1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুর্নীতিই কি ইউরোপে চরমপন্থিদের বাড়বাড়ন্তের কারণ?

১৪ জুন ২০১৯

পদে পদে ঘুসের চল, বেপরোয়া দুর্নীতির দৃষ্টান্ত না থাকলেও জার্মানি তথা ইউরোপে বৃহত্তর অর্থে দুর্নীতির কবল থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয়৷ শিল্প-বাণিজ্য জগতের লবি, রাজনৈতিক দলগুলির অর্থায়ন নিয়ে মানুষের ক্ষোভ কম নয়৷

ছবি: picture-alliance/U.Baumgarten

বিশ্বের অন্য কিছু অংশের মতো ইউরোপেও গণতন্ত্র হুমকির মুখে – পপুলিস্ট ও উগ্র দক্ষিণপন্থি রাজনৈতিক দলগুলির সাম্প্রতিক সাফল্যের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা এমনটাই মনে করছেন৷ এর পেছনে বৃহত্তর অর্থে ‘দুর্নীতি' একটা ভূমিকা পালন করছে, এমন  দাবিও অনেকের৷ কিন্তু ইউরোপের প্রেক্ষাপটে দুর্নীতির সংজ্ঞা বাংলাদেশ-ভারতের বাস্তবতার তুলনায় কিছুটা ভিন্ন৷

দৈনন্দিন জীবনে একেবারে তৃণমূল স্তরে দুর্নীতির দৃষ্টান্ত পাওয়া কঠিন হলেও ইউরোপে ব্যবসা-বাণিজ্য বা প্রশাসনিক স্তরে প্রভাব খাটানোর ঘটনা কম নয়৷ বিশেষ করে ‘লবি' বা শিল্প-বাণিজ্য জগতের বিভিন্ন শাখার প্রতিনিধিরা জাতীয় ও ইউরোপীয় স্তরে রাজনৈতিক নেতাদের উপর মাত্রাতিরিক্ত প্রভাব খাটানোর যে চেষ্টা চালিয়ে যান, সাধারণ মানুষের মনে তা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ রয়েছে৷

অর্থ বা আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে রাজনৈতিক প্রভাব ভোটারদের মনে প্রচলিত ধারার রাজনীতি সম্পর্কে বিতৃষ্ণা বাড়িয়ে চলেছে৷ রাজনৈতিক দলগুলিকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলি আখেরে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছে, এমন ক্ষোভকে হাতিয়ার করে ভোটারদের মন জয় করছে চরমপন্থি দলগুলি৷

কিন্তু পপুলিস্ট ও উগ্র দক্ষিণপন্থি দলগুলি যখন মুশকিল আসান না হয়ে নিজেরাই দুর্নীতির পথ বেছে নেয়, তখন ভোটারদের সামনে কোন পথ খোলা থাকে? সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে দুর্নীতির কোনো সম্পর্ক আছে কি? সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে একাধিক উগ্র দক্ষিণপন্থি ও পপুলিস্ট দলের নেতারা নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ায় এই প্রশ্ন উঠছে৷

বেকারত্ব, অভিবাসন ইত্যাদি নানা সমস্যা নিয়ে সাধারণ মানুষের ভয়ভীতির ফায়দা তুলে, তার বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে এই সব দল চটজলদি সমাধানসূত্র বাতলে দিয়ে সম্প্রতি বেশ সাফল্য পেয়েছে৷ কিছু দেশে জোট সরকারের শরিক বা বিরোধী আসনে শক্তিশালী কণ্ঠ হয়ে উঠেছে এই শিবির৷ মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলির উপর বীতশ্রদ্ধ অনেক ভোটার প্রতিবাদ হিসেবে তাদের এই সাফল্য ত্বরান্বিত করেছে৷

সঞ্জীব বর্মন, ডয়চে ভেলেছবি: DW

এর মধ্যে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে অস্ট্রিয়ায়৷ এক দুর্নীতি কেলেঙ্কারির জের ধরে সেখানকার জোট সরকারের পতন ঘটেছে৷ শরিক হিসেবে চরম দক্ষিণপন্থি এফপিও দলের নেতার আচরণ গোটা ইউরোপে চরম বিস্ময় সৃষ্টি করেছে৷

জার্মানির প্রধান বিরোধী দল হিসেবে চরমপন্থি পপুলিস্ট এএইডি দলের এক নেতাও অবৈধ চাঁদা গ্রহণের অভিযোগে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন৷ এমন বিতর্কিত রাজনৈতিক দলের অর্থায়ন নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে৷ এই দলের সঙ্গেও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সামগ্রিকভাবে ইউরোপের রাজনীতিতে সে দেশের অবৈধ প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷

ফ্রান্সের চরম উগ্রপন্থি ন্যাশানাল ফ্রন্ট দলের নেত্রী মারিন ল্য পেন-এর সঙ্গেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের বিষয়টি অজানা নয়৷ আর্থিক মদত, অবৈধ সুযোগসুবিধা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ফেক নিউজ' ছড়িয়ে রাশিয়া ইউরোপের চরমপন্থি শক্তির হাত শক্ত করছে বলে বার বার অভিযোগ উঠছে৷ বিদেশি রাষ্ট্রের এমন হস্তক্ষেপের অভিযোগ বিষয়টিকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে৷  এমন অবস্থায় ইউরোপে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন অনেকে৷

এমন অযাচিত প্রভাব থেকে রাজনৈতিক জগতে মুক্ত রাখার উপায় কী? প্রগতিশীল বলে পরিচিত সবুজ দল ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে৷ ব্রাসেলসে ইইউ প্রতিষ্ঠানগুলির উপর লবিয়িস্টদের প্রভাব কমাতে ও গোটা প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনতে তারা সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নিতে চায়৷ জাতীয় স্তরেও এ ক্ষেত্রে কড়া মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারা৷ দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ প্রশাসনিক কাঠামো নিশ্চিত করতে এতকাল কেন এমন সব পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলছে প্রগতিশীল শিবির৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ