দুই বাংলার ছবি ‘মনের মানুষ’ আসছে
২৩ অক্টোবর ২০১০অভিনয় করেছেন দুই বাংলার শিল্পীরা৷ এ ছবিতে বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, চম্পা, রোকেয়া প্রাচী, চঞ্চল চৌধুরীসহ অনেকেই৷ কলকাতার শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন প্রসেনজিৎ, পাওলি দামসহ আরও অনেকে৷
ভারতীয় একটি পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গৌতম ঘোষ জানালেন ছবিটির সব কাজ শেষ৷ তিনি বলেন, আসলে অনেকদিন ধরেই ইচ্ছা ছিল শুধু লালন বা তাঁর মতো চরিত্রকে নিয়ে কাজ করার৷ যাদেরকে একটা সমান্তরাল স্রোত বা চোরা স্রোত বলা যেতে পারে৷ কিন্তু তাদের বিচরণ ছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে- নিম্নবর্গীয় মানুষ; যাদের সমাজ নিচু জাত বলে৷ উচ্চশ্রেণীর সঙ্গে এদের কোনো যোগাযোগ নেই৷ এসব মানুষের চিন্তাভাবনা খুব উচ্চস্তরের ছিল, সেটা অনেকেই জানে না৷
গৌতম ঘোষ বলেন, ঊনবিংশ শতাব্দিতে আমাদের একটা রেনেসাঁ হয়েছিল, তার একটা সুদূরপ্রসারী ফলও আমরা দেখতে পেয়েছি৷ কিন্তু তার সমান্তরালে অসহিষ্ণুতা, অসাম্যতার বিরুদ্ধে আরেকটা স্রোত চলছিল৷ যেখানে একটা মুক্তচিন্তার অস্তিত্ব ছিল৷ তখন থেকে আঠারো শতকের ইউরোপীয় উদারপন্থী ঐতিহ্য ঢুকে গেছে আমাদের উচ্চশ্রেণী বা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে৷ কিন্তু এর পাশাপাশি যে সমান্তরাল একটা চিন্তাভাবনা যার কাব্যময়তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা ছিল-সেই ইতিহাস নিয়ে আমাদের খুব একটা কাজ করা হয়নি৷ পরবর্তীতে গবেষণা হয়েছে লালন ফকিরকে নিয়ে৷ অন্যান্য সম্প্রদায় নিয়েও গবেষণা শুরু হয়েছিল৷
তিনি জানান, সাম্প্রদায়িক মানসিকতার ফসল হিসেবে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর তাঁর মনে হয়েছে এই ধরণের মানুষকে নিয়ে ছবি করা উচিত৷ তাঁর কথায়, তখন আমি লালন ফকির নিয়ে পড়াশুনা করেছিলাম খানিকটা৷ তাঁর গান আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিল৷ সে সময় নানা কারণে ছবিটা নির্মাণ করা হয়ে ওঠেনি৷ তিনি বলেন, বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিজ্ঞান ব্যাপক উন্নয়ন ঘটালেও মানুষের সাথে মানুষের বিভেদ বেড়েই চলছে৷ ফলে আমার মনে হয়, লালন ফকির এবং তাঁর সময় নিয়ে ছবি নির্মাণের এটাই ঠিক সময়৷ সেই ভাবনা থেকেই দুই বাংলাকে নিয়ে এই ছবি৷
আগামী মাসে শুরু হচ্ছে ভারতের গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব৷ এতে প্যানারোমা বিভাগে বাংলা চলচ্চিত্র ‘মনের মানুষ' প্রদর্শনী হবে৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম