1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘দুর্নীতি কমানো সম্ভব না'

সমীর কুমার দে, ঢাকা১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

‘‘বাংলাদেশের আত্ম-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি একেবারে কমানো না গেলেও, একটা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি৷ সেটা হলেই নিজেদের সার্থক মনে করব৷'' বললেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু৷

Muhammad Shahabuddin Chuppu
ছবি: Privat

[No title]

This browser does not support the audio element.

বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় সাজা হওয়ার হার ৪৭ ভাগ, আগে যেখানে ছিল ১৫ থেকে ২০ ভাগ৷ ‘‘এটাকে আমরা ৯০ ভাগের কাছাকাছি নিয়ে যেতে চাই৷'' ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদুক-এর কমিশনার৷ সেই সাক্ষাৎকারেরই কিছু অংশ তুলে ধরা হলো৷

ডয়চে ভেলে: আপনি দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কমিশনার৷ এই মুহূর্তে বাংলাদেশে দুর্নীতির অবস্থাটা কেমন?

সাহাবুদ্দিন চুপ্পু: আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে অকার্যকর দুর্নীতি দমন কমিশনকে কার্যকর করার চেষ্টা করছি৷ কমিশন গঠন হওয়ার পর ২০০৪ সাল থেকে এটিকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছিল৷ কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের (১/১১) পর সরকার এই কমিশনকে অন্যভাবে পরিচালিত করার চেষ্টা করেছে৷ গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর, আমরা বলতে গেলে প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করছি৷ আমাদের নিরন্তন প্রচেষ্টা দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধ৷ বাংলাদেশের আত্ম-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি যে একেবারে কমানো সম্ভব – এটা আমি বিশ্বাস করি না৷ আমার অভিজ্ঞতাও তা বলে না৷ আমরা দুর্নীতিকে যদি একটা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে আমরা মনে করব যে আমরা অনেকটাই সার্থক৷ আমরা কাজ করে যাচ্ছি৷ প্রতিরোধের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি৷ ‘ফাইনালশিয়াল সেক্টরে' দুর্নীতি অনেক কমে এসেছে৷ বেশ কিছু বড় প্রতিষ্ঠানকে ধরতে সক্ষম হয়েছি আমরা৷ এখন ঋণের ক্ষেত্রে ফ্রড, প্রতারণা, জালিয়াতি অনেকাংশে কমে এসেছে৷ টিআইবি-র দুর্নীতির সূচকে গতবার আমাদের যে অবস্থা ছিল, এবারও সেই অবস্থানে আছে৷ অর্থাৎ কোনো অবনতি হয়নি৷ আমাদের ‘অ্যাগ্রেসিভ' কার্যক্রমের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস৷

আপনি বলছিলেন, প্রতিরোধ কমিটি কাজ করছে৷ তাহলে কেন আমরা সামনের দিকে এগোতে পারছি না?

এখানকার বাস্তবতার নিরিক্ষে বিবেচনা করলে দেখা যাবে যে, আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে৷ এ সব সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা এগোতে পারছি না৷ আমাদের জনবলের অভাব রয়েছে৷ বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমাদের মাত্র ২৩টি জেলায় অভিস ছিল৷ এখনও ৪-৫টি জেলা মিলিয়ে একটি অফিসে কাজ করতে হয়৷ এটাতে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে৷ এর সঙ্গে আমাদের জনবলেরও সমস্যা আছে৷ এ সব কারণে আমরা যতটা কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছি, ততটা সম্ভব হয়নি৷

একটা অভিযোগ আপনাদের বিরুদ্ধে সব সময় দেয়া হয় যে, সরকারি দলের নেতাদের দুর্নীতির অভিযোগ আসলে আপনারা প্রমাণ খুঁজে পান না৷ অথচ বিরোধী দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে তার বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে, বিচার হচ্ছে, এটা কেন? আপনি যে বলছিলেন, আপনারা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন?

এটা একটা অমূলক ধারণা৷ আমরাই একমাত্র কমিশন, যাদের কাছে সরকারি দল, বিরোধী দল বা আমলা বলে কিছু নেই৷ আমাদের কাছে পরিচয় হচ্ছে, অপরাধের ধরণ ও অপরাধী৷ আমরা অপরাধ ও অপরাধীকে নিয়েই কাজ করি৷ এই ধরনের কথা যারা বলেন, তারা মান্ধাতার আমলের মানসিকতা নিয়েই বলেন৷ এ দেশে যেসব কথা বললে রাজনৈতিকভাবে মানুষকে প্রভাবিত করা যাবে বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা যাবে, সেই ধরনেরই কথা বলা হয়৷ আমরাই পেরেছি বর্তমান পার্লামেন্টের মেম্বারকে কারাগারে পাঠাতে৷ ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত কোনো মন্ত্রী বা এমপিকে কি দুদক-এর বারান্দায় আসতে হয়েছে? আমরাই অনেক সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছি৷ এখন তারা বিচারের সম্মুখীন৷ পাশাপাশি অনেক আমলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং এর ফলে তারা চাকরিচ্যুত হয়েছেন৷

দুদক-এর পক্ষ থেকে যে মামলাগুলো করা হয়, চার্জশিট দাখিলের পর সে সব মামলার বিচারে সফলতার হার কেমন?

দুদক-এর দায়ের করা মামলায় ৪৭ শতাংশের বিরুদ্ধে সাজা হচ্ছে৷ আগে যেখানে এটা ছিল ১৫ থেকে ২০ শতাংশ৷

সাজার হার ৪৭ ভাগ থেকে বাড়িয়ে কবে আমরা শতভাগ দেখব?

না, এটা আশা করি না, সম্ভবও না৷ কিছু ত্রুটি তদন্তে থেকেই যায়৷ পরে বিচারে সেটা ধরা পড়ে৷ এটাকে বলা হয় ‘সিস্টেম এরর'৷ তবে হ্যাঁ, আমরা আশা করব এটা যেন ৯০ ভাগের কাছাকাছি আসে৷

বন্ধু, আপনি কি দুদক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পুের সঙ্গে একমত? মন্তব্য জানান, নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ