দুই জেলায় কুর্মিদের রেল ও সড়ক অবরোধ, ভোগান্তি
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২মঙ্গলবার সকাল থেকেই খড়্গপুরের খেমাশুলিতে এবং পুরুলিয়ার কুস্তাউরে রেল অবরোধ করছেন কুর্মি সম্প্রদায়ের মানুষ। খেমাশুলিতে তারা রাস্তাও অবরোধ করেছেন। ছয় নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখায় দুর্ভোগে পড়েছেন ট্রাকচালকরা। রেল অবরোধ করে রাখায় কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। দুর্ভোগে যাত্রীরা।
এর পাশাপাশি আদিবাসীরা কলকাতা এসে হাওড়া ব্রিজে মিছিল করেছেন। এর ফলে সেখানেও যানজট হয়েছিল।
কুর্মিদের দাবি
এই আন্দোলন করছে কুর্মি মাহাতো সমাজ। তাদের দাবি, কুর্মিদের পশ্চিমবঙ্গে তফশিলি উপজাতিভুক্ত করতে হবে। কুড়েমালি ভাষাকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। এছাড়া সারনা ধর্মের সরকারি কোড চালু করতে হবে। সারনা অবশ্য মূলত সাঁওতালদের ধর্ম।
কুর্মি মাহাতো সমাজ জানিয়ে দিয়েছে, দাবি মানা না হলে আন্দোলন চলবে।
ট্রেন বাতিল
কুর্মিদের অবরোধের জেরে চারদিনে ৪০টির মতো ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করা ট্রেনের মধ্যে আছে, টাটানগর-হাওড়া, টাটানগর-বারবিল, ঝাড়গ্রাম-ধানবাদ, টাটানগর-দানাপুর, টাটানগর-আসানসোল, হাওড়া-বারবিল জনশতাব্দী, চক্রধরপুর-টাটানগর এক্সপ্রেস।
জাতীয় সড়ক অবরোধ
খেমাশুলিতে রেলের পাশাপাশি জাতীয় সড়কও অবরোধ করে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। এর ফলে চারদিন ধরে প্রচুর ট্রাক দাঁড়িয়ে পড়েছে। এতদিন ধরে আটকে থাকার পর ট্রাকচালকরা অধৈর্য হয়ে পড়ছেন। ট্রাক চালকদের খাবার ও জলও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
কলকাতাতেও জমায়েত
কলকাতাতেও রানি রাসমণি রোডে সাঁওতালরা জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তারা ট্রেনে করে কলকাতা এসে পৌঁছান। হাওড়া ব্রিজ থেকে মিছিল করে রানি রাসমণি রোডে যান। সেসময় কলকাতাতেও যানজট হয়। তাদের দাবি, সাঁওতালি ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে হবে, সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষা দিতে হবে। তারা মুখ্যমন্ত্রীকে ডেপুটেশনও দেবেন।
আলোচনা
শুক্রবার বেলা তিনটে নাগাদ পশ্চাদপর জাতি কল্যাণ দপ্তরের কর্মকর্তারা আন্দোলনরত কুর্মিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানে তারা কুর্মিদের জানিয়েছেন, তারা কেন্দ্রের কাছে চিঠি পাঠাচ্ছেন। চিঠির প্রতিলিপিও নেতাদের দেয়া হয়। নেতারা জানিয়েছেন, তারা বিশেষজ্ঞদের মত নেবেন। তারপর আন্দোলন তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তাদের অধিকাংশ দাবিই কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় পড়ে। যেমন ভাষাকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি কেন্দ্রের হাতে। তাদের তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেয়ার বিষয়টি রাজ্যের সুপারিশের পর কেন্দ্রীয় সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, টিভি৯, এবিপি আনন্দ)