ভারতের সঙ্গে এক বিলিয়ন পাউন্ডের বাণিজ্যচুক্তি হতে পারে যুক্তরাজ্যের। ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়েও মোদী-জনসন কথা হওয়ার সম্ভাবনা।
ছবি: Stefan Rousseau/AP Photo/picture alliance
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার রাতে দুইদিনের ভারত সফরে এসে পৌঁছেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা। সব ঠিক থাকলে দুই দেশের মধ্যে এক বিলিয়ন পাউন্ডের বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে। পাশাপাশি, এশিয়া প্যাসিফিকের নিরাপত্তা, সামরিক সহযোগিতা নিয়েও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। বস্তুত, আগেই ভারত এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার চুক্তি হয়েছিল। তবে এই সমস্ত আলোচনার বাইরে ইউক্রেন পরিস্থিতি এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে বলে মনে করছেন দেশের কূটনৈতিক মহলের একাংশ।
শক্তিশালী পাসপোর্ট: কোন দেশের কেমন অবস্থান?
বিশ্বের কোন দেশের পাসপোর্ট কতটা শক্তিশালী তা নিয়ে প্রতি বছর র্যাংকিং প্রকাশ করে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স৷ ২০২৫ সালের সূচকে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় তিন ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ।
ছবি: picture alliance/Bildagentur-online/Tetra
যেভাবে সূচকটি তৈরি
কোন দেশের পাসপোর্ট দিয়ে কতটি দেশে ভিসামুক্ত ও অন অ্যারাইভাল ভিসায় প্রবেশ করা যায় ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অথরিট (আইএটিএ) এর এই তথ্যের ভিত্তিতে সূচকটি তৈরি করে হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স৷
ছবি: imago/Paul von Stroheim
সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট
এ বছরের সূচকে এককভাবে শীর্ষে অবস্থানে আছে সিঙ্গাপুর। দেশটির পাসপোর্টধারীরা ১৯৫টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে জাপান। ১৯৩ দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন জাপানের পাসপোর্টধারীরা।
ছবি: imago/AFLO
সার্কে শক্তিশালী মালদ্বীপ
সূচকে এ বছর সবার নিচে আফগানিস্তানের (১০৬তম) অবস্থান। আফগান পাসপোর্টধারীরা আগাম ভিসা ছাড়া ২৮টি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন। সূচকে আফগানিস্তানের ওপরে রয়েছে সিরিয়া (১০৫তম), ইরাক (১০৪তম) ও পাকিস্তান ও ইয়েমেন (১০৩তম)। শ্রীলঙ্কার অবস্থান ৯৬তম৷ নেপাল ১০১তম৷ ভারতের অবস্থান ৮৫তম। র্যাংকিং-এ মালদ্বীপের অবস্থান ৫৩৷
ছবি: picture-alliance/Dinodia Photo Library
বাংলাদেশের উন্নতি
শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় গত বছরের চেয়ে তিন ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ৷ বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১০০তম। এখন বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী ব্যক্তিরা আগাম ভিসা ছাড়া বিশ্বের ৪০টি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন। আর ১৪৮টি দেশে ভ্রমণে ভিসা প্রয়োজন হয়।
হেনলির তথ্য অনুযায়ী ভুটান, গাম্বিয়া, লেসোথো, ফিজি, বলিভিয়া, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস, ভানুয়াতু ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে বাংলাদেশিদের৷ শ্রীলঙ্কায় যাওয়া যাবে ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন ভিসার মাধ্যমে৷
ছবি: picture-alliance/Huber
অন অ্যারাইভাল ভিসা
এশিয়ার দেশেগুলোর মধ্যে মালদ্বীপ, নেপাল, তিমুর লেস্টেতে বাংলাদেশি পাসপোর্টে অন অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করা যায়৷ এছাড়া আফ্রিকার কেইপ ভার্দ, কমোর্স দ্বীপপুঞ্জ, গিনিয়া-বিসাউ, কেনিয়া, মাদাগাস্কার, মৌরিতানিয়া, মোজাম্বিক, রুয়ান্ডা, সেনেগাল, সিচেলেস, সিয়েরা লিয়ন, সোমালিয়া, টোগো, উগান্ডায় রয়েছে এমন সুবিধা৷ ওসেনিয়া অঞ্চলের সামোয়া, টুভালু আর দক্ষিণ অ্যামেরিকার বলিভিয়াতেও যাওয়া যাবে অন অ্যারাইভাল ভিসাতে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/N. Maharjan
6 ছবি1 | 6
বৃহস্পতিবার প্রথমে গুজরাটেরবিমানবন্দরে এসে পৌঁছান বরিস। ওইদিন রাতেই তিনি দিল্লি যান। শুক্রবার নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ভবন এবং তারপর রাজঘাট ঘুরে বৈঠকে বসার কথা তার। দুপুরে জনসনের দেখা হওয়ার কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে। হায়দরাবাদ হাউসে সেই বৈঠকের পর দুই দেশের যৌথ বিবৃতি দেওয়ার কথা।
ভারি শিল্প, সফটওয়্যার প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্যখাতে বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার কথা। যে চুক্তি থেকে যুক্তরাজ্যে ১১ হাজার নতুন কর্মসংস্থা তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নতুন চুক্তিতে একটি ইলেকট্রিক বাসের প্রকল্প রূপায়ন হওয়ার কথা। এরআরএনডি সেন্টার তৈরি হবে যুক্তরাজ্যে। তার এশিয়া প্যাসিফিক হেডকোয়ার্টার হবে ভারতের চেন্নাইতে। যুক্তরাজ্য এবং ভারতে এর ফলে এক হাজার নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হবে। দুইটি ভারতীয় অটো মোবাইল সংস্থার বৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা। এছাড়া একাধিক সফটওয়্যার সংস্থায় ৭৯ মিলিয়ন পাউন্ডের বাণিজ্যচুক্তি হওয়ার কথা।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা নিয়েও দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা। নতুন উপগ্রহ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তাদের।
এছাড়াও সামরিক সহযোগিতা এবং এশিয়া প্যাসিফিকের নিরাপত্তা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হওয়ার কথা। বস্তুত, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পরে গোটা বিশ্বে কূটনীতির যে নতুন বাতাবরণ তৈরি হয়েছে সেখানে ভারত এবং যুক্তরাজ্যের অবস্থান নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর।