উত্তাল সমুদ্রে আটকে পড়া দুই কিশোর সাঁতারুর জীবন বাঁচিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এক ড্রোন৷ সমুদ্রে ড্রোন দিয়ে এটিই প্রথম কারো জীবন বাঁচানোর ঘটনা৷
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার দুই কিশোর নিউ সাউথ ওয়েলেস ও কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের সীমান্তের কাছে লেনক্স হেড নামের একটি জায়গায় সাঁতার কাটছিলো৷ হঠাৎ সেখানে পানি ১০ ফুট পর্যন্ত ফুলে উঠতে থাকে৷
বিচে বেড়াতে যাওয়া লোকজন বিষয়টি দেখতে পেয়ে উদ্ধার অ্যালার্ম বাজিয়ে দেয়৷ সঙ্গে সঙ্গে পাইলট তাঁর উদ্ধারকারী ড্রোনকে কাজে লাগিয়ে দেন৷ ‘‘আমি তৎক্ষণাৎ ড্রোনটিকে জায়গামতো পাঠাই৷ এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যে উদ্ধারের পডটি ফেলি৷’’ গোল্ড কোস্ট বুলেটিনকে বলেন লাইফগার্ড সুপারভাইজার জ্যায় শেরিডান৷
ইনস্টাগ্রাম নয়, ড্রোনস্টাগ্রামের জগৎ
ড্রোন দিয়ে আকাশ থেকে তোলা ছবিকে বলে – ইনস্টাগ্রামের নকলে – ড্রোনস্টাগ্রাম৷ ‘ড্রোনস্টাগ্রাম’ নামের ফরাসি অনলাইন পরিষেবা আর ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পত্রিকা মিলে বছরের সেরা ড্রোনস্টাগ্রাম ছবিগুলো বাছাই করেছে৷
ছবি: dronestagram/jcourtial
ল্যাভেন্ডার ফুলের বন্যা
ফ্রান্সের প্রোভোঁস অঞ্চলে ল্যাভেন্ডার ফুলের চাষ হয় সুগন্ধী তৈরির জন্য৷ ট্র্যাক্টর দিয়ে যখন সবে ‘ফুল তোলার’ কাজ শুরু হচ্ছে, ঠিক তখন ড্রোনের ক্যামেরার শাটার টিপেছেন জেরোম কুর্তিয়া – এবং ড্রোনস্টাগ্রাম প্রতিযোগিতার ‘‘প্রকৃতি’’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছেন৷
ছবি: dronestagram/jcourtial
সর্পিল রাস্তা
রক্তচোষা কাউন্ট ড্র্যাকুলার দেশ ট্রান্সিলভানিয়ার এই আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথটির ছবি তোলেন রোমানিয়ান ফটোগ্রাফার কালিন স্টান – এবং ‘‘প্রকৃতি’’ পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন৷
ছবি: dronestagram/Calin-Andrei Stan
তুষারসূর্য
ফরাসি নাগরিক ফ্লোরিওঁ লেদুর সুমেরু অঞ্চল এতোই পছন্দ যে, তিনি সম্প্রতি বাস উঠিয়ে আইসল্যান্ডে দেশান্তরী হয়েছেন৷ ছবিটি তোলেন গ্রিনল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে৷ মাইনাস বিশ ডিগ্রি তাপমাত্রায় বরফের আস্তরণের তিন কিলোমিটার উপরে ড্রোনটা আদৌ কাজ করবে কিনা, তাই নিয়েই ছিল চিন্তা৷ পরিবর্তে সেই ছবির জন্য জন্য পেলেন ‘‘প্রকৃতি’’ বিভাগে তৃতীয় পুরস্কার৷
ছবি: dronestagram/Florian Ledoux
ব্যাঙের ছাতা
দুবাইয়ের স্কাইক্রেপারগুলোকে ড্রোন থেকে সেরকমই দেখায় বটে – ইস্পাত আর কংক্রিটের তৈরি আখাম্বা সব ব্যাঙের ছাতা, দশ বছর আগেও যেখানে মরুভূমি ধু ধু করত, সেখানে কোন জাদুবলে হঠাৎ গজিয়ে উঠেছে৷ লেবাননের মুকার্জেল তাঁর এই ছবিটির জন্য ‘‘নগরজীবন’’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন৷
ছবি: dronestagram/Bachirm
আসল স্পাইডারম্যান
মস্কোর মার্কারি টাওয়ার-এর কাচ যারা পরিষ্কার করেন, তাদের ছবি তোলার জন্য আলেক্সেই গঞ্চারভকে ড্রোন ব্যবহার করতে হয়েছে৷ দেখলে মনে হবে, তারা কাচ পরিষ্কার করছেন না – গোটা শহরটাকেই পরিষ্কার করছেন৷ ‘‘নগরজীবন’’ বিভাগে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে ছবিটি৷
ছবি: dronestagram/Alexeygo
গেম, সেট অ্যান্ড ম্যাচ
তিনটিই জিতেছেন মার্টিন সাঞ্চেজ – এই ছবিটির জন্য ‘‘মানুষ’’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার জয় করে৷ নিউ জার্সির একটি ফাঁকা টেনিস কোর্টের এককোণে মার্টিনকে পড়ে থাকতে দেখে অন্য প্লেয়াররা ভেবেছিলেন মার্টিন বোধহয় পড়ে গেছেন বা চোট পেয়েছেন!
ছবি: Martin Sanchez
সৃজনশীলতা
ফরাসি নাগরিক টিবো বেগু ও তাঁর বান্ধবী মানোঁ আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুবান্ধবদের মানোঁর সন্তানসম্ভবা হওয়ার খবরটা দিতে চাইছিলেন – একটু অন্যভাবে৷ তাই নর্মান্ডির সমুদ্রসৈকতে তোলা এই ড্রোনস্টাগ্রাম: টিবো আর মানোঁ মাটিতে শুয়ে ভিডিও গেমের কায়দায় পরস্পরের দিকে একটি পুরনো প্যারাম্বুলেটার ঠেলে দিচ্ছেন৷ ছবিটি ‘‘সৃজনশীলতা’’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার পায়৷
সার্ফবোর্ড, অথবা রাবারের ডিঙিতে করে কাউকে বাঁচানোর চেয়ে উদ্ধারকাজে ড্রোনের ব্যবহার অস্ট্রেলিয়ায় বেশ সফলতা পাচ্ছে৷ এগুলো যে শুধু সাঁতারু বা সার্ফারদের চিহ্নিত করতে পারছে তা-ই নয়, হাঙর ও জেলিফিসদেরও চিহ্নিত করতে পারে এবং পানিতে থাকা মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে আনতে পারে৷ ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে হাজারো ছবি তুলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাঁটিয়ে নানা বস্তু চিহ্নিত করার ক্ষমতা আছে এই ড্রোনগুলোর৷ যেখানে খালি চোখ ১৬ ভাগ নিখুঁত, সেখানে ড্রোনগুলোর সফটওয়্যার ৯০ ভাগ নিখুতভাবে হাঙর বা সমুদ্রে থাকা কোনো কিছু চিহ্নিত করতে পারে৷
সার্ফিং এবং সাঁতার অস্ট্রেলিয়ায় খুবই জনপ্রিয়৷ তাই এসব করতে গিয়ে কারো জীবন যেন ঝুঁকিতে না পড়ে, সেজন্য দেশটিতে নানা কৌশল অবলম্বন করা হয়৷ তার একটি ড্রোনের ব্যবহার৷
দেশটির সর্বত্র ডজন ডজন ড্রোন উড়ছে শুধু মানুষের নিরাপত্তা দেবার জন্য৷