটাপালটি বিবৃতি, সংবাদ সম্মেলন৷

গত ৩রা এপ্রিল রাতে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়৷ এর জন্য দায়ী করা হয় ছাত্রলীগকে৷ এর পরদিন শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চকে প্রতিবাদ সমাবেশ করতে দেয়নি পুলিশ৷ পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ এবং ৭ জনকে আটক করে৷ এরই মধ্যে গণজাগরণ মঞ্চের একটি প্রতিপক্ষ দাঁড়িয়ে গেছে – ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড' এবং ‘গৌরব একাত্তর'৷ শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ কোনো কর্মসূচি দিলে তারাও একই স্থানে কর্মসূচি দেয়৷ তাদের সঙ্গে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের কয়েকবার হাতাহাতিও হয়েছে৷

মঙ্গলবার গণজাগরণ মঞ্চ এবং ৫টি ছাত্র সংগঠনের পালটাপালটি সংবাদ সম্মেলনে বিভেদ চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছে৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, জাসদ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ঐক্য ফোরাম ও বাংলাদেশ ছাত্র সমিতি-র এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘‘গণজাগরণ মঞ্চ একটি অরাজনৈতিক ও দলনিরপেক্ষ আন্দোলন৷ এটি কখনোই রাজনৈতিক দল হতে পারে না৷ যদি মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান, তবে মঞ্চের বাইরে গিয়ে তা করতে হবে৷ নইলে পুরো জাতির সঙ্গে বেইমানি করা হবে৷''

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের অগণতান্ত্রিক ও একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণকে মঞ্চের বিভক্তির কারণ হিসেবে তুলে ধরেন৷ মুখপাত্রের পদে পরিবর্তন আসবে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এটা সত্যি যে ইমরান এইচ সরকার গণজাগরণ মঞ্চের প্রতীক হয়ে উঠেছেন৷ আন্দোলনে ক্ষতি হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমরা নেব না৷''

জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি সামছুল ইসলাম বলেন, ‘‘গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ পক্ষের সব রাজনৈতিক দল সম্পৃক্ত৷ মঞ্চের মুখপাত্র একে নিয়ে নতুন কোনো রাজনৈতিক দল করার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে থাকলে, তা মঞ্চের বাইরে গিয়ে করতে পারেন৷''

অন্যদিকে রাজধানীর পরিবাগে সাহিত্য বিকাশ কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার দাবি করেন, ‘‘মঞ্চের ব্যাপারে সরকার অবস্থান পালটেছে৷ সরকারের নৈতিক অবস্থানের পরিবর্তন ও বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে মঞ্চের সঙ্গে বিরোধ শুরু হয়েছে৷''

মঞ্চের ৬ দফা দাবি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ত্বরান্বিত করতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘‘আমরা বলতে চাই মঞ্চের কর্মীদের ওপর আক্রমণ না করে কী ভাবে বিচার ত্বরান্বিত করা যায়, তা সরকারের ভাবা দরকার৷''

গণজাগরণ মঞ্চের ঐক্য নিয়ে কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি দাবি করে ইমরান আরও বলেন, ‘‘এখনো এমন কোনো পরিস্থিতির তৈরি হয়নি৷ যে সব বিষয় নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করা যাবে৷''

মঞ্চের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘শুরু থেকেই মঞ্চের কর্মী সমর্থকরা কাজ করেছেন৷ যখন যা প্রয়োজন ছিল, তা কর্মীরাই ব্যবস্থা করেছে৷ এখানে কোনো আর্থিক লেনদেন ছিল না, ভবিষ্যতেও এটাকে ‘অ্যভয়েড' করবো৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ