বিরোধীদের শক্ত হাতে দমনের জন্য আলোচিত ফিলিপাইন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে৷ করোনা নিয়ে ‘মিথ্যা তথ্য' ছড়ানো বন্ধ করতে তার সরকার সম্প্রতি একটি আইন করেছে৷
ছবি: Reuters/E. Lopez
বিজ্ঞাপন
ঐ আইনে গত ১৯ এপ্রিল মারিয়া ভিক্টোরিয়া বেলত্রানকে আটক করা হয়েছিল৷ তিনি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিল্পী৷ ২০২০ সালের ‘ডিডাব্লিউ ফ্রিডম অফ স্পিচ' অ্যওয়ার্ডও পেয়েছেন তিনি৷ ৩ মে এই সম্মাননা দেয়া হয়৷
কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই বেলত্রানকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ ২১ এপ্রিল তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়৷ তার আগে তাকে ৮০০ ডলার দিতে বাধ্য করা হয়৷
বেলত্রান থাকেন সেবু শহরে৷ আটকের আগে ঐ শহরের মেয়র তাকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়েছিলেন৷ কারণ, এক ফেসবুক পোস্টে বেলত্রান সেবু শহরকে ‘পুরো সৌরজগতের মধ্য়ে’ করোনা মহামারির এপিসেন্টার হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন৷
সেবু শহরের কাছের একটি পুরো গ্রাম ‘সম্ভাব্য সংক্রমিত' বলে গতমাসে জানিয়েছিল স্থানীয় গণমাধ্যম৷
ফিলিপাইন্সে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষের মধ্যে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে৷ মারা গেছেন প্রায় সাড়ে আটশ’ জন৷
করোনা ভাইরাসের সময় ভালোবাসা
করোনা ভাইরাসের এই সময়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও ফিলিপাইন্সে গণবিয়ের আয়োজন হয়েছে৷ ফলে বর, বধূ ও অতিথিদের মাস্ক পরে বিয়েতে অংশ নিতে হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP/Ahn Young-joon
ভালোবাসা চলবে
সাউথ কোরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর গ্যাপিয়ংয়ে একটি গণবিয়ের আসরে বর ও বধূ৷ ৭ ফেব্রুয়ারি এই বিয়ে হয়৷ সেই সময় ২৪ জনের দেহে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল৷ এখন সেটি বেড়ে ১,৭৬৬-তে দাঁড়িয়েছে৷ ফলে চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী এখন সাউথ কোরিয়ায়৷ এছাড়া দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ১৩ জন৷
ছবি: picture-alliance/AP/Ahn Young-joon
মাস্ক বিতরণ
সাউথ কোরিয়ার ঐ গণবিয়েতে আগত বর, বধূ ও অতিথিদের মধ্যে ৩০ হাজার মাস্ক ও হাত ধোয়ার স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়েছিল৷
ছবি: AFP/Jung Yeon-je
তবে সবাই পরেননি
ঐ সময় (ফেব্রুয়ারি ৭) পর্যন্ত সাউথ কোরিয়ার অনেক নাগরিক হয়ত করোনার প্রভাব অতটা বুঝতে পারেননি৷ তাই ছবিতে অনেককে মাস্ক ছাড়াই দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/H. Ran
মাস্কসহ চুমু
ফিলিপাইন্স সরকারের উদ্যোগে ২০ ফেব্রুয়ারি একটি গণবিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল৷ সেখানে ২২০ দম্পতির বিয়ে হয়৷ জন পল নামের একজন বর অস্ট্রেলিয়ার এবিসি টিভিকে জানিয়েছেন, ‘‘মাস্ক পরে চুমু খেতে অন্যরকম লাগে, তবে এটা প্রয়োজন৷’’
ছবি: Reuters/Bacolod City Public Information Office
অনুমতি
ফিলিপাইন্সের ঐ বিয়ের অনুষ্ঠানে যারা এসেছিলেন তাদের সবাইকে শেষ ১৪ দিনের ভ্রমণ তথ্য জানাতে হয়েছে৷ এরপরই তারা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার অনুমতি পান৷
ছবি: Reuters/Bacolod City Public Information Office
সংকটের সময় ভালোবাসা দিবস
এই ছবিটি ফিলিপাইন্সের আরেক গণবিয়ের অনুষ্ঠানের৷ ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে এর আয়োজন করা হয়েছিল৷ দেশটিতে এখন পর্যন্ত তিনজনের দেহে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে৷ মারা গেছেন একজন৷
ছবি: Imago Images/Zuma/L.M. David
6 ছবি1 | 6
করোনা নিয়ে ‘মিথ্যা তথ্য' ছড়ানো বন্ধ করতে সম্প্রতি একটি আইন করেছে দুতার্তে সরকার৷ এতে সামাজিক মাধ্যমসহ অন্যান্য প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ‘মিথ্যা তথ্য’ ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে নিরাপত্তা বাহিনীকে জরুরি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে৷
বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী এই আইনের সমালোচনা করেছে৷ এটি বাকস্বাধীনতার বিরুদ্ধে অভিযান বলে মনে করছে তারা৷ তবে দুতার্তের একজন মুখপাত্র বলছেন, ‘‘বাকস্বাধীনতার একটা সীমা আছে৷''
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর অভিযোগ, বেলত্রানের গ্রেপ্তার করোনা সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতা লুকাতে ক্ষমতার অপব্যবহারের আরেকটি উদাহরণ৷ এর মাধ্যমে সরকারের সমালোচকদের ভয় দেখানো হয়েছে বলে মনে করছে তারা৷
বেলত্রান ডয়চে ভেলেকে জানান, ২০১৬ সালে দুতার্তে ক্ষমতায় আসার আগে তিনি রাজনীতি নিয়ে ভাবতেন না৷ দুতার্তের কথা বলার ভঙ্গি দেখে তিনি প্রথম আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন৷ এরপর মাদকবিরোধী অভিযানে দুতার্তের ‘নিষ্ঠুরতা’ তাকে ক্ষুব্ধ করে তোলে বলে জানান বেলত্রান৷
এরপর থেকে তিনি সামাজিক মাধ্যমে সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে নিয়মিত পোস্ট দিয়ে আসছেন৷ বেলত্রানের মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টের উপর গোয়েন্দারা নিয়মিত নজর রাখছে৷
বেলত্রান অবশ্য এতে দমে যাননি৷ ছাড়া পাওয়ার পর থেকে তিনি প্রতিদিন ফেসবুকে ‘জোক অফ দ্য ডে' নামে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিয়ে আসছেন৷
আনা পি. সান্তোস, ম্যানিলা/জেডএইচ
দেখুন গত বছরের মে মাসের ছবিঘর...
ফিলিপাইন্সে মৃতের সঙ্গে বসবাস
নিদারুণ অর্থকষ্টে মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলে না৷ আর তাই কবরস্থানেই বাস করছেন রাজধানী ম্যানিলার প্রায় ছয় হাজার মানুষ৷
ছবি: Claudio Sieber
গরিবের শেষ আশ্রয়
উত্তর ম্যানিলার এ কবরস্থানটিতে বাস করে প্রায় আটশ’ পরিবার৷ জনসংখ্যা প্রায় ছয় হাজার৷ মাস শেষে বাসা ভাড়ার টাকাটুকু জোগাড় করতে না পেরে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন এ করস্থানটিতে৷ আর এরই মধ্যে এটি হয়ে উঠেছে ম্যনিলার বড় বস্তিগুলোর একটি৷
ছবি: Claudio Sieber
তিন প্রজন্মের আশ্রয়
১৯৫০ সাল থেকেই এ কবরস্থানটিতে বাস করে আসছে ম্যানিলার দরিদ্র জনগোষ্ঠী৷ প্রায় তিন প্রজন্ম ধরে তাঁরা বাস করছেন এখানে৷
ছবি: Claudio Sieber
কষ্ট নিত্যদিনই
বস্তিটিতে নেই কোনো নাগরিক সুবিধা৷ আর তাই জীবন-জীবিকা এখানে সহজ নয়৷ কাপড় ধোয়ার জন্য বা গোসল করার জন্য তাঁদের যেতে হয় আশপাশের এলাকাগুলোতে, যেখানে অল্প পয়সায় ধোয়া ও কাচার কাজটি সারেন তাঁরা৷
ছবি: Claudio Sieber
বদ্ধ ঘরে বাস
এখানে গেলে বোঝা যায়, এ লোকগুলোর ব্যক্তগত জীবন বলতে কিছু নেই৷ দেখা যায়, ছোট্ট একটি কোঠায় কয়েকজন রাত কাটায়৷
ছবি: Claudio Sieber
বিনোদনের চেষ্টা
বিনোদনের প্রধান মাধ্যম টেলিভিশনের জন্য প্রয়োজন বিদ্যুৎ৷ এ সুবিধা পেতে পাশের বাড়ি থেকে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ পাওয়ার চেষ্টা করেন কেউ কেউ৷
ছবি: Claudio Sieber
নিয়মিত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া
মৃতদেহের যথাযথ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ফিলিপাইন্সবাসীর একটি ঐতিহ্য৷ আর তাই সবসময়ই কবরস্থানটিতে ভিড় করেন মৃতদের আত্মীয়রা৷
ছবি: Claudio Sieber
আইসক্রিমে তৃপ্তি
হবিটো নামে এ আইসক্রিম বিক্রেতা এখানকার বাসিন্দা নন৷ কিন্তু প্রতিদিনই তিনি একবার করে এখানে আসেন, কেননা, এখানকার বাচ্চারা তাঁর মিষ্টি স্বাদের আইসক্রিমের জন্য অপেক্ষা করে৷
ছবি: Claudio Sieber
কবরে বসে ঈশ্বরকে স্মরণ
দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত এডউইন কাজকর্ম করতে পারেন না৷ আর তাই এ বস্তিটিতে স্থায়ী হয়েছেন তিনি৷ পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈশ্বরের নাম জপেন৷ তাঁর বিশ্বাস এখানে থাকলে হয়ত ঈশ্বর তাঁকে ভুলে যাবেন না৷
ছবি: Claudio Sieber
আছে পড়াশোনাও
এখানকার বাচ্চাদের পড়াশোনায় সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় একটি এনজিও৷ দল বেঁধে ছেলেমেয়েরা এখানে পড়তে আসে৷
ছবি: Claudio Sieber
আছে ধর্মশিক্ষাও
ধর্মশিক্ষায় আগ্রহ আছে এখানকার বাসিন্দাদের৷ আর তাই বইবেল শিক্ষার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠিত ক্লাসে যোগ দেন অনেকেই৷
ছবি: Claudio Sieber
একটি বাসার স্বপ্ন
এ বস্তিটিতেই বড় হয়েছেন কামবাল কানবানা৷ প্রতিদিনই নিজের একটি বাড়ির স্বপ্ন দেখেন তিনি৷ এর জন্য কবুতরের ব্যবসাসহ আরো কিছু কাজ করেন তিনি৷ ব্যবসার টাকা জমিয়ে পূরণ করতে চান এ স্বপ্ন৷