1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘তাকে এখন আর সাংসদ বলা যাবে না’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১০ মার্চ ২০২১

দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টে ১০ বছরের সাজা বহাল থাকার পর হাজী সেলিম এখন আর সংসদ সদস্য নেই বলে মনে করেন দুদকের আইনজীবী৷ তবে হাজী সেলিমের আইনজীবী বলছেন, এটা চূড়ান্ত রায় নয়৷

হাজী সেলিম
নির্বাচনি প্রচারণায় হাজী সেলিম (ফাইল ছবি) ছবি: DW/M. Mamun

আর সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা এখনো রায়ের কপি পাননি৷

পুরনো ঢাকার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করে দুদক৷ ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত তাকে এই মামলায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন৷ তিনি আপিল করলে প্রথমে সাজা বাতিল হয়৷ কিন্তু দুদক তার বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ ফের মামলা শুনানির নির্দেশ দেন হাইকোর্টকে৷

মঙ্গলবার হাইকোর্ট হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতের সাজা তিন বছর কমিয়ে ১০ বছর বহাল রাখেন৷  

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, ‘‘সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ২(ঘ) অনুযায়ী হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য থাকার আর কোনো যোগ্যতা নেই৷ মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের পর তিনি সংসদ সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন৷ তাকে এখন আর সংসদ সদস্য বলা যাবে না৷’’

সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া দুই বছরের বেশি কারাদণ্ড পেলে এবং মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর পার না হলে কেউ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে বা থাকতে পারবেন না৷

তাকে (হাজী সেলিমকে) এখন আর সংসদ সদস্য বলা যাবে না: দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম

This browser does not support the audio element.

দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘‘বিচারিক আদালতে আগেই সাজা হয়েছে, ১০ বছর সাজা বহাল আছে৷ বিচারিক আদালতের রায়ের পরও যে তিনি সংসদ সদস্য আছেন সেটা অবৈধ৷ কিন্তু একটা কনফিউশন কাজ করেছে৷ সেটা হলো উনি জামিনে আছেন কিনা, ওনার সাজা স্থগিত ছিলো কিনা, ওই সময়ে তিনি খালাস ছিলেন কিনা৷ মাঝখানে তো তিন-চার বছর খালাস ছিলেন৷ ২০০৯-এর পরে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত উনি খালাস ছিলেন৷ কিন্তু মঙ্গলবারের রায়ের পর এখন সবকিছু পরিস্কার হয়ে গেছে৷ তিনি সংসদ সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন৷’’

অবশ্য হাজী সেলিমের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ আহমেদ রেজা মনে করেন হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে না৷ কারণ এটা চূড়ান্ত রায় নয়৷ তিনি ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন৷ তার মতে তিনটি কারণে হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে না, ‘‘প্রথম হলো এটা চূড়ান্ত রায় নয়৷ তিনি ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য হয়েছেন৷ কিন্তু তার অযোগ্যতার প্রশ্ন উঠেছে ২০২১ সালে৷ আর এটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা স্পিকারের৷ তিনি যতক্ষণ না কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন ততক্ষণ পর্যন্ত তো কিছু বলা যাবে না৷’’

এই আইনজীবী কুয়েতে দণ্ডপ্রাপ্ত  সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য কাজি শহীদুল ইসলাম পাপুলেরও বাংলাদেশে নিয়োজিত আইনজীবী৷ তার সেখানে বিচারিক আদালতে মানব পাচারের মামলায় চার বছর কারাদণ্ড হওয়ার পর বাংলাদেশের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়েছে৷ এই প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ ও কুয়েতে বিচার ব্যবস্থা আলাদা৷ কুয়েতে বিচারিক আদালত রায় দেয়ার পর আর কোনো আপিলের সুযোগ থাকে না৷ শুধু মাত্র রাজা সিদ্ধান্ত দিতে পারেন৷ কিন্তু আমাদের এখানে আপিলের সুযোগ আছে৷’’

তিনি (হাজী সেলিমে) ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য হয়েছেন, কিন্তু তার অযোগ্যতার প্রশ্ন উঠেছে ২০২১ সালে: হাজী সেলিমের আইনজীবী

This browser does not support the audio element.

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী  মনজিল মোরশেদ জানান, সংবিধানে সব বিষয় উল্লেখ থাকে না৷ সেখানে বলা আছে কী হলে সংসদ সদস্য পদ থাকবে না৷ এখন চূড়ান্ত শাস্তি কোনটাকে বলা যাবে সে ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের ব্যাখ্যা আছে৷ এরশাদের মামলায় আপিল বিভাগ বলেছেন, যে সাজায় আপিলের সুযোগ আছে তাকে চূড়ান্ত সাজা বলা যাবে না৷ তিনি বলেন, ‘‘এখন হাজী সেলিমের পক্ষে যদি আপিল না করা হয়৷ আর আপিলের পরও যদি দণ্ড স্থগিত না হয় তাহলে তার সংসদ সদস্য পদ থাকবে না৷ এর বাইরে আপিলের আগেই যদি স্পিকারের রায়ের কপি পেয়ে সিদ্ধান্ত নেন তাহলে আলাদা কথা৷’’

জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব সৈয়দ জাফর আহমেদ খান জানান, তারা এখনো হাজী সেলিমের ব্যাপারে আদালতের রায়ের কপি পাননি৷ তিনি বলেন, ‘‘দুদকের কাছ থেকে রায়ের কপি পাওয়ার পর জাতীয় সংসদের স্পিকার সংবিধান অনুযায়ী তার সংসদ সদস্য পদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন৷’’

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, রায়ের কপি পেলে দুদকে সেটা স্পিকারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে৷ তবে তার তো আগেই বিচারিক আদালতে শাস্তি হয়েছে৷ সেটাই বহাল আছে৷ তাই নতুন করে রায় পাঠানোর কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না৷

তিনি আরো জানান, যদি হাজী সেলিমের পক্ষে আপিল করা হয় তাহলে দুদক কনটেস্ট করবে৷ আর সাজা (তিন বছর) কমানো হয়েছে তার বিরুদ্ধেও আপিল করা হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ